|
|
|
|
আধার-ভর্তুকি আরও পিছোনোর দাবি রাজ্যের
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
আধার নম্বরের ভিত্তিতে রান্নার গ্যাসে ভর্তুকি দেওয়ার প্রক্রিয়া নিয়ে বিতর্ক অব্যাহত। ভর্তুকির গ্যাস পেতে গ্রাহকদের আধার নম্বর জমা দেওয়ার তিন মাসের সময়সীমা ফের পিছোনোর দাবি জানাল রাজ্য। বৃহস্পতিবার তেল সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকে রাজ্যের ক্রেতা সুরক্ষামন্ত্রী সাধন পাণ্ডে ওই সময়সীমা অনির্দিষ্টকালের জন্য পিছিয়ে দেওয়ার দাবি জানান। তাঁদের বক্তব্য, আধার নম্বর তৈরির প্রক্রিয়া পুরো শেষ না-হওয়া পর্যন্ত তিন মাসের সময় বেঁধে দেওয়া ঠিক নয়। তাতে অনেক গ্রাহকেরই ভর্তুকির গ্যাস পাওয়া থেকে বঞ্চিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
কলকাতা, হাওড়া ও কোচবিহারে ১ নভেম্বর এবং হুগলিতে ১ ডিসেম্বর থেকে আধার নম্বরের ভিত্তিতে গ্রাহকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সরাসরি রান্নার গ্যাসের ভর্তুকি জমা করা শুরু হয়েছে। ১ জানুয়ারি থেকে মুর্শিদাবাদ, দক্ষিণ দিনাজপুর ও মালদহেও তা চালু হওয়ার কথা। যেখানে যে দিন এই প্রকল্প চালু হয়েছে বা হবে, তার পর থেকে তিন মাসের মধ্যে গ্রাহকদের তেল সংস্থা ও ব্যাঙ্কে তাঁদের আধার নম্বর নথিভুক্ত করতে হবে। তা না করলে, গ্যাস কিনলে তিনি ভর্তুকির টাকা পাবেন না। প্রাপ্য ভর্তুকির গ্যাসও তাঁকে বাজার দরেই কিনতে হবে।
সার্বিক ভাবে আধার প্রকল্পের বাস্তবতা নিয়ে এর আগে ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কেন্দ্রীয় তেল মন্ত্রক, জাতীয় জনগণনা দফতর ও তেল সংস্থাগুলির কর্তাদের নিয়ে গত মাসের বৈঠকে রাজ্যের তরফে আপত্তির কথা জানিয়ে দেন মুখ্য সচিব সঞ্জয় মিত্র। যদিও তেল মন্ত্রক তাতে সাড়া দেয়নি।
আধার নিয়ে এখনও ধোঁয়াশা থাকায় এ দিন ফের তিনটি তেল সংস্থাকে বৈঠকে ডাকেন সাধনবাবু। পরে তিনি বলেন, “কত গ্রাহকের এখনও আধার নম্বর নেই, তা স্পষ্ট নয়। কত দিনে তাঁরা তা হাতে পাবেন, তাও অনিশ্চিত। তাই তিন মাসের সময়সীমা বেঁধে দেওয়া চলবে না।” যদিও জনগণনা দফতর ও আধার কর্তৃপক্ষের দাবি, অধিকাংশ নাগরিকেরই আধার নম্বর তৈরি হয়ে গিয়েছে। অনেকেই আবার আধার নম্বর পেলেও তা তেল সংস্থা বা ব্যাঙ্ককে এখনও জানাননি।
রান্নার গ্যাসের যে-সব গ্রাহক অসুস্থ বা বয়সজনিত কারণে শিবিরে গিয়ে আধারের জন্য ছবি তোলাতে অক্ষম, তাঁদের আধার নম্বর কী ভাবে তৈরি হবে, তা নিয়েও এ দিন প্রশ্ন তোলে রাজ্য। এ ছাড়াও গ্যাস নিয়ে ক্রেতাদের অন্য সমস্যার কথাও এ দিন তেল সংস্থাগুলিকে জানান তাঁরা।
এ দিকে, সব কিছু ঠিকঠাক চললে আগামী কাল, শনিবার থেকে কোচবিহারে গ্যাসের ডিস্ট্রিবিউটরদের কাছেই আধারের জন্য গ্রাহকদের ছবি তোলার শিবির চালু হবে। এ জন্য জেলা প্রশাসন ও তেল সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে আজ বৈঠক করবেন জনগণনা দফতরের কর্তারা। গ্যাসের যে-সব গ্রাহকের এখনও আধার নম্বরের জন্য ছবি তোলা বা আঙুলের ছাপ দেওয়া বাকি, তাঁদের জন্যই গ্যাসের দোকানে বা সংলগ্ন এলাকায় এই ব্যবস্থা চালু করার কথা আগেই ভাবা হয়েছিল। তবে সেখানে গিয়ে শুধু গ্রাহকই ছবি তোলাতে পারবেন, তাঁর পরিবারের অন্য সদস্যরা (যাঁদের আধারের কাজ বাকি) সেই সুযোগ পাবেন না। অন্যদের স্থানীয় প্রশাসন আয়োজিত শিবিরে গিয়েই ছবি তোলাতে হবে। কোচবিহারের প্রকল্প থেকে অভিজ্ঞতা নিয়ে পরে কলকাতা ও হাওড়ায় গ্যাসের দোকানে এই শিবির চালু করার কথা ভাবছে জনগণনা দফতর। গোড়ায় কলকাতাতেই তা শুরু হওয়ার কথা থাকলেও সেই সিদ্ধান্ত স্থগিত রেখে প্রথমে কোচবিহারে তা চালু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। |
|
|
|
|
|