দিনের শেষে মিচেল জনসনের বলের গতি আর মুভমেন্ট দেখে স্কাই স্পোর্টসের কমেন্ট্রি বক্সে থাকা শেন ওয়ার্ন বলেই ফেললেন, “মনে হচ্ছে কালই এই টেস্টের ফয়সলা হয়ে যাবে।” তখন জনসনের কম গতির বলটাও দেড়শো কিলোমিটারের একটু কম।
জনসনের দশ নম্বর বলেই যা ধাক্কা খেলেন অ্যালিস্টার কুক, তা দেখে হতভম্ব হওয়া ছাড়া উপায়ও ছিল না। তীব্র গতিতে ঢুকে আসা বল কুকের ব্যাটের বাইরের কানা ছুঁয়ে যখন অফস্টাম্প উড়িয়ে নিয়ে গেল, তখন ইংল্যান্ডের মোট সংগ্রহ মাত্র ৯। মাইকেল কারবেরি (২০) ও জো রুট (৯) বাকি কুড়ি ওভার সামলে দিলেও স্কোরবোর্ডে ২৬-এর বেশি যোগ করতে পারেননি। কে বলবে, খানিকক্ষণ আগে এই উইকেটেই সেঞ্চুরি করে উঠেছেন মাইকেল ক্লার্ক (১৪৮) ও ব্র্যাড হাডিন (১১৮)! তাঁদের ডাবল সেঞ্চুরির পার্টনারশিপই অস্ট্রেলিয়ার ৫৭০-এর ইনিংসের নিউক্লিয়াস। |
ক্লার্কের ব্যাটে ধামাকা। সেঞ্চুরির পথে। |
অ্যাডিলেডে ষষ্ঠ উইকেট জুটি কখনও এত রানের পার্টনারশিপ খেলেনি। কিন্তু তাতে ইংরেজদের অবদানও রয়েছে। প্রথম দিন যেমন মিড উইকেটে ক্লার্কের ক্যাচ ছেড়েছিলেন রুট, হাডিনের ক্যাচ ফেলেছিলেন কারবেরি, দ্বিতীয় দিনেও তাঁদের জীবন দিলেন ইংরেজরা। হাডিন ৫১ রানে কট বিহাইন্ড ছিলেন, কিন্তু তা ছিল বেন স্টোকসের নো বলে। শর্ট লেগে ইয়ান বেল যখন ক্লার্কের দেওয়া কঠিন ক্যাচ ফেলেন, তখন অস্ট্রেলীয় অধিনায়ক তাঁর ২৬তম সেঞ্চুরি থেকে ন’রান দূরে। পয়া অ্যাডিলেডে ন’টি টেস্টের ছ’টিতেই সেঞ্চুরি ক্লার্কের। অন্য দিকে হাডিনের চতুর্থ। প্রথম দিন ২৫৭-৫ হয়ে যাওয়ার পরে তাঁরাই টিমকে সাড়ে চারশো পার করিয়ে দেন।
হালফিলের অ্যাসেজ-রীতি মেনে এ দিনও আবার ক্রিকেটারদের মধ্যে একপ্রস্ত তর্ক-বিতর্ক বেধে গেল। জীবনের প্রথম টেস্টে নামা বেন স্টোকসও যে স্লেজিং রপ্ত করে ফেলেছেন, তা টের পেলেন ক্লার্করা। |
স্টোকস-হাডিন ঝগড়া থামাতে নামতে হল আম্পায়ারদের। তাতে স্লেজিং থামলেও অবশ্য হাডিনদের জেদ একটুও কমেনি। প্রয়াত নেলসন ম্যান্ডেলার জন্য এ দিন দু’দলের ক্রিকেটাররা কালো আর্ম-ব্যান্ড পরে মাঠে নামলে কী হবে, অ্যাসেজ-যুদ্ধের আগুন তাতে কিছুই কমেনি। শেন ওয়ার্ন বলছেন, “জনসনদের ইংরেজরা সামলাতে পারবে কি না, সন্দেহ আছে। তেমন সম্ভাবনা দেখছি না।” নাসের হুসেনের বক্তব্য, “পিটারসেন এমন দুঃসময়ে দায়িত্ব না নিতে পারলে আর কবে নেবে?” |