রাজ্যে ডিজিটাল রেশন কার্ড করানোর কাজ সম্পন্ন করতে নতুন ব্যবস্থা নিচ্ছে খাদ্য দফতর।
গ্রাহক যদি রেশন দোকানে আসতে না-পারেন, সরকারি কর্তারাই গ্রাহকের কাছে যাবেন। রবিবার বা ছুটির দিনে, এক-একটি নির্দিষ্ট এলাকায় কোনও স্কুলবাড়ি, কমিউনিটি হল বা ক্লাবঘরে ডিজিটাল কার্ড করানোর আয়োজন করা হবে। তবে এই সুযোগ শুধু এক বারই দেওয়া হবে। যাঁরা এই সুবিধা নিতে পারবেন না, তাঁদের স্থানীয় রেশন অফিস, বিডিও বা মহকুমা খাদ্য নিগমের অফিসে গিয়ে কার্ড করাতে হবে। বুধবার খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক এ কথা জানান।
সীমিত বৈদ্যুতিন যন্ত্র নিয়ে সাড়ে ন’কোটি ডিজিটাল রেশন কার্ড করাতে খাদ্য দফতরের কর্তারা যে হিমশিম খাচ্ছেন, খাদ্যমন্ত্রী নিজেই এ দিন তা জানিয়ে দেন। তিনি বলেন, “মাত্র ১০ হাজার ট্যাবলেট (বৈদ্যুতিন যন্ত্র) নিয়ে এই বিশাল কাজ সারতে হচ্ছে। কোনও রেশন দোকানেই তথ্য সংগ্রহ করার জন্য এক দিনের বেশি সময় দেওয়া যাচ্ছে না। জাতীয় জনসংখ্যা নথি (ন্যাশন্যাল পপুলেশন রেজিস্টার) বা জাতীয় আর্থসামাজিক ও জাতিগত শুমারির (ন্যাশনাল সোশিও-ইকনমিক অ্যান্ড কাস্ট সেন্সাস) তথ্যের সঙ্গে রেশন কার্ডধারীদের নাম মিলিয়ে নিতে হচ্ছে বলে সময় লাগছে আরও বেশি। তাতে এক দিনে একটি দোকানের সব কার্ডধারীকে সুযোগ দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।” তিনি
জানান, পরিস্থিতি বিবেচনা করে ইতিমধ্যেই ৩১ ডিসেম্বর থেকে সময়সীমা বাড়িয়ে ৩১ জানুয়ারি করা হয়েছে। কিন্তু রাজ্যের যে-দশটি জেলায় কাজ হচ্ছে, তা এই সময়ের মধ্যে শেষ করা যাবে কি না, মন্ত্রী নিজেই সেই বিষয়ে নিশ্চিত নন। তিনি বলেন, “কার্ড করানোর মেয়াদ দরকারে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বাড়িয়ে দেওয়া হবে।”
মন্ত্রীর দাবি, যে-দশটি জেলায় ডিজিটাল রেশন কার্ড করার কাজ চলছে, তার গ্রামীণ এলাকায় ৬০-৬৫ শতাংশ কার্ডধারীর তথ্য নথিভুক্ত করা হয়েছে। কিন্তু কলকাতায় এই হার ৩০-৩৫ শতাংশ। তিনি বলেন, “কলকাতায় মানুষ ডিজিটাল রেশন কার্ড তৈরিতে তেমন উৎসাহ দেখাচ্ছেন না। কার্ডধারীরা বলছেন, তাঁদের সময়ের অভাব।” দফতর সূত্রের
খবর, অনেকই জানতে চাইছেন, খাদ্য সুরক্ষা আইন কার্যকর হলে তাঁদের রেশন কার্ডের প্রয়োজনীয়তা থাকবে কি না? এ বিষয়ে কারও কাছেই সদুত্তর মিলছে না। কিন্তু এই নিয়ে দ্বন্দ্বে ডিজিটাল রেশন কার্ড করানোর প্রক্রিয়া ধাক্কা খাচ্ছে।
খাদ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, এটা ঠিক যে, এখনকার খাদ্য আইনে শহরে ৪৯ শতাংশ এবং গ্রামে ২৫ শতাংশ মানুষ রেশন সামগ্রী পাবেন না, রেশন কার্ড থাকলেও। সেই সঙ্গেই তিনি বলেন, “সকলেরই ডিজিটাল কার্ড করিয়ে রাখা ভাল। কারণ, পরিচয়পত্র, বাসস্থানের নথি হিসেবেও এই কার্ড কাজে লাগতে পারে।” তবে মন্ত্রী জানিয়ে দিয়েছেন, জাতীয় জনসংখ্যা নথি বা জাতীয় আর্থ-সামাজিক ও জাতিগত শুমারির নথিতে যাঁদের নাম থাকবে না, তাঁদের ডিজিটাল রেশন কার্ড দেওয়া হবে না।
কেন্দ্রীয় সরকার এখনও পর্যন্ত ১০টি জেলার এই তালিকা দিতে পেরেছে। রাজ্যের খাদ্য দফতরের কর্তাদের দাবি, কেন্দ্রকে বাকি জেলাগুলির নথি দিতে বলা হলেও সেই নথি এখনও মেলেনি। ফলে বাকি জেলাগুলিতে কবে ডিজিটাল রেশন কার্ড তৈরির কাজ শুরু করা যাবে, তা এখনই বলা যাচ্ছে না।
|