বর্ধমান-কাণ্ড
জবানবন্দিতে ব্যাঙ্কের কারও নাম এলে ব্যবস্থা
বাউন্সারদের হাতে নিগৃহীত দম্পতি ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে গোপন জবানবন্দিতে ব্যাঙ্কের অফিসারদের নাম জানালে তার ভিত্তিতে ব্যবস্থা নিতে পারে পুলিশ।
বৃহস্পতিবারই বর্ধমান শহরের ভাঙাকুঠির বাসিন্দা আলমা বেগম গোপন জবানবন্দি দেন। তাঁর দাবি, তিনি ইউনাইটেড ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়ার দুই অফিসারের নাম জানিয়েছেন, যাঁরা হামলার সময়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন। এঁদের এক জন বর্ধমান শাখার, অন্য জন দুর্গাপুরের আঞ্চলিক দফতরের অফিসার। আজ, শুক্রবার তাঁর স্বামী শেখ আকবরেরও গোপন জবানবন্দি দেওয়ার কথা।
গত সোমবার দুপুরে অনাদায়ী ঋণ আদায়ের জন্য ভাঙাকুঠিতে আকবরদের বাড়িতে হানা দেয় বাউন্সার বাহিনী। মাথায় দেশি ওয়ান শটার বন্দুক ঠেকিয়ে আলমা বেগমের গায়ের গয়না খুলে নেওয়া হয়, নগদ সাড়ে চার লক্ষ টাকাও হাতিয়ে নেওয়া হয় বলে অভিযোগ। তাঁকেও মারধর করা হয় বলে পুলিশকে জানিয়েছেন আকবর। তাঁদের চিৎকারে পড়শিরা এসে থানায় খবর দেন। তাঁরাও পুলিশকে জানিয়েছেন, ওই সময়ে ব্যাঙ্কের দু’জনকে বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেছিলেন। ব্যাঙ্ক তা অস্বীকারও করেনি। কিন্তু পুলিশ বাউন্সার দলের পান্ডা-সহ সাত জনকে গ্রেফতার করলেও ব্যাঙ্কের কাউকে ধরা বা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়নি।
ইউবিআই গোড়াতেই স্বীকার করেছে, আকবরের নেওয়া ঋণ দীর্ঘদিন অনাদায়ী পড়ে থাকায় তাঁর সম্পত্তির দখল নিতে ‘রিকভারি এজেন্ট’ পাঠানো হয়েছিল। বাউন্সার দলের পান্ডা জিয়ারুল হকও পুলিশকে ব্যাঙ্কের চিঠি দেখিয়ে জানিয়েছেন, ‘স্যাম অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট’ নামে একটি সংস্থার কর্ণধার হিসেবে তিনি বাকিদের নিয়োগ করেছিলেন। ওই সংস্থার অফিস উত্তর ২৪ পরগনার দত্তপুকুরে জয়পুল মেঠোপাড়ায়। ধৃতেরাও সকলে ওই জেলারই। এলাকায় জিয়ারুলের বদনাম রয়েছে বলে স্থানীয় এক বিধায়ক পুলিশের কাছে দাবি করেছেন। তবে চেষ্টা করেও সংস্থার কারও সঙ্গে এ দিন যোগাযোগ করা যায়নি। অফিসের ফোন বেজে গিয়েছে।
বর্ধমান পুলিশ খোঁজ নিয়ে জেনেছে, সংস্থাটির বিরুদ্ধে আগেও জোর করে বেশ কিছু জমি ও সম্পত্তি দখলের অভিযোগ রয়েছে। কোথায়-কোথায় তা করা হয়েছে, কী-কী হাতিয়ে আনা হয়েছে, সে ব্যাপারে বিস্তারিত খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। আকবরের বাড়ি থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া গয়না-টাকা কোথায়, সেই খোঁজও চলছে। ধৃতদের আইনজীবী বিশ্বজিৎ দাস অবশ্য দাবি করেন, “ব্যাঙ্কের তরফে বাউন্সারদের জানানো হয়েছিল, জেলাশাসক এবং পুলিশ সুপারের অনুমতি নিয়েই ওই দম্পতিকে উচ্ছেদ করা হচ্ছে। বর্ধমান ও দুর্গাপুরের দুই অফিসারও তাদের সঙ্গে ছিলেন। বাউন্সারেরা যদি অপরাধ করে থাকে, তাঁরাও সমান ভাগীদার। কিন্তু পুলিশ তাঁদের ধরেও ছেড়ে দিয়েছে।”
বর্ধমান থানার আইসি দিলীপ গঙ্গোপাধ্যায় অবশ্য বলেন, “ওই ঘটনায় আমাদের কাছে যে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল, তাতে ব্যাঙ্কের অফিসারদের নাম দেওয়া হয়নি। যদি দেখা যায়, ওই দম্পতি ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে জবানবন্দিতে নির্দিষ্ট করে কারও নাম জানিয়েছেন, তা হলে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” বর্ধমান ও দুর্গাপুরের দুই ব্যাঙ্ক অফিসারের মোবাইল ফোনই এ দিন বন্ধ ছিল। ইউবিআই-এর সদর দফতরে যোগাযোগ করা হলেও কেউ কোনও মন্তব্য করতে চাননি।

পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.