মাদ্রাসার বোর্ড গঠন নিয়ে তৃণমূলে সংঘর্ষ
হাইমাদ্রাসার পরিচালন কমিটি গঠনকে ঘিরে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটল কেশপুরে। এ বার ছুতারগেড়িয়ায়। জখম হয়েছেন ৩ জন। তাঁরা মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। স্থানীয় হাইমাদ্রাসার পরিচালন কমিটি গঠনকে ঘিরে সোমবার সকালে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠী সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। তৃণমূল নেতৃত্ব অবশ্য গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। অন্য দিকে, পুলিশ জানিয়েছে, ওই এলাকায় একটা গোলমাল হয়েছিল। অভিযোগের প্রেক্ষিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এখন এলাকার পরিস্থিতি পুরোপুরি স্বাভাবিক। পরিস্থিতির উপর নজরও রাখা হয়েছে।
এলাকা থেকে নির্বাচিত পঞ্চায়েত সমিতির নির্দল সদস্য শেখ ইরশাদ আলি বলেন, “তৃণমূলের লোকজন ডাকাত দলের মতো আচরণ করছে। এ দিন আমাদের লোকেদের উপর হামলা করা হয়েছে। তৃণমূলের সশস্ত্র লোকেরা হামলা করেছে। অভিযোগ জানিয়েও সুফল মিলছে না। পুলিশ-প্রশাসন নির্বিকার।” ইরশাদ এক সময় তৃণমূলের সক্রিয় কর্মী ছিলেন। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনের মুখে তাঁর সঙ্গে দলের দূরত্ব তৈরি হয়। ভোটে টিকিট না পেয়ে নির্দল প্রার্থী হিসেবে পঞ্চায়েত সমিতির আসনে তিনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। জয়ীও হন। তাঁর কথায়, “তৃণমূলের সঙ্গে ছিলাম। তবে, দল আমাকে প্রাপ্য স্বীকৃতি দেয়নি। মানুষ নির্দল প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে দাঁড় করিয়েছিলেন। মানুষই ভোট দিয়ে আমাকে জিতিয়েছেন।” এ দিন ছুতারগেড়িয়া এফ বি হাইমাদ্রাসার পরিচালন কমিটি গঠন ছিল। আগেই অভিভাবক প্রতিনিধি নির্বাচন হয়েছে। নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ৬ জন নির্বাচিত হন। নির্বাচিত সকলেই ইরশাদের অনুগামী বলে পরিচিত। অভিযোগ, এ দিন তাঁদের হাইমাদ্রাসার বৈঠকে যোগ দিতে বাধা হয় দেন তৃণমূলের লোকজন। ইরশাদের কথায়, “পরিচালন কমিটির অভিভাবক প্রতিনিধিরা সকলেই আমার সঙ্গে রয়েছেন। ওঁরা উপস্থিত থাকলে তৃণমূল কমিটির দখল নিতে পারত না।”

আহতেরা মেদিনীপুর মেডিক্যালে ভর্তি।
পঞ্চায়েত সমিতির ওই সদস্য বলেন, “এ দিন পরিকল্পিতভাবে হামলা করা হয়েছে।” সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে তৃণমূলের কেশপুর ব্লক সভাপতি সঞ্জয় পান বলেন, “ছুতারগেড়িয়ায় হাইমাদ্রাসার পরিচালন কমিটি গঠন ছিল। সুষ্ঠু ভাবেই সব হয়েছে বলে শুনেছি।” তাঁর কথায়, “গোষ্ঠী সংঘর্ষের কোনও ঘটনা ঘটেনি। সব অপপ্রচার।” অন্য দিকে, ওই হাইমাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক অসীম ভুঁইয়াও বলেন, “সুষ্ঠু ভাবেই পরিচালন কমিটি গঠন হয়েছে। সকালের দিকে কিছু গোলমাল হয়ে থাকতে পারে। আমার জানা নেই।” বস্তুত, কেশপুরে ঘনঘন গোষ্ঠী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটতে থাকায় উদ্বিগ্ন জেলা তৃণমূল নেতৃত্বও। গত জানুয়ারি মাসে চার বার সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। গোড়ায় দামোদরচকে। তারপর মুগবাসান, সরিষাকোলায়। পরে ফের দামোদরচকে। ফেব্রুয়ারির শুরুতে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটল ছুতারগেড়িয়ায়। পরিস্থিতি দেখে তৃণমূলের একাধিক জেলা নেতাও মানছেন, এমন ঘটনার জেরে সাধারণ মানুষের কাছে ভুল বার্তা যাচ্ছে। কেশপুর দীর্ঘদিন ধরে সিপিএমের ‘দুর্গ’ বলেই পরিচিত ছিল। রাজ্যে পালাবদলের পরপর পরিস্থিতি বদলে যায়। সবুজের প্রাধান্য বাড়তে থাকে। সঙ্গে বাড়ে শাসক দলের কোন্দলও। পালাবদলের আড়াই বছর পরও সেই কোন্দলের রাশ টানা না- যাওয়ায় তৃণমূলের অন্দরেই নানা প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। পশ্চিম মেদিনীপুরের মধ্যে কেশপুরই একমাত্র ব্লক, যেখানে গত আড়াই বছরে চার বার ব্লক সভাপতি বদল করতে হয়েছে তৃণমূলকে। তাও গোষ্ঠী কোন্দলের রাশ টানা যায়নি।

—নিজস্ব চিত্র।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.