|
|
|
|
কেন্দ্রের নামে ভুল, প্রশিক্ষণে এসে ফিরছেন শিক্ষকরা
নিজস্ব সংবাদদাতা • খড়্গপুর |
উচ্চমাধ্যমিকে অনুত্তীর্ণ ও ৫০ শতাংশের কম নম্বর পাওয়া প্রাথমিক শিক্ষকদের মানোন্নয়নের জন্য রবীন্দ্র মুক্ত বিদ্যালয়ের উদ্যোগে জেলার বিভিন্ন স্কুলে গড়া হয়েছে প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। কিন্তু রেজিস্ট্রেশন কার্ডে থাকা প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের নামেই রয়ে গিয়েছে গলদ।
কয়েকজন প্রাথমিক শিক্ষকের রেজিস্ট্রেশন কার্ডে প্রশিক্ষণ কেন্দ্র হিসেবে ‘ইন্দো কিশোরীলাল শিক্ষানিকেতন’ নামে একটি স্কুলের নাম রয়েছে। স্কুলটির ঠিকানা হিসেবে খড়্গপুরের পিনকোড দেওয়া হয়েছে। অথচ কেউই ওই নামে কোনও স্কুলের অস্তিত্ব খুঁজে পাননি।
রাজ্য শিক্ষা দফতরের নির্দেশিকা অনুযায়ী, যে সব প্রাথমিক শিক্ষক উচ্চ মাধ্যমিক উত্তীর্ণ নন এবং ২০০২ সালের পর নিযুক্ত যে সব শিক্ষকের উচ্চ মাধ্যমিকে ৫০ শতাংশের কম নম্বর রয়েছে তাঁদের ফের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসতে হবে। তার আগে নিতে হবে প্রশিক্ষণ। রবীন্দ্র মুক্ত বিদ্যালয়ই ওই শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ ও পরীক্ষার যাবতীয় দায়িত্ব সামলাবে। নির্দেশিকায় এই সমস্ত প্রক্রিয়া ২০১৫ সালের মার্চ মাসের মধ্যে সম্পন্ন করার কথা বলা হয়েছে। প্রশিক্ষণের জন্য শিক্ষকরা ইতিমধ্যেই ৬ হাজার টাকা দিয়ে অনলাইনে আবেদন করেন। তাঁদের মধ্যে অনেকেই রেজিস্ট্রেশন কার্ড পেয়েছেন, যেখানে কোন বিদ্যালয়ে তাঁদের স্টাডি সেন্টার হয়েছে তা বলা হয়েছে। |
এই স্কুলেই ভিড় জমাচ্ছেন শিক্ষকেরা।—নিজস্ব চিত্র।
|
এখানেই বিপাকে পড়েছেন জেলার কিছু শিক্ষক। তাঁদের অনেকের রেজিস্ট্রেশন কার্ডে প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের নাম লেখা রয়েছে ‘ইন্দো কিশোরীলাল শিক্ষানিকেতন’, যার ঠিকানা হিসেবে খড়্গপুর শহরের পিন কোড রয়েছে। অথচ ওই নামে খড়্গপুর শহরে কোনও স্কুলই নেই। অনেক শিক্ষকই রেজিস্ট্রেশন কার্ডে উল্লেখ থাকা প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের নামের সঙ্গে মিল দেখে খড়্গপুরের ইন্দার ‘কৃষ্ণলাল শিক্ষা নিকেতনে’ গিয়েও ফিরে এসেছেন। ইন্দা কৃষ্ণলাল শিক্ষানিকেতনের প্রধান শিক্ষক পার্থ ঘোষ বলেন, “আমার এখানে অনেকেই রেজিস্ট্রেশন কার্ড নিয়ে এসেছেন। তবে তাতে স্কুলের নাম ভুল রয়েছে। কয়েকজন পিওনও চিঠি নিয়ে এসেছিল, যাতে ওই ইন্দো কিশোরীলাল লেখা থাকায় চিঠিগুলি নিতে অস্বীকার করেছি।” তিনি আরও বলেন, “আমার বিদ্যালয়ে প্রশিক্ষণ কেন্দ্র হলে আমাদের কাছে নির্দেশিকা পাঠাতে হবে। আমরা নির্দেশিকা পাইনি। রবীন্দ্র মুক্ত বিদ্যালয় থেকে একদিন ফোন এসেছিল, তখন আমি রেজিস্ট্রেশন কার্ডে নাম পরিবর্তনের জন্য বলেছিলাম। কিন্তু কাজ হয়নি।”
বালিচক বালিকা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মনিউর রহমান খানের কথায়, “প্রশিক্ষণের জন্য গত জুন মাসে অনলাইনে আবেদন করেছিলাম। দিন সাতেক আগে অনলাইনেই একটি রেজিস্ট্রেশন কার্ড পাই। তবে তাতে প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের নাম ইন্দো কিশোরীলাল শিক্ষানিকেতন লেখা রয়েছে। ওই নামে কোনও স্কুল এখনও খুঁজে পাইনি। এতগুলো টাকা দিয়ে আবেদন করার পর এই অবস্থা হলে কী করব তাই ভাবছি।” একইভাবে ডেবরা আম্বাদিহি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক সুভাষ মাজি বলেন, “রেজিস্ট্রশন কার্ডে ইন্দো কিশোরীলাল শিক্ষানিকেতন বলে যে বিদ্যালয়ের নাম দেওয়া রয়েছে তা খুঁজে পাচ্ছি না, এখন কী করব তা নিয়ে ধোঁয়াশায় রয়েছি।”
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান স্বপন মুর্মু জানান, বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। এখান থেকে নাম পাঠানোর সময় হয়তো ভুল হয়ে গিয়েছে। শুধু খড়্গপুর নয় ঘাটালেও একটি বিদ্যালয়ের নাম ভুল রয়েছে বলে আমি রবীন্দ্র মুক্ত বিদ্যালয়ে জানিয়েছি। ওঁরা খুব শীঘ্রই তা ঠিক করে দেবেন। |
|
|
|
|
|