ঘূর্ণাবর্ত-উচ্চচাপের সাঁড়াশিতে জব্দ শীত
ঘূর্ণিঝড়ের বাগড়া কাটিয়ে সবে আসর জমানোর তোড়জোড় করছিল শীত। কিন্তু দক্ষিণবঙ্গের জন্য ফের দুঃসংবাদ!
আবহাওয়া দফতর জানাচ্ছে, বাংলাদেশ ও সংলগ্ন এলাকায় একটি ঘূর্ণাবর্ত রয়েছে। একই সঙ্গে ওড়িশা ও সংলগ্ন এলাকায় তৈরি হয়েছে একটি উচ্চচাপ বলয়। এই জোড়া ফলাতেই আগামী কয়েক দিন দক্ষিণবঙ্গে বাধা পাবে উত্তুরে হাওয়া। বাড়বে তাপমাত্রাও। ফলে বড়দিনের আগে কলকাতা-সহ গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের জেলাগুলিতে শীতের মেজাজি ব্যাটিং দেখতে পাওয়ার আশা কম বলেই মনে করছেন আবহবিদেরা।
এ বার ডিসেম্বরের গোড়ায় হাওয়া অফিস শীতের আগমন ঘোষণা করে দিলেও তখন তাকে ঠিক স্বমেজাজে পাওয়া যায়নি। আবহবিদদের বক্তব্য, ঘূর্ণিঝড় ‘মাদি’র প্রভাবে পরিমণ্ডলে জলীয় বাষ্প ঢুকেছিল। বাধা পেয়েছিল উত্তুরে হাওয়া। তার ফলে হাওয়া অফিসের খাতায়-কলমে শীত এলেও বঙ্গবাসী তার উপস্থিতি তেমন টের পাননি। ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহের গোড়া থেকে মাদি-র প্রভাব কাটতেই বাড়তে থাকে উত্তুরে হাওয়ার দাপট। পাল্লা দিয়ে নামতে থাকে পারদও। হাওয়া অফিস সূত্রের খবর, মঙ্গলবারেই কলকাতা ও সংলগ্ন এলাকায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি নেমে গিয়েছিল। বীরভূমের শ্রীনিকেতন বা বর্ধমানের পানাগড়ে তাপমাত্রা ছিল আরও কম। উৎফুল্ল হয়ে উঠছিলেন শীত প্রত্যাশীরা।
কিন্তু পরিস্থিতিটা বদলে যায় মঙ্গলবার রাত থেকেই। আবহাওয়া দফতর সূত্রের খবর, ঘূর্ণাবর্ত ও উচ্চচাপের ফলে মেঘ ঢুকতে থাকে আকাশে। বাড়তে থাকে তাপমাত্রা। বুধবার কলকাতা ও সংলগ্ন এলাকার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৫.৬ ডিগ্রি, স্বাভাবিকের থেকে দু’ডিগ্রি বেশি। বুধবার মেঘলা থাকায় দিনের বেলায় অবশ্য বেশ শীত-শীত ভাব ছিল। আবহবিদেরা বলছেন, শীতকালে আকাশ মেঘলা থাকলে শীত-শীত ভাব থাকাটাই স্বাভাবিক। কিন্তু দিনের বেলায় চড়া রোদ না-উঠলে রাতের তাপমাত্রা খুব বেশি নামে না। আর দিনে-রাতে তাপমাত্রার ফারাক বেশি না-হলে বাড়ে না শীতের দাপট।
আবহাওয়ার ভাবভঙ্গি যাচাই করে আপাতত মেঘলা আকাশ ও ঠান্ডা কমার ইঙ্গিতই দিচ্ছে হাওয়া অফিস। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা গোকুলচন্দ্র দেবনাথ বলেন, “ঘূর্ণাবর্ত ও উচ্চচাপের প্রভাবে আপাতত কয়েক দিন আকাশে মেঘ ঢুকবে। জলীয় বাষ্পের পরিমাণ বাড়বে বাতাসে। তাপমাত্রা স্বাভাবিকের উপরেই থাকবে।”
বড়দিনের আগে স্বাভাবিক ভাবেই হতাশ শীত-প্রত্যাশী বাঙালি। গত কয়েক দিনে উত্তুরে হাওয়ার দাপট দেখে অনেকেই আশা করেছিলেন, বড়দিনের আগেই শীতকে দেখা যাবে স্বমূর্তিতে। গত রবিবার কলকাতায় জমে উঠেছিল বড়দিনের কেনাকাটাও। কিন্তু তার পরে তেরাত্তির পেরোতে না-পেরোতে বদলে গিয়েছে হাওয়া!
এর মধ্যে অবশ্য আশার আলো দেখছেন অনেকে। আবহাওয়া দফতর সূত্রের খবর, গত বছরও এমন সময় কলকাতা এবং সংলগ্ন দক্ষিণবঙ্গে তাপমাত্রার পারদ চড়েছিল। ২০১২ সালের ১৮ ডিসেম্বর কলকাতা ও সংলগ্ন এলাকায় তাপমাত্রা ছিল ১৬.৬ ডিগ্রি, স্বাভাবিকের থেকে তিন ডিগ্রি বেশি। কিন্তু আবহাওয়ার দ্রুত পরিবর্তনে সে-বার বড়দিনে তাপমাত্রা পৌঁছে গিয়েছিল ১২ ডিগ্রির কাছাকাছি। কনকনে ঠান্ডা নিয়েই উৎসবে মেতেছিল বাঙালি।
এ বারেও কি তেমনটা হবে? বড়দিনের কেক-কমলালেবুর সঙ্গে মিলবে কি শীতের আমেজও?
অনেকে আশাবাদী। কিন্তু নিশ্চিত উত্তর নেই হাওয়া অফিসের কাছে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.