বালি তোলাতেই বসে গিয়েছে জরদার নদীগর্ভ
থেচ্ছ ভাবে বালি উত্তোলনের ফলে জরদা নদীর ‘ইকো সিস্টেম’ অথবা বাস্তুতন্ত্র ভেঙে পড়ায় বিরল ‘নিক ফলস’ বা জলপ্রপাত সৃষ্টি হয়েছে বলে জানালেন বিশেষজ্ঞেরা। শুক্রবার ময়নাগুড়ি কলেজের ভূগোল বিভাগের অনুসন্ধানে ওই তথ্য উঠে এসেছে। গবেষকদের আশঙ্কা, দ্রুত বালি উত্তোলন বন্ধ করে নদী সংরক্ষণের ব্যবস্থা না নেওয়া হলে, আরও বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে নদীবক্ষ তলিয়ে যেতে পারে। ওই কলেজের ভূগোল বিভাগের প্রধান মধুসূদন কর্মকার বলেন, “যে বালির স্তর চাদরের মতো নদীবক্ষকে ঢেকে রেখে ইকো সিস্টেম রক্ষা করে, সেটা এখানে পুরোপুরি বিপর্যস্ত। বালি উত্তোলন বন্ধ না হলে পরিস্থিতি ভয়াবহ হবে।”
জরদা নদীতে পরিদর্শনে ময়নাগুড়ি কলেজের
ভূগোল বিভাগের প্রতিনিধিরা। শুক্রবার।—নিজস্ব চিত্র।
ময়নাগুড়ির জল্পেশ মন্দির সংলগ্ন জরদা নদী গর্ভে ওই বিপর্যয় বেশ কিছু দিন থেকে চলছিল বলে গবেষকরা জানান। ইতিমধ্যে জল্পেশ মোড় সংলগ্ন এলাকা থেকে মন্দিরের দিকে এক কিলোমিটার এলাকা সাত ফুট গভীরে তলিয়েছে। এ দিন গবেষকরা ‘গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেমের’ সাহায্যে জলপ্রপাতের অবস্থান নির্ণয় করেন। তাঁরা জানান, ২৬ ডিগ্রি ৩১ মিনিট উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৮ ডিগ্রি ৫০ মিনিট পূর্ব দ্রাঘিমাংশ রেখায় ‘নিক ফলস’ অবস্থিত। ক্রমশ সেটি পিছিয়ে ময়নাগুড়ি শহর সংলগ্ন এলাকার দিকে যাবে। তাই আপাতত ভাঙন বন্ধ হওয়ায় কোনও সম্ভাবনা নেই। উত্তরবঙ্গের অন্য আরও নদী থেকে বালি তোলা হলেও, সেখানে কঠিন শিলাস্তর থাকায় নদীগর্ভ তলিয়ে যাওয়ার ঘটনা দেখা যায় না বলে গবেষকদের দাবি। মধুসূদনবাবু বলেন, “জরদা নদী গর্ভে কঠিন শিলাস্তর নেই। এখানে বালির আস্তরণ নদীর প্রাণ রক্ষার কাজ করছে। সেটা তুলে নেওয়ার ফলে বিপর্যয় শুরু হয়েছে।”
এ দিনও জলপ্রপাত দেখার জন্য ভিড় ছিল চোখে পড়া মতো। নদীর চরে মেলার মতো দোকান বসেছে। গবেষকরা এ দিন দেখেন, নদীগর্ভের শুকিয়ে যাওয়া বিরাট এলাকার মাটিতে ফাটল দেখা দিয়েছে। তাঁদের আশঙ্কা কয়েক দিনের মধ্যে ওই এলাকা ভেঙে তলিয়ে যাওয়া খাতে মিশতে পারে। ময়নাগুড়ির বিডিও সংহিতা তলাপাত্র জানান, “দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”
সম্প্রতি এক দিন আচমকা জরদা নদীর গর্জন শুনে লোকজন চমকে ওঠে। পরে খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, মাঝ নদীর অন্তত ৫০ ফুট এলাকা বসে গভীর খাদ তৈরি হয়েছে। তার পর থেকে প্রতিদিন ক্রমশ নদীর খাত তলিয়ে যাওয়ার এলাকা বাড়ছে। এখন তা এক কিলোমিটার পর্যন্ত বেড়েছে। মনে হচ্ছে মাঝ নদীতে কেউ নালা কেটেছে। ভূ-বিদ্যার গবেষকরা জানান, মালভূমি অঞ্চলের নদীতে এমন কয়েকটি ঘটনা দেখা গেলেও উত্তরবঙ্গে তা বিরল।

পুরনো খবর:





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.