|
|
|
|
বাজারে ‘নিষ্প্রভ’ সরকারি জ্যোতি
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
আলু বাছতে ঝুড়ি উজাড়!
মানিকতলা বাজারের আলুপট্টিতে এসে দুই ধরনের ‘জ্যোতি’ দেখে দ্বিধায় পড়লেন বিবেকানন্দ রোডের বাসিন্দা অনুপ বসু। ১৩ টাকার জ্যোতিকে ‘সরকারি’ আলু বলে বেচছেন বিক্রেতা। পাশেই আছে সাধারণ জ্যোতি। তা কিন্তু কেজিপ্রতি সেই ১৮ টাকাই। কিন্তু ১৩ টাকা কেজির আলু কিনতে গিয়েই শুরু সমস্যার। সরকারি ‘জ্যোতি’ এতটাই খারাপ যে বাছতে গিয়ে প্রায় সবই বাদ দিতে হচ্ছে। কোনওটা পচা, কোনওটা কাটা। শেষে ১৮ টাকার সাধারণ জ্যোতি কিনেই ব্যাগে ভরলেন অনুপবাবু।
আসলে বিক্রেতার ডালা থেকে একটা ভাল ‘জ্যোতি’ খুঁজে পেতে হিমশিম ক্রেতারা। তাঁদের কথায় বেশির ভাগ ‘জ্যোতি’ই খারাপ। কিন্তু সেগুলিই সরকারি। এই আলু বিকোচ্ছে ১৩ টাকায়। ক্রেতাদের কথায় যে ‘জ্যোতি’ পাতে দেওয়ার মতো, তার দাম ঘোরাফেরা করছে ১৮ থেকে ২০ টাকার মধ্যেই। চন্দ্রমুখী তো ২২ টাকাতেও বিক্রি হচ্ছে।
সরকার বলছে, ১৩ টাকার জ্যোতি আলু পাওয়া যাচ্ছে বাজারে। মানিকতলা বাজার থেকে শুরু করে শোভাবাজার বা গড়িয়াহাট বাজার থেকে লেক মার্কেটে কিছু দোকানে মিলছেও সেই ১৩ টাকার আলু। কিন্তু তার মান নিয়ে অভিযোগ করছেন অনেকেই। ফলে ওই সব বাজারে সাধারণ জ্যোতি
আলু বিকোচ্ছে ১৬ থেকে ১৮ টাকায়। চন্দ্রমুখী বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ২২ টাকায়।
মানিকতলা বাজার সমিতির সম্পাদক প্রভাত দাস বলেন, “সরকার আলু বিক্রেতাদের ১১ টাকা কেজি দরে আলু দিতে চাইলেও আমাদের বাজারের বিক্রেতারা ওই আলু কিনতে উৎসাহী নন। কারণ বস্তা খোলার পরে বেশির ভাগ আলুই খারাপ বেরোচ্ছে। দু’একজন বিক্রেতা ১১ টাকা দিয়ে আলু কিনে ১৩ টাকা কেজি দরে বিক্রির চেষ্টা করছেন ঠিকই, কিন্তু সেই আলু বিক্রি হচ্ছে খুব কম।” ছবিটা প্রায় এক দক্ষিণেও।
শিয়ালদহের কোলে মার্কেটের এক পাইকারি বিক্রেতা দীনেশ মণ্ডল বলেন, “শীত পড়তেই বাজারে এসেছে নতুন আলু। পঞ্জাব থেকে আসা এই নতুন আলু কিনতেই আগ্রহী ক্রেতারা।” কেন কমছে না দাম? পাইকারি বিক্রেতারা জানাচ্ছেন, আরামবাগ কোল্ড স্টোরেজ থেকে যে ভাল মানের আলু আসছে, তার দাম এখনও কমেনি। যদিও বিক্রেতাদের দাবি, ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময় থেকে আলুর দাম কমবে।
কৃষি বিপণন মন্ত্রী অরূপ রায়ের অবশ্য দাবি, ১৩ টাকায় যে আলু সরকার বিক্রি করছে, তার মান ভালই। তিনি বলেন, “হুগলি, বর্ধমান থেকে এই জ্যোতি আলু আসছে। এর মান ভাল বলেই জানি। তবে কোনও বাজার থেকে অভিযোগ এলে তা খতিয়ে দেখা হবে। যাঁরা এই আ লু বাজারে পাঠাচ্ছেন, তাঁদের সঙ্গে কথা বলে কোথাও কোনও সমস্যা হচ্ছে কি না জানতে হবে।”
তবে আলুর দাম না কমলেও শীত পড়তেই সব মিলিয়ে বেশ কিছুটা কমেছে বাজার দর। ফুলকপির দাম প্রতি পিস ১০ থেকে ১৫ টাকার মধ্যে, বাঁধাকপির কিলো ১৫ থেকে ২০ টাকা। শীতের টোম্যাটোর দাম এখন ৪০ টাকা কিলো, যা কিছু দিন আগেও ছিল ৬০ থেকে ৭০ টাকা। মটরশুঁটি মিলছে ৫০ টাকা কেজি দরে। বিক্রেতারা জানাচ্ছেন সব্জি ও পেঁয়াজের দাম কিছু দিনের মধ্যে আরও কমার সম্ভাবনা রয়েছে।
|
পুরনো খবর: সরকারি আলু আসছে না, চড়ছে জ্যোতির দাম
|
|
|
|
|
|