ক্রিকেট রাজনীতিতে ফেরার রাস্তা পরিষ্কার ললিত মোদীর
নিজস্ব প্রতিবেদন
১৮ ডিসেম্বর |
নারায়ণস্বামী শ্রীনিবাসনের উদ্বেগ বাড়িয়ে ভারতীয় ক্রিকেট রাজনীতিতে ফেরার পথে ললিত মোদী। রাজস্থান ক্রিকেট সংস্থাকে নির্বাসনের হুমকি দিয়েও যা আটকাতে পারল না শ্রীনির বোর্ড। সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষকই ললিত মোদীকে সংস্থার প্রেসিডেন্ট পদপ্রাথী হওয়ার অনুমতি দিলেন। শোনা যাচ্ছে, বেশিরভাগ ভোটারও মোদীর দিকেই। সব কিছু ঠিকঠাক চললে রাজস্থানের ক্রিকেটের সর্বোচ্চ আসনে বসতে চলেছেন মোদী। যা আর যেই চান না কেন, বর্তমান বোর্ড প্রেসিডেন্ট অন্তত চাইবেন না।
বৃহস্পতিবার দুপুরে জয়পুরের সোয়াই মান সিংহ স্টেডিয়ামের লাগোয়া রাজস্থান ক্রিকেট অ্যাকাডেমির (আরসিএ) ব্যাঙ্কোয়েট হলে হবে সেই সভা, যেখানে বোর্ডের চিরনির্বাসনে থাকা ললিত মোদীকে তাদের প্রেসিডেন্ট হিসেবে ফিরিয়ে আনতে চলেছেন সংস্থার সদস্যরা। বুধবার রাত পর্যন্ত পাওয়া হিসাব বলছে ৩৩-এর মধ্যে ২৮টি ভোটই মোদীর দিকে। প্রতিদ্বন্দ্বী রামপাল শর্মার থেকে তিনি অনেকটাই এগিয়ে। শুধু মোদী নন, তাঁর প্যানেলের সব প্রার্থীই যে অন্যান্য উচ্চপদে আসতে চলেছেন, বুধবার রাতে জয়পুরে ফোন করে এমন ইঙ্গিত পাওয়া গেল। অর্থাৎ, একা নন, রীতিমতো দলবল নিয়ে রাজস্থানের ক্রিকেট প্রশাসনে রাজত্ব করতে আসছেন মোদী। মঙ্গলবারই বরোদা ক্রিকেট সংস্থায় শ্রীনি-ঘনিষ্ঠ চিরায়ু আমিন ২৬ বছর রাজত্বের পর প্রেসিডেন্ট পদ খুইয়েছেন। মুম্বই ক্রিকেট সংস্থার সর্বোচ্চ পদে শ্রীনি-বিরোধী শরদ পাওয়ার ফিরে এসেছেন আগেই। দিল্লি ক্রিকেট সংস্থাতেও বোর্ডের অন্যতম ভাইস প্রেসিডেন্ট অরুণ জেটলি বিষেন সিংহ বেদীর কড়া চ্যালেঞ্জের মুখে। সব মিলিয়ে বোর্ড প্রেসিডেন্ট কিন্তু কিছুটা হলেও অস্বস্তিতে।
বুধবার ললিত মোদীর আরসিএ প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হওয়ার যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী রামপাল শর্মা, যিনি বিদায়ী প্রেসিডেন্ট সি পি জোশীর ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। আরসিএ নির্বাচন নিয়ে মামলা হওয়ায় অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি নরেন্দ্র মোহন কাসলিওয়ালকে পর্যবেক্ষক নিয়োগ করেছে সুপ্রিম কোর্ট। এ দিন সকালে দু’পক্ষের আইনজীবীদের নিয়ে বসেন কাসলিওয়াল। শর্মার আইনজীবী যুক্তি দেন, মোদীর পাসপোর্ট যেহেতু বাজেয়াপ্ত হয়েছে, তাই তাঁর পক্ষে লন্ডনে বসে আরসিএ-র দৈনন্দিন কাজ করা সম্ভব নয়। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের গঠনতন্ত্র অনুযায়ীও মোদীর প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হওয়ার যোগ্যতা নেই বলে দাবি করা হয়।
মোদীর পক্ষের আইনজীবী পাল্টা চুক্তি দেন, রাজস্থান ক্রিকেট সংস্থা যে হেতু ২০০৫ রাজস্থান ক্রীড়া আইনের আওতাভুক্ত, তাই বোর্ডের নির্বাসনের সিদ্ধান্ত আরসিএ-র ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। তা ছাড়া সংস্থার কাজের জন্য তাঁকে সবসময়ই যে উপস্থিত থাকতে হবে, এমন কোনও বাধ্যবাধকতা নেই। লন্ডনে বসেও মোদী তা করতে পারবেন। এই যুক্তি ও পাল্টা যুক্তি শোনার পরই পর্যবেক্ষক সিদ্ধান্ত নেন মোদী প্রেসিডেন্ট পদের জন্য ভোটে লড়তে পারবেন। তার মধ্যেই সব ঘুঁটি সাজানো হয়ে গিয়েছে বোর্ডের প্রাক্তন ভাইস প্রেসিডেন্টের। ফলে বৃহস্পতিবারের সভায় মোদীই সম্ভবত বাজিমাত করতে চলেছেন।
তবে বৃহস্পতিবারই নির্বাচনের ফল ঘোষণা হবে না। চূড়ান্ত ফল জানানোর অধিকার সুপ্রিম কোর্টের। আদালত কবে সেটা জানাবে, তা পরে ঠিক হবে। তবে সরকারি ভাবে না হলেও নিজের ভাগ্য হয়তো মোদী জেনে যাবেন সভার পরেই। |