জাতীয় সড়কের উপর বোমাবাজির ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে তিন জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। ধৃত উজ্জ্বল শেখ, কালু শেখ ও আলমাশ শেখের বাড়ি রামপুরহাট থানার বগটুই গ্রামে। রানিগঞ্জ-মোরগ্রাম ৬০ নম্বর জাতীয় সড়ক লাগোয়া বগটুই মোড়ের ব্যবসায়ী মহম্মদ বদরুদ্দোজার অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ ওই তিন জনকে রবিবার রাতেই ধরে। সোমবার তাদের রামপুরহাট আদালতে তোলা হয়। উজ্জ্বলের চার দিন পুলিশ হেফাজত হয়েছে, বাকিদের জেল হাজত হয়েছে।
রবিবার সন্ধ্যায় ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কের উপর বগটুই মোড়ে ওই বোমাবাজির ঘটনা ঘটে। রামপুরহাট থানার আইসি সুবীর বাগ বলেন, জমি নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে বিবাদ দীর্ঘদিনের। ওই বিবাদকে ঘিরে বোমাবাজির ঘটনা ঘটে। বোমাবাজির সময় মৎস্য মন্ত্রী তথা বোলপুরের বিধায়ক চন্দ্রনাথ সিংহ এবং জেলা সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরীর গাড়ি জাতীয় সড়ক দিয়ে (বগটুই মোড় হয়ে) মাড়গ্রাম থানার কালুহা গ্রামের দিকে যাচ্ছিল। প্রসঙ্গত, শনিবার সকালে কালুহা গ্রামের রাই সাগর পুকুর থেকে এলাকার যুবক গৌতম রায়ের(৪০) মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছিল। ঘটনার পরে গৌতমবাবুর পরিবার এবং জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব দাবি করে, এলাকার কংগ্রেস কর্মীরা তাঁকে খুন করেছে। এলাকার তৃণমূল কর্মীদের দাবি মতো চন্দ্রনাথবাবু ও বিকাশবাবু কালুহা গ্রামে রবিবার বিকেলে সভা করেন। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সেই সভায় যাওবার সময় ঘটনাচক্রে বগটুই মোড়ে বোমাবাজির ঘটনা ঘটে।
চন্দ্রনাথবাবু বলেন, “আমাদের গাড়ির আগে পাইলট গাড়ি ছিল। ওই গাড়ির সামনে একটি বোমা ফাটে। পরে আমার গাড়ির সামনেও একটি বোমা ফাটে। যারা বোমাবাজি করছিল তারা গলি রাস্তা দিয়ে পালিয়ে যায়।” তাঁর দাবি, “কালুহা গ্রামে যে যুবক খুন হয়েছে, ওই যুবক আমাদের দলের একজন সক্রিয় কর্মী ছিল। এলাকায় সিপিএম বলে কিছু নেই। মুরারইয়ের মতো রামপুরহাট ২ ব্লকে কংগ্রেস কর্মীরা এখন তৃণমূল করছে। সে জন্য কংগ্রেস নেতারা কালুহা’য় আমাদের কর্মীকে খুন করছে।” তৃণমূলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলেরও অভিযোগ, “কালুহা গ্রামে দলীয় কর্মী খুনের ঘটনার প্রতিবাদ সভায় মন্ত্রী ও জেলা সভাধিপতি যাচ্ছেন দেখে কংগ্রেস কর্মীরা বোমাবাজি করেছে। আমি ঘটনার বিবরণ মুখ্যমন্ত্রীকে এসএমএস করে পাঠিয়েছি এবং পুলিশকেও বলা হয়েছে।” বিকাশবাবু ও তৃণমূলের জেলা চেয়ারম্যান আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য বলেন, “জাতীয় সড়কের উপর বোমাবাজি দুষ্কৃতীদের কাজ। পুলিশকে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।” জেলা পুলিশ সুপার সি সুধাকর বলেন, “মন্ত্রী রবিবার রাতেই আমাকে ঘটনার কথা মৌখিক ভাবে জানিয়েছিলেন। লিখিত অভিযোগ দিতে বলা হয়েছে। বোমাবাজির ঘটনায় ৩ জনকে ধরা হয়েছে।” কী ঘটনা ঘটেছে জানা নেই বলে জানিয়েছেন, কংগ্রেসের জেলা সভাপতি সৈয়দ সিরাজ জিম্মি। তবে কংগ্রেসের জেলা সাধারণ সম্পাদক তথা আইএনটিউসির জেলা সভাপতি মিল্টন রশিদ দাবি করেছেন, “এই ঘটনার সঙ্গে আমাদের কেউ জড়িত নয়। তৃণমূলেরই একজন জড়িত রয়েছে।” |