তৃণমূলের পুরবোর্ড শপথ নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এল টাকা।
বৃহস্পতিবার কাউন্সিলরদের জরুরি বৈঠকে ডেকে সে কথা ঘোষণাও করে দিলেন হাওড়ার নতুন মেয়র। জানিয়ে দিলেন, হাওড়ার উন্নয়নের কাজের জন্য রাজ্য সরকার ১১০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চাইছেন ওই টাকায় আগামী ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে স্বল্পমেয়াদী কাজগুলির বেশির ভাগটাই শেষ করে ফেলতে, যার মধ্যে রয়েছে ত্রিফলা আলো লাগানোও।
বুধবার শপথ নেওয়ার পরে রাতেই পদ্মপুকুর জলপ্রকল্প পরিদর্শনে যান নতুন মেয়র রথীন চক্রবর্তী। সেখানে প্রকল্পের ইঞ্জিনিয়ারদের জানিয়ে আসেন, ওই প্রকল্পের কী কী সমস্যা, কেন মানুষকে পরিস্রুত জল সরবরাহ করা যায় না, সে ব্যাপারে সবিস্তার রিপোর্ট অবিলম্বে জমা দিতে হবে তাঁর কাছে। এর পরের দিনই তিনি পুরসভায় এসে এলাকার উন্নয়নের জন্য তাঁদের কী কী প্রস্তাব রয়েছে, তা জানতে সব কাউন্সিলরদের নিয়ে বৈঠকে বসেন। সেখানেই তিনি ঘোষণা করেন রাজ্য সরকারের অর্থ বরাদ্দের কথা।
এ ব্যাপারে মেয়র বলেন, “রাজ্য যে ১১০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে, সেই টাকায় অবিলম্বে কাজ শুরু হবে। কী কী কাজ হবে তার পরিকল্পনা হয়ে গিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন, ওই কাজ দ্রুত শেষ করতে হবে। আমি কাউন্সিলদের বলেছি, তাঁদের কী কী প্রস্তাব রয়েছে লিখিত ভাবে তা জমা দিতে।” এ দিকে, শপথ নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তৃণমূল বোর্ডের জন্য ১১০ কোটি টাকা বরাদ্দ হওয়ার ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বিগত বামবোর্ডের প্রাক্তন মেয়র মমতা জায়সবাল বলেন, “মাত্র ৫০ কোটি টাকা চেয়েছিলাম সংযুক্ত এলাকার মানুষকে জল দেওয়ার জন্য। তা-ও পাইনি। অথচ শপথের সঙ্গে সঙ্গে এত টাকা এসে গেল? ওই টাকায় উন্নয়ন নয়, লুঠ হবে।”
প্রাক্তন মেয়র এ কথা বললেও নতুন তৃণমূল বোর্ড যে নাগরিক পরিষেবার মান বাড়াতে প্রথম থেকেই উদ্যোগী, তা এ দিনের বৈঠকের পরেই স্পষ্ট হয়ে যায়। বৈঠকের পরে স্পষ্টই খুশি কংগ্রেস কাউন্সিলর শৈলেশ রাই বলেন, “মেয়রের ভূমিকায় আমি খুশি। তিনি উন্নয়নের কাজ করতেই চান। আমি জানিয়েছি, হাওড়ার উন্নয়নের কাজে আমি সব সময়ে মেয়রের সঙ্গে রয়েছি।”
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিনের বৈঠকে ৫০ জন কাউন্সিলরের মধ্যে ৪৯ জন উপস্থিত হয়েছিলেন। আসেননি সিপিএমের ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আসরাফ জাভেদ। বৈঠকে ছিলেন পুর কমিশনার নীলাঞ্জন চট্টোপাধ্যায়, চেয়ারম্যান অরবিন্দ গুহ, পুর সচিব মানস দাসও। বৈঠকে জানানো হয়, রাজ্য সরকার হাওড়া পুর এলাকায় উন্নয়নের কাজকে স্বল্পমেয়াদী, মধ্যমেয়াদী ও দীর্ঘমেয়াদী পর্যায়ে ভাগ করেছে। সে জন্য প্রাথমিক বরাদ্দ ঘোষণা করা হয়েছে ১১০ কোটি টাকা। ওই টাকায় কী কী স্বল্পমেয়াদী কাজ হবে, তা-ও বৈঠকে জানানো হয়।
বৈঠকে পুর কমিশনার জানান, প্রথমেই হাওড়ার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ৩টি রাস্তা সারানো হবে। রাস্তাগুলি হল, বেলেপোল থেকে চ্যাটার্জিপাড়া পর্যন্ত ড্রেনেজ ক্যানাল রোড, টিকিয়াপাড়ার কাছে ইস্টওয়েস্ট মেট্রো রোড এবং উত্তর হাওড়ার জালান রোড। বৈঠকে ঘোষণা করা হয়েছে, যে সব বড় রাস্তায় যানবাহন চলে, সেই সব রাস্তায় সোডিয়াম ভেপার লাইটের নিচে ত্রিফলা আলো লাগানো হবে। এর জন্য ব্যয় বরাদ্দ হয়েছে ২৭ কোটি টাকা। পাশাপাশি, যে সব রাস্তায় এখনও আলো লাগানো হয়নি, সেই সব রাস্তায় ভেপার লাইট লাগানো হবে। এ সব কাজ শেষ হলেই ফের রাজ্য সরকার অর্থ বরাদ্দ করবে বলে জানানো হয়েছে।
|