বিশ্বকাপার কর্নেল গ্লেন বনাম গোলমেশিন ওডাফা ওকোলি।
জাপানি ‘বোমা’ কাতসুমি বনাম জাপানি ‘রংমশাল’ তাইসুকে।
দৌড় এবং দৌড় বনাম অঙ্ক কষা টিম গেম।
মরক্কান চতুরতা বনাম পাহাড়ি স্বতঃস্ফূর্ততা।
কোচিতে শনিবারের বাগান বনাম শিলং ম্যাচে হাজির অসংখ্য চরিত্র আর উত্তেজনার উপাদান।
চৌম্বকে যার ব্যাখ্যা করা যেতে পারে— যে জিতবে সেই ফেড কাপ সেমিফাইনালের টিকিট কার্যত পকেটে পুরে ফেলবে। আর ড্র হলে দু’জনকেই গ্রুপের শেষ ম্যাচ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।
ম্যাচের চব্বিশ ঘণ্টা আগে করিম বেঞ্চারিফা এবং থাংবোই সিংটোর সঙ্গে কথা বলে মনে হচ্ছে, একে অন্যকে আজই পেড়ে ফেলতে চাইছেন।
বিপক্ষে তো ওডাফা নামছেন? আপনার পরিকল্পনা?
“ওডাফা বড় প্লেয়ার সন্দেহ নেই। কিন্তু ওর তো চোট আছে। ওর চেয়ে আমি কাতসুমিকে নিয়েই বেশি ভাবছি। ওই তো মোহনবাগানের আসল প্লে মেকার,” শিলং লাজংয়ের কোচ সিংটো সরাসরিই বলে দেন। কিছুক্ষণ পরেই বাগান কোচ করিমের মন্তব্য, “আমরা যে কোনও পরিস্থিতির জন্য তৈরি। আর একটা ফাইনাল খেলতে নামছি। জিততে হবে এটাই মাথায় রাখছি।” |
আজ কি বাগানের ভরসা হয়ে উঠতে পারবেন ওডাফা? |
মুম্বই ম্যাচে মোহনবাগানের যে শক্তি ছিল, টুবোই-মিলন সিংহদের মুখের গ্রাস কাড়তে তার চেয়ে শক্তিশালী টিম হাতে পাচ্ছেন করিম। ওডাফা আর ডেনসন দেবদাস ফিরছেন টিমে। বাদ পড়ছেন সাবিথ আর শঙ্কর ওঁরাও।
৪-১-৩-১-১ ফর্মেশনে টিম সাজাচ্ছেন করিম। ওডাফাকে সামনে রেখে। ঠিক পিছনে ক্রিস্টোফার। যিনি এক বছর আগে ছিলেন প্রতিপক্ষ শিবিরে। মোহন-কোচের স্ট্র্যাটেজি—ওডাফাকে সামনে রাখলে শিলং-এর হু হু করে আক্রমণে উঠে আসাটা থমকে যাবে। কিন্তু সেটা কি কার্যকর হবে? ওডাফাকে তো সে ভাবে গুরুত্বই দিচ্ছেন না পাহাড়ি কোচ। “ওডাফা ফিট হলে ভাবতাম। কিন্তু আমাদের গ্লেনও দারুণ ফর্মে আছে সেটা যেন ওরা মাথায় রাখে।”
শিলংয়ের সবথেকে বড় অস্ত্র গতি ও ফিটনেস। সালগাওকরকে যে ভাবে এই দুটো অস্ত্র দিয়ে দু’দিন আগেই নাকানি-চোবানি খাইয়েছেন টুবোইরা তা অনেকেরই চোখ টেনেছে। করিমেরও চোখ এড়ায়নি। “আমার টিমেও অনূর্ধ্ব তেইশের অনেক ফুটবলার আছে। তারাও দ্রুত গতির ফুটবল খেলতে অভ্যস্ত।” মোহন-কোচের কথায় সরাসরিই ইঙ্গিত গতি দিয়েই পাহাড় বধের অঙ্ক কষছেন। “শুধু গ্লেনকে আটকালেও হবে না। মনে রাখবেন, আগের ম্যাচে আমার টিমের চারজন চারটে গোল করেছে,” বেশ স্বতঃস্ফূর্ততা নিয়ে বলছিলেন শিলংয়ের তরুণ কোচ। আর গ্লেন বলে দিয়েছেন, “মোহনবাগানের খেলা দেখেছি। টিম যা খেলছে তাতে আমরাই জিতব। কেউ আটকাতে পারবে না।”
গ্লেনের সঙ্গে যুদ্ধে নামার আগে ওডাফা মুখ খুলতে চাননি। চনমনে মেজাজে থাকা মোহন-অধিনায়ক অনুশীলন করেই সোজা চলে যান হোটেলে। তবে ক্রিস্টোফার বলে গেলেন, “শিলংয়ে আমি খেলে এসেছি। ওদের সব কিছু জানি। মোহনবাগান আমাকে গোল করার জন্য সই করিয়েছে। আরও গোল করতে চাই। ওডাফাকে ওরা আটকাতে ব্যস্ত থাকবে। এটাই আমার সুবিধা।” পাল্টা লাজং কোচের মন্তব্য, “ক্রিস্টোফার যেমন আমাদের চেনে। তেমন আমরাও ওদের চিনি। গোল করা অত সহজ হবে না।”
করিমের সবথেকে বড় সুবিধা তাঁর রক্ষণ ডার্বি ম্যাচ শুধু নয় ধারাবাহিক ভাল খেলছে। শিলং আবার বরাবরই অঘটনের দল হিসাবে পরিচিত। যে কোনও হিসেব উল্টে দিতে পারে। কলকাতা লিগ হাতছাড়া করার পর ফেড কাপে বাগানের রথ এগোয় কি না তার পরীক্ষা যে আজই। |