লাজং ম্যাচেই ওডাফা
গ্লেনকে আটকানোর ক্ষমতা আছে বাগানের, দাবি করিমের

১৬ জানুয়ারি
উসিফ ইয়াকুবু কিছু করতে পারেনি। কর্নেল গ্লেন-ও নাকি আটকে যাবেন। শিলং লাজং ম্যাচের আটচল্লিশ ঘণ্টা আগেই যুদ্ধ ঘোষণা করে দিলেন করিম। বলে দিলেন, “গ্লেন ভাল স্ট্রাইকার। কিন্তু আমাদের ডিফেন্স যা খেলছে তাতে ওকে আটকে দেওয়ার ক্ষমতা রাখে।”
গতকাল সালগাওকরের বিরুদ্ধে লাজংয়ের চমকপ্রদ জয়ের প্রধান হোতা ত্রিনিদাদ অ্যান্ড টোবাগোর স্ট্রাইকার গ্লেন যে ইতিমধ্যেই মরক্কান কোচের অঙ্কে প্রধান ভূমিকা নিয়েছেন তা কথা বললেই বোঝা যায়। অফিস খেলে ডেনসন দেবদাস এ দিনই চলে এসেছেন কোচির টিম হোটেলে। গ্লেনের জন্য শনিবার ডেনসন-ই যে সেরা ‘ওষুধ’ সেটা প্রকাশ্যে বলতে চাননি মোহন-কোচ। তবে জানিয়ে দিয়েছেন, “ডেনসন ফিরে আসায় সুবিধা হয়েছে। ও আমাদের মাঝমাঠে অপরিহার্য।” ডেনসন কী বলছেন? কন্নুরের ছেলের মন্তব্য, “গ্লেনকে আমি আগে মার্ক করেছি। আটকেওছি। তবে এখন ও আগের চেয়ে ভাল খেলছে। দু’পাশে প্রচুর নড়াচড়া করছে। কোচ যা দায়িত্ব দেবেন সে ভাবেই খেলব।”
ডার্বি জয়ের পর ফেড কাপে প্রথম ম্যাচেই জয়। তবু অত্যন্ত সতর্ক বাগান কোচ। মরসুমে প্রথমবার ‘ফিল গুড’ পরিস্থিতি টিমে। সেটা যাতে ফুটবলারদের অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসী না করে ফেলে সে জন্য টিম মিটিংয়ে এ দিন করিম বলেছেন, “মাত্র একটা ফাইনাল জিতেছি। এখনও চারটে ফাইনাল খেলতে হবে। হইচই করার মতো কিছুই এখনও করিনি আমরা। প্রচুর গোলও নষ্ট হয়েছে।” যা শুনে এক ফুটবলারের মন্তব্য, কোচ তো চ্যাম্পিয়ন হওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী হয়ে উঠেছেন। ‘চারটে ফাইনাল জেতা’ মানে তো ফেড কাপ নিয়ে কলকাতায় ফেরা। সাংবাদিক সম্মেলনে অবশ্য করিম শুধু লাজং ম্যাচকেই লক্ষ্য করলেন। “ফেড কাপে পয়েন্ট সমান হয়ে গেলে গোল পার্থক্য নয়, দেখা হয় সেই দু’টিমের হেড-টু-হেড রেজাল্ট। ফলে লাজং ম্যাচ আমাদের কাছে ডু অর ডাই। আমি ম্যাচ বাই ম্যাচ এগোতে চাই।”

ওডাফা ও ডেনসন। শনিবারের ম্যাচে করিমের দুই অস্ত্র।
তীব্র চাপ থেকে আপাতত বেরিয়ে আসা ইচে-প্রীতম-সৌভিকরা যাতে ফের সেই আবর্তে না পড়েন সে জন্য হোটেলে খোলামেলা পরিবেশের চেষ্টায় করিম। সকালে সাঁতার সেশন ছাড়া এ দিন ফুটবলারদের ঘুরে বেড়ানোর সবুজ সঙ্কেত দিয়েছিলেন। ‘মিশন পাহাড়’ অভিযানে বেরনোর আগে ডেনসনের সংযুক্তি করিমকে আশ্বস্ত তো করেছেই। ওডাফা-ও ফিরছেন টিমে। ওডাফা-ক্রিস্টোফার জুটি নামলে শিলং রক্ষণ যে আরও চাপে পড়বে সেটা প্রকাশ্যেই জানাচ্ছে মোহনবাগান। “মুম্বই এফসি ম্যাচেই ওডাফা নামতে চেয়েছিল। আমি ঝুঁকি নিইনি। শিলং ম্যাচে ওডাফাকে পাচ্ছি। ও খেলা মানে বিপক্ষের ডিফেন্সের উপর চাপ বাড়বে। আর নিজেদের ডিফেন্সের উপর চাপ কমবে। এটা যে কোনও দলের কাছে বাড়তি অ্যাডভান্টেজ,” দুপুরে কোচির হোটেলের লবিতে অকপট করিম।
বোঝাই যায়, আগের যাবতীয় বিভেদ আলমারিতে তালাবন্দি করে এখন ওডাফা-করিম হরিহরআত্মা। বাগানের ট্রফি-খরা মেটাতে যা ভাল রসায়ন সন্দেহ নেই। লাজং ম্যাচ জিতে সেমিফাইনালে যাওয়ার ছাড়পত্র জোগাড় করলে ওই জোট আরও পোক্ত হবে। ওডাফার জন্য অপেক্ষা করছেন ক্রিস্টোফারও। “ওডাফা পাশে খেললে আমি গোল করার বাড়তি তাগিদ অনুভব করি।” মুম্বই ম্যাচ জেতানোর কারিগরের আরও সংযোজন, “ফেড কাপের প্রথম গোলটা করার পর সদস্য-সমর্থকদের প্রত্যাশা আরও বেড়ে যাবে। সেটার সম্মান দিতে আরও কিছু গোল চাই আমার।”
মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে শেষ দিকে চোট পেয়েছিলেন ইচে। কিন্তু এখন পুরো সুস্থ। কিংশুক দেবনাথও ফিরেছেন অফিস খেলে। লাজংয়ের বিরুদ্ধে ইচের সঙ্গী হিসাবে প্রথম দলে বঙ্গসন্তানের জায়গা হবে কি না তা নিয়ে অবশ্য ধোঁয়াশা রাখছেন করিম। “মুম্বই ম্যাচে আমাদের রক্ষণ যা খেলেছে তাতে আমি খুশি।” তবে লাজং ম্যাচে দু’টো পরিবর্তন হচ্ছেই। ওডাফা এবং ডেনসন ঢুকছেন দলে। রক্ষণের প্রশংসার পাশাপাশি কাতসুমির জন্যও গলা ফাটাচ্ছেন করিম। “কাতসুমির যেটা আমার ভাল লাগে, ওর হার না মানা মনোভাব। শেষ মিনিট পর্যন্ত লড়ে যায়।”
কলকাতার আরেক আই লিগ টিম ইউনাইটেডের কিন্তু কাল টিঁকে থাকার শেষ লড়াই। পুণে এফসি-কে হারাতে না পারলে র‌্যান্টিদের কলকাতায় ফেরার টিকিট কাটতে হবে। স্পনসরহীন দলের মধ্যে হতাশা আরও প্রকট হবে। কোচ এলকো তাই যে কোনও মূল্যে ম্যাচটা জিততে চাইছেন। বললেন, “রক্ষণ নিয়ে সমস্যা রয়েছে। কিন্তু গোল নষ্টও করছি আমরা। দু’টোই সামলাতে হবে কালকের ম্যাচে।”
করিম কাপের আশায় কোচির যে মাঠকে বেছে নিচ্ছেন, এলকো সেই মাঠেই চাইছেন বাঁচতে। দেখার, ফুটবল ঈশ্বরের কৃপা কার উপর বর্ষায়।

পুরনো খবর:





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.