জমির জন্য ক্ষতিপূরণ (সোলাসিয়াম) নিয়ে দু’পক্ষ একমত না হওয়ায় সোমবারও মীমাংসা হল না মেট্রোরেলের দুটি স্টেশন তৈরির বিষয়টি। গড়িয়া থেকে দমদম বিমানবন্দর মেট্রো রেল প্রকল্পে ধাপার কাছে ই এম বাইপাসের ধারে দুটি স্টেশন করা হবে। কিন্তু তার জন্য মোট ২২ বিঘে জমির দরকার মেট্রো কর্তৃপক্ষের। ওই জায়গাটি কলকাতা পুরসভার। তবে বেশ কিছুটা অংশে দীর্ঘকাল ধরে স্থানীয় কিছু মানুষ চাষ করে জীবিকা চালান। পুরসভার শর্ত ছিল মেট্রো কর্তৃপক্ষ ওই জায়গা ব্যবহার করলে তার জন্য সংশ্লিষ্ট চাষিদের সোলাসিয়াম দিতে হবে। কাঠা প্রতি তার পরিমাণ কত টাকা হবে তা নিয়েই এ দিন পুরসভা, মেট্রো রেল ও চাষিদের এক বৈঠক হয়। পুরসভার পক্ষে ওই বৈঠকে ছিলেন মেয়র পারিষদ স্বপন সমাদ্দার ও দেবব্রত মজুমদার।
বৈঠক শেষে স্বপনবাবু জানান, চাষিদের পক্ষ থেকে বলা হয় কাঠা প্রতি ৭৫ হাজার টাকা দিতে হবে। চাষিদের টাকার অঙ্ক আরও কিছুটা কমাতে বলা হয়। শেষ পর্যন্ত অবশ্য তাঁরা ৬০ হাজার টাকায় নেমে আসেন। কিন্তু মেট্রো রেলের পক্ষে উপস্থিত রেলওয়ে বিকাশ নিগম লিমিটেডের অফিসারেরা জানিয়ে দেন ৪০ হাজারের বেশি দিতে তাঁরা অপারগ। এর বেশি দিতে হলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি প্রয়োজন।
পুরসভা সূত্রের খবর, ২২ বিঘা জায়গার মধ্যে ১০ বিঘায় হবে দুটি স্টেশন। একটির জন্য ৬ বিঘা। অন্যটি হবে চার বিঘার উপরে। ওই জায়গাটি পুরোটাই পুরসভার নিজস্ব। মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষ ওই ১০ বিঘা জায়গা পুরো কিনে নেবেন। এর জন্য ইতিমধ্যেই ২৫১ কোটি টাকা দর হেঁকেছে পুরসভা। বাকি যে ১২ বিঘা জায়গায় করিডর হবে দীর্ঘদিন ধরে সে জায়গায় চাষ করেন স্থানীয় কিছু মানুষ। পুরসভা চায় তাঁদের উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দিক মেট্রোরেল। এর আগে একাধিক বৈঠকে তা মেট্রো কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে দিয়েছে পুর প্রশাসন।
পুরসভার মেয়র পারিষদ স্বপনবাবু জানান, মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনার জন্য চাষিদের কয়েক জন প্রতিনিধিকে এ দিন ডাকা হয়েছিল। বৈঠকের শুরুতেই চাষিরা তাঁদের প্রস্তাব জানিয়ে দেন। তিনি বলেন, “সেখান থেকে তিন কিলোমিটার দূরে পুর প্রশাসন নিজেরাই জমি অধিগ্রহণ করেছে কাঠা প্রতি ৫০ হাজার টাকা সোলাসিয়াম দিয়ে। মেট্রো রেলকে দেওয়া জমিটি বাইপাসের কাছেই। তাই ওঁরা এমন কিছু বেশি দর বলেননি।” এ দিন অবশ্য মূলত আলোচনা হয় চাষিদের সোলাসিয়াম দেওয়া নিয়েই। স্বপনবাবু বলেন, “মেট্রো কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে দিয়েছি যে, পুরসভাও চয় প্রকল্পটি হোক। তবে চাষিদের স্বার্থ বজায় রেখেই তা করতে হবে।” তিনি জানান, এর আগে এ নিয়ে তিনটি বৈঠক হয়েছে। এ বার ওঁদের বলা হয়েছে বৈঠকে এমন কাউকে পাঠাবেন যিনি নিজে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারবেন। অন্যথায় বার বার বৈঠক করেও কাজ হচ্ছে না।
মেট্রো রেলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, খুব শীঘ্রই এ ব্যাপারে তাঁদের বক্তব্য পুর প্রশাসনকে জানিয়ে দেওয়া হবে।
|