বাইপাসের জমির দাম নিয়ে ফয়সালা না হওয়ায় ঝুলে আছে নিউ গড়িয়া-দমদম বিমানবন্দর মেট্রোর কাজ। মেট্রো রেল সূত্রের খবর, ইস্টার্ন মেট্রোপলিটান বাইপাসের উপর দিয়ে বেশ কিছুটা পথে ওই প্রকল্পের লাইন যাওয়ার কথা। সেখানে স্টেশন বানাতে যে জমি প্রয়োজন, সেটির মালিক কলকাতা পুরসভা। জমির জন্য পুর প্রশাসন যে দাম চেয়েছে, তা বেশি বলে জানিয়ে অনেক আগেই চিঠি দিয়েছেন রেল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু উত্তর না মেলায় আটকে আছে পুরো প্রক্রিয়া। জট কাটাতে মঙ্গলবার মেট্রো কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠক হয় পুর-প্রশাসনের। হাজির ছিলেন পুরসভার দুই মেয়র পারিষদ দেবব্রত মজুমদার ও স্বপন সমাদ্দার।
কলকাতা পুরসভা সূত্রের খবর, জমির দাম ও সেখানে থাকা চাষিদের ক্ষতিপূরণ বাবদ ২৫২ কোটি টাকা চেয়ে মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছিল পুরসভা। এ দিনের বৈঠকে ওই টাকার পরিমাণ কমানোর জন্য পুর-প্রশাসনের কাছে আবেদন জানান মেট্রো কর্তৃপক্ষ। মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় জানান, আবেদনের বিষয়টি বিবেচনা করা হচ্ছে।
মেট্রোর ওই প্রকল্পের কাজ করছে রেলওয়ে বিকাশ নিগম লিমিটেড। নিগমের চিফ প্রোজেক্ট ম্যানেজার এ কে রায় জানিয়েছেন, প্রকল্প রূপায়ণের জনা বাইপাসের ধারে যে জমি প্রয়োজন, তা পুরসভার কাছ থেকে কিনে নেবে মেট্রো রেল। ওই জায়গায় দু’টি স্টেশন হবে। পুর সূত্রের খবর, ধাপায় যে জমিতে মেট্রো স্টেশন হবে, সেখানে এখন চাষ হয়। স্থানীয় কিছু মানুষ পুরসভার ওই জমিতে দীর্ঘদিন ধরে চাষ করছেন। তাই ক্ষতিপূরণ না দিয়ে তাঁদের সরাতে চায় না পুর-প্রশাসন। মেয়র পারিষদ (জঞ্জাল অপসারণ) দেবব্রত মজুমদার জানান, আগামী ২৬ অক্টোবর মেট্রো কর্তৃপক্ষকে সঙ্গে নিয়ে পুরসভার একদল অফিসার ওই এলাকায় যাবেন। তিনি বলেন, “মেট্রোর কতটা জায়গা দরকার, সেই জায়গায় কত জন চাষি কত পরিমাণ জমি চাষ করেন, তার সমীক্ষা করা হবে। সেই হিসেব করেই পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে পুর-প্রশাসন।”
এ দিকে, রেলওয়ে বিকাশ নিগম সূত্রের খবর, নিউ গড়িয়া-দমদম মেট্রো প্রকল্প ২০১৪ সালের মধ্যে শেষ করার পরিকল্পনা ছিল তাঁদের। কিন্তু জমি জটে সেই কাজে দেরি। নিগম তাই দ্রুত জমি পেতে আগ্রহী। নিগমের এক পদস্থ আধিকারিকের কথায়, “এই প্রকল্প তাড়াতাড়ি চালু হলে সুফল পাবেন শহরবাসী। তাই যাতে জটিলতা কাটিয়ে দ্রুত এই কাজ হতে পারে, তা দেখা দরকার।” মেয়র পারিষদ দেবব্রতবাবু বলেন, “ধাপায় পুরসভার জমিতে যাঁরা এত দিন ধরে চাষ করছেন, তাঁরাও কিছু দাবি জানিয়েছেন। তাঁদের সান্ত্বনা মূল্য (সোলাসিয়াম) দেওয়ার কথা উঠেছে।” পুর সূত্রের খবর, সেই সান্ত্বনা মূল্য-সহ দু’টি স্টেশন গড়তে পুরো জমির দাম নিয়ে ২৫২ কোটি টাকার হিসেব দেওয়া হয়েছিল মেট্রোকে। যদিও ওই পরিমাণ টাকা জমির দরের চেয়ে বেশি বলেই মনে করছেন মেট্রো কর্তৃপক্ষ। তাঁদের দাবি, জনস্বার্থের এই কাজে দামের বিষয়টি বিবেচনা করুক পুর প্রশাসন।
আপাতত ঠিক হয়েছে, আগামী শনিবার ওই জায়গা সমীক্ষা করার পরেই এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের পথে এগোবে পুর প্রশাসন। পুরসভার এক পদস্থ অফিসার জানান, চাষিদের কত টাকা দিতে হবে, তা না জেনে কিছু বলা সম্ভব নয়।
|