একের পর এক মন্দিরে হানা দিয়ে গয়নাগাটি থেকে বাসনপত্র লুঠ করল দুষ্কৃতীরা। বর্ধমানের জামালপুর থানার জৌগ্রামে শনিবার রাতভর চোরেরা এই দুষ্কর্ম চালায়। পুলিশ জানিয়েছে, মোট আটটি মন্দিরে চুরি হয়েছে। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, জৌগ্রামে রাধাকান্ত মন্দির, জলেশ্বর মন্দির, মুক্তকেশী মন্দির ছাড়াও কয়েকটি পারিবারিক মন্দিরে চুরির ঘটনাগুলি ঘটেছে। রবিবার সকালে এলাকার মানুষজনের নজরে পড়ে, মন্দিরের দরজা-তালা ভাঙা। ভিতরের জিনিসপত্র উধাও। এক এক করে নানা মন্দিরে চুরির কথা জানা যায়। খবর ছড়িয়ে পড়তে মন্দিরগুলির সামনে জড়ো হন এলাকার মানুষজন। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, চুরি যাওয়া জিনিসপত্রের তালিকায় রয়েছে, দেববেদীর সোনার গয়না, চোখ, রুপোর সিংহাসন, পিতলের বিগ্রহ, কাঁসা ও তামার বাসনপত্র, ঘণ্টা, ঘট-সহ নানা সামগ্রী।
রাধাকান্ত মন্দিরের সেবায়েত জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায় সোমবার বলেন, “এলাকার মন্দিরগুলিতে আগে ছোটখাট চুরি হলেও এত বড় ধরনের লুঠপাট আগে কখনও হয়নি। ঘটনার পর থেকে এলাকার মানুষ আতঙ্কিত।” জৌগ্রামের বাসিন্দারা জানান, এমন ঘটনায় তাঁরা ক্ষুব্ধ। অবিলম্বে পুলিশ লুঠপাটের কিনারা করুক, দাবি করেছেন তাঁরা।
বর্ধমান জেলায় একের পর এক মন্দিরে চুরির ঘটনা অবশ্য আগেও ঘটেছে। সম্প্রতি কেতুগ্রামের বেশ কয়েকটি এলাকায় মন্দিরের তালা ভেঙে বিগ্রহ ও নানা সামগ্রী চুরির ঘটনা ঘটেছে পরপর। শেষে কেতুগ্রাম থানা মূর্তি চুরির তদন্তে সিআইডি-র দ্বারস্থ হয়।
জৌগ্রামের ঘটনায় অবশ্য এখনও পুলিশ অন্ধকারে। জামালপুর থানার তরফে জানানো হয়, শনিবার গভীর রাতে চুরি হলেও অভিযোগ মিলেছে অনেকক্ষণ পরে। সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ তদন্তে নেমেছে। বর্ধমানের এসডিপিও অম্লানকুসুম ঘোষ বলেন, “এলাকায় এক সঙ্গে পরপর কয়েকটি মন্দিরে চুরির ঘটনায় আমরাও বিস্মিত। তবে যে ভাবে এই চুরির ঘটনা ঘটেছে, তা থেকে পরিষ্কার, চোরেদের কাছে রীতিমতো খবরাখবর ছিল, কোথায় কোন মন্দিরে দামি কী জিনিসপত্র রয়েছে।” তিনি জানান, গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। অভিযুক্তদের খোঁজ চলছে। এলাকায় মানুষজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানার চেষ্টা হচ্ছে, তাঁরা ঘটনার আগে-পরে সন্দেহজনক কাউকে দেখেছিলেন কি না। |