নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
সামনেই সাক্ষাৎ মৃত্যু! মাত্র ১০ মিটার দূরে।
চালকের কেবিন থেকেই চোখে পড়েছিল, ওভারহেড লাইন থেকে ২৫ হাজার ভোল্টের তার ছিঁড়ে ঝুলছে। সিদ্ধান্ত নিতে দেরি করেননি তিনি। আপৎকালীন ব্রেক কষে থামিয়ে দিয়েছিলেন ট্রেন।
চালকের এই সময়োচিত সিদ্ধান্তে রক্ষা পেল ভিড়ে ঠাসা ডাউন মেদিনীপুর লোকাল। সোমবার সকাল ৯টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটে টিকিয়াপাড়া কারশেডের কাছে। তার পরে প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে দক্ষিণ-পূর্ব শাখায় ট্রেন চলাচল বিপর্যস্ত হয়ে যায়। অফিসের ব্যস্ত সময়ে এই বিভ্রাটে নাকাল হন হাজার হাজার ট্রেনযাত্রী। বহু স্টেশনে ট্রেন দাঁড়িয়ে পড়ায় সেখান থেকে হাওড়ায় পৌছতে গিয়ে হিমশিম খেতে হয় অফিসাযাত্রী ও সাধারণ মানুষকে। কারণ পর্যাপ্ত বাস মেলেনি।
ঠিক কী ঘটেছিল?
দক্ষিণ-পূর্ব রেল সূত্রের খবর, সকালে টিকিয়াপাড়া স্টেশন থেকে কারশেডের দিকে এগোতেই ডাউন মেদিনীপুর লোকালের চালক বীরেন সরকার দেখেন, ওভারহেড বিদ্যুৎবাহী তার ছিঁড়ে লাইনের উপরে ঝুলছে। তার সঙ্গে ছোঁয়া লাগলে পরিস্থিতি কতটা ভয়াবহ হতে পারে, তা বুঝেই সঙ্গে সঙ্গে ব্রেক কষে ট্রেন দাঁড় করিয়ে দেন বীরেনবাবু। ঝাঁকুনি দিয়ে ট্রেন থেমে যায় ঝুলে থাকা তারের প্রায় ১০ মিটার আগে। হাওড়া স্টেশনের কন্ট্রোল রুমে পৌঁছতেই রেলের পদস্থ অফিসারেরা ঘটনাস্থলে ছুটে যান। ছেঁড়া তারে বিদ্যুৎ-সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়। দু’টি টাওয়ার ওয়াগনে করে ইঞ্জিনিয়ারেরা এসে মেরামতির কাজ শুরু করেন।
ডাউন লাইনে এই বিভ্রাটের জেরে ওই লাইনে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ট্রেন দাঁড়িয়ে যায় বিভিন্ন স্টেশনে। দক্ষিণ-পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সৌমিত্র মজুমদার বলেন, “ওই ঘটনার জন্য ১৩টি ট্রেন বিভিন্ন স্টেশনে আটকে যায়। বাতিল করতে হয় তিন জোড়া লোকাল। তিনটি লোকাল আন্দুল আর সাঁতরাগাছিতে থামিয়ে দেওয়া হয়। পরে পরিস্থিতি সামাল দিতে তিনটি বিশেষ লোকাল ট্রেন চালানো হয়।”
বেলা ১১টা নাগাদ ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, তখনও ছেঁড়া তার সারানোর কাজ চলছে।
যাত্রীরা নেমে এসে ভিড় করেছেন মেদিনীপুর লোকালের চালকের কেবিনের সামনে। সকলেই ধন্যবাদ জানাচ্ছেন চালককে। চালক বীরেনবাবু বলেন, “হাইভোল্টেজের তার ছিঁড়ে ঝুলছে দেখেই ট্রেনটা থামিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিই। ট্রেন ওই তার ছুঁলে মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটতে পারত।” |