পাটুলির বাসিন্দা শঙ্করপ্রসাদ রায়ের খুনের ঘটনায় তাঁর ভাগ্নে চিরঞ্জীব সেন এবং বোন বিপাশা সেনকে হন্যে হয়ে খুঁজছে পুলিশ। পুলিশের অনুমান, চিরঞ্জীব ও তাঁর মাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে খুনের কিনারা সম্ভব। যদিও খুনের কারণ কী, তা বৃহস্পতিবারও নিশ্চিত ভাবে জানাতে পারেনি পুলিশ।
পুলিশ জেনেছে, ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে একাধিক বার শঙ্করপ্রসাদের বাড়িতে যান চিরঞ্জীব। যদিও মাস দুই আগেই চিরঞ্জীব এবং তাঁর মা ওই বাড়ি থেকে চলে যান। তাঁরা কেন চলে যান, যেতে বাধ্য করা হয়েছিল কি না, সেই প্রশ্নের উত্তর মিলতে পারে একমাত্র তাঁদের কাছেই।
ময়না-তদন্তের পরে পুলিশের ধারণা, পাঁচ থেকে ছ’দিন আগেই মৃত্যু হয় শঙ্করপ্রসাদের। গোয়েন্দারা জেনেছেন, ৪ ডিসেম্বর রাত পৌনে দশটা নাগাদ শঙ্করপ্রসাদের মোবাইল থেকে শেষ বারের জন্য কারও সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। সেই ব্যক্তিরও খোঁজ চলছে। এর পর শঙ্করপ্রসাদবাবুর মোবাইল থেকে কোনও ফোন করা হয়নি। তাই পুলিশের অনুমান, ওই দিনের পরেই খুন হন তিনি।
গোয়েন্দারা জানান, খুনের পরে রান্নাঘরে গ্যাস-সিলিন্ডার রাখার জায়গায় শঙ্করপ্রসাদের দেহ ভরে দেয় আততায়ীরা। ইট সাজিয়ে সিমেন্ট ঢালা হয় সেখানে। পুলিশ জানিয়েছে, ওই বাড়ির কাছেই একটি বাড়িতে নির্মাণকাজ চলছে। সেখানে যে ইটভাটার ইট ব্যবহৃত হয়েছে, ওই একই ইট এখানে ব্যবহার হয়েছে। পুলিশের অনুমান, আগেই দেহ লোপাটের ছক কষেছিল আততায়ী। তবে ঘরে কোনও অস্ত্র না মেলায় পুলিশের ধারণা, শ্বাসরোধ করে খুনের পরে দেহ লোপাট করা হয়। তবে ইটের গাঁথনি দেখে পুলিশের অনুমান, সেটি নেহাতই কাঁচা হাতের কাজ।
গোয়েন্দারা জানান, ১৯৯৩ সালে কলকাতার বড়তলা থানা এলাকায় বিডন স্ট্রিটের একটি বাড়িতে খুন করার পরে দেহটি দেওয়ালে গেঁথে দেওয়া হয়েছিল। তবে, সেই গাঁথনি এতটাই পাকা হাতের ছিল যে, দেহ কোথায় রয়েছে গোয়েন্দারা তা টেরই পাননি। কারণ ওই গাঁথানিতে কোনও ফাঁক ছিল না। শঙ্করপ্রসাদের ক্ষেত্রে ফাঁক থাকায় মাছি ও পোকামাকড় ঢুকে গিয়েছিল। সেই কারণেই মৃতদেহে পচন ধরে গিয়েছে বলে মনে করছেন ময়না তদন্তকারীরা।
পুলিশ জেনেছে, শঙ্করপ্রসাদের স্ত্রী তাঁর বিরুদ্ধে খোরপোষের মামলা করে আদালতে জানিয়েছেন, অন্য এক মহিলার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল তাঁর। সেই মহিলার পরিচয় জানারও চেষ্টা করছে পুলিশ।
|