|
|
|
|
সংরক্ষণে জোর, খননকাজ স্থগিত মোগলমারিতে
নিজস্ব সংবাদদাতা • খড়্গপুর |
খননকার্য সাময়িকভাবে স্থগিত রাখা হল মোগলমারির প্রত্নস্থলে। খনন করা অংশের সংরক্ষণের জন্যই এই সিদ্ধান্ত বলে রাজ্য পুরাতত্ত্ব বিভাগ সূত্রে জানা গিয়েছে। ঠিক ছিল, সমগ্র বিহারটি উন্মোচিত করে তারপর সংরক্ষণের কাজে হাত দেওয়া হবে। সোমবার সকাল থেকে খননকার্য স্থগিত হয়ে যাওয়ায় স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে চাঞ্চল্য ছড়ায়। যদিও রাজ্য পুরাতত্ত্ব বিভাগের উপ-অধিকর্তা অমল রায় বলেন, “আগমী সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আমাদের খননকার্যের লাইসেন্স রয়েছে। খননের ফলে উন্মুক্ত অংশের যথাযথ সংরক্ষণ না হলে তা নষ্ট হয়ে যেতে পারে। তাই আপাতত খননকার্য স্থগিত রেখে সংরক্ষণের কাজ করা হবে।” সংরক্ষণের কাজ ৭ মার্চ থেকে শুরু হবে বলে তিনি জানান। |
মোগলমারিতে চলছে পুরাবস্তু সংরক্ষণের কাজ।—নিজস্ব চিত্র। |
বস্তুত, গত ২০০৩-২০১২ সাল পর্যন্ত দাঁতনের মোগলমারির সখীসেনা ঢিবিতে খননকাজ চালিয়েছিল কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরাতাত্ত্বিক বিভাগ। সেইসময় ছ’দফা খননের পর এই স্থানে উন্মোচিত হয় সীমানা প্রাচীর। ওই প্রাচীরের চারিদিকে প্রদক্ষিণ পথ ও প্রবেশদ্বার রয়েছে। এছাড়াও আবিষ্কার হয়েছে স্ট্যাকো (চুন, মার্বেল গুঁড়ো ও বালির মিশ্রন) অলংকৃত দেওয়াল, স্টাকো নির্মিত ১৪টি মূর্তি, ৪২ রকমের কারুকার্যে মোড়া ইট, পোড়ামাটির কিছু বাসনপত্র, ২০টি উৎসর্গ ফলক ইত্যাদি। এরপরই কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রয়াত অধ্যাপক অশোক দত্ত এই বৌদ্ধস্তুপটিকে হিউয়েন সাং বা জুয়ান জ্যাং বর্ণিত তাম্রলিপ্ত এলাকার ‘বৌদ্ধবিহার’ বলে দাবি করেন।
২০১৩ সালের ২০ নভেম্বর থেকে রাজ্য পুরাতত্ত্ব বিভাগ এই বৌদ্ধস্তুপটির খনন ও সংরক্ষণের উদ্যোগ নিয়েছে। এই পর্যায়ে খননকাযের্র ফলে একটি সোনার লকেট ও একটি মিশ্র ধাতুর মুদ্রা উদ্ধার হয়। পাওয়া যায় বৌদ্ধ বিহারের নামাঙ্কিত একটি ফলকও। ফলকটিতে এই বিহারকে ‘শ্রীবন্দক মহাবিহার’ বলা হয়েছে। সিদ্ধান্ত হয়েছে, উদ্ধার হওয়া এই সমস্ত পুরাবস্তু সংরক্ষণের জন্য পুরাতত্ত্ব বিভাগ ওই পুরাস্থলটির কাছেই ৭৫ লক্ষ টাকা ব্যয়ে একটি সংগ্রহশালা গড়ে তুলবে। স্থানীয় তরুণ সেবা সঙ্ঘের কর্মকর্তা অতনু প্রধান বলেন, “আগামী মার্চ মাস পর্যন্ত এই বিহারে খননকার্য চলবে বলে শুনেছিলাম। তবে হঠাৎ খননকার্য বন্ধ হল কেন বুঝতে পারছি না। আমরা চাই, এই মহাবিহার দ্রুত উন্মোচন হোক। খননের পাশাপাশি সংরক্ষণের কাজ চলুক।” |
|
|
|
|
|