দরজায় কড়া নাড়ছে সোচি শীতকালীন অলিম্পিক। তার ঠিক আগেই বন্দুকবাজের তাণ্ডব চলল মস্কোর এক স্কুলে।
রুশ পুলিশ জানিয়েছে, ওই বন্দুকবাজের গুলিতে মৃত্যু হয়েছে দু’জনের। নিহতদের মধ্যে এক জন শিক্ষক। অন্য জন স্কুলেরই দেহরক্ষী। স্কুলে ঢুকে ২০ জন পড়ুয়াকে পণবন্দিও বানায় বন্দুকবাজ। তবে রাশিয়ার অভ্যন্ত্রীণ মন্ত্রক সূত্রে খবর, আজ সকালের এই ঘটনায় স্কুলটির সব পড়ুয়া সুরক্ষিত। আটক করা হয়েছে বন্দুকবাজকে। পুলিশ জানায়, ওই বন্দুকবাজের বয়স ১৫। সে ওই স্কুলেরই উঁচু ক্লাসের ছাত্র। তবে নাবালক হওয়ায় তার নাম প্রকাশ করা হয়নি। কী কারণে ওই ছাত্র এমনটা করেছে, তা নিয়ে ধন্দে পুলিশ।
এক প্রত্যক্ষদর্শী জানাচ্ছেন, হঠাৎই এক ছাত্র হাতে বন্দুক নিয়ে স্কুল চত্বরে ঢুকে পড়ে। স্কুলের নিরাপত্তারক্ষী তাকে আটকানোর চেষ্টা করলে সে তাঁকে সঙ্গে সঙ্গেই গুলি করে। এর পর একটি ক্লাসে ঢুকে জনা কুড়ি ছাত্রকে পণবন্দি করে সে। সেই সময় তার সামনে যে এসেছে, সে এলোপাথাড়ি গুলি চালিয়েছে। পড়ুয়াদের উদ্ধারে এসে এ ভাবেই গুলিবিদ্ধ হন এক শিক্ষক। ওই ছাত্রটি স্কুলে ঢোকার পর পরই খবর যায় পুলিশে। কিছু ক্ষণের মধ্যেই গোটা স্কুল ঘিরে ফেলে বিশাল পুলিশ বাহিনী। স্কুলবাড়ির মাথার উপর চক্কর কাটতে থাকে পুলিশের একটি হেলিকপ্টারও। স্কুলের বাইরে তখন উদ্বিগ্ন বাবা-মায়েরা ভিড় করেছেন। কিছু ক্ষণ পরে ওই বন্দুকবাজকে নিরস্ত্র করে তাকে আটক করা হয়।
স্কুল বা বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে বন্দুকবাজের হামলা আমেরিকায় খুব পরিচিত হলেও রাশিয়ায় এ ধরনের ঘটনা সচরাচর ঘটে না। ২০০৪ সালে উত্তর ওসেটিয়ার বেসলানের এক স্কুলে জঙ্গি হামলার ঘটনার পর থেকে রাশিয়ার সব স্কুলে নিরাপত্তারক্ষী রাখা এখন বাধ্যতামূলক। তা সত্ত্বেও এ রকম ঘটনা কী ভাবে ঘটল, তা নিয়ে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। ওই ছাত্রের উদ্দেশ্য নিয়েও ধন্দ কাটছে না। একটি সূত্রের মত, ব্যক্তিগত কোনও আক্রোশের বশে নিজের স্কুলেই এমন কাণ্ড ঘটিয়েছে ওই ছাত্র।
সকালে খবর পাওয়ার পর পরই ঘটনাস্থলে ছুটে যান রুশ অভ্যন্তরীণ মন্ত্রী ভ্লাদিমির কলোকলস্টেভ। যান তদন্তকারী কমিটির প্রধান আলেকজান্ডার বাসস্ট্রিকিনও। গোটা ঘটনায় উদ্বেগ বেড়েছে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের। আর দিন চারেক পরই শুরু হচ্ছে সোচি অলিম্পিক। এই অবস্থায় দেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থা সুনিশ্চিত করাটাই এখন প্রেসিডেন্টের সব চেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। |