কোনও রকম ‘নাশকতা’র উদ্দেশ্য নিয়ে শ্রীরামপুরের বাসিন্দা জ্যোতির্ময় নন্দী মহাকরণে যাননি বলে দাবি করল তাঁর পরিবার। জ্যোতির্ময়কে ‘নির্দোষ’ দাবি করে তাঁর পরিবারের বক্তব্য, মহাকরণে স্বরাষ্ট্র দফতরের প্রকাশনা বিভাগের বই বাঁচাতে সরকারি কর্তব্যের তাগিতেই শুক্রবার তিনি সেখানে যান। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশকর্তারাও জেনেছেন, মহাকরণের পাশাপাশি আরও কিছু সরকারি ভবন ও দফতরে সরকারি নথি রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করেন জ্যোতির্ময়।
মহাকরণে স্বরাষ্ট্র দফতরের প্রকাশনা বিভাগে কেরোসিন ছড়ানোর ঘটনায় শনিবার ধৃত ওই যুবক আপাতত পুলিশ হেফাজতে রয়েছেন। যদিও প্রকাশনা বিভাগের রেজিস্ট্রার বিস্ময় রায় সোমবার বলেন, “পোকায় কাটার হাত থেকে বই বাঁচাতে প্রতি শুক্রবারই কেরোসিন এবং কীটনাশক মিশিয়ে স্প্রে করা হয়। সে দিনও তাই করা হয়েছিল। জ্যোতির্ময়ের সঙ্গে এক সরকারি কর্মীও ছিলেন। কোথাও কোনও আগুন লাগেনি। কেরোসিনের গন্ধ বেরিয়েছিল মাত্র।” মহাকরণ সূত্রের খবর, গত জুন মাসে ভবানী ভবন থেকে মহাকরণের চার তলায় স্বরাষ্ট্র দফতরের প্রকাশনা বিভাগ উঠে আসে। প্রায় ৪৫ হাজার বই রয়েছে সেখানে। এই সমস্ত বই গ্রামাঞ্চলের গ্রন্থাগার এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আবেদনের ভিত্তিতে দেওয়া হয়। এ রাজ্য থেকে যত ভাষায় বই প্রকাশিত হয়, সরকারি নিয়ম অনুযায়ী প্রতিটি প্রকাশনার তিনটি করে বই ওই দফতরে জমা থাকে। সেই সব বই দেখাশোনার দায়িত্ব প্রকাশনা বিভাগের সাত কর্মীর উপর। পুলিশ জানতে পেরেছে, বিভিন্ন সরকারি দফতর ও হাসপাতালে দীর্ঘদিন ধরেই নথিপত্র রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করেন জ্যোতির্ময়। এ দিন তাঁর স্ত্রী অপর্ণাদেবী বলেন, “স্বামী গত সাত বছর ধরে সরকারের বিভিন্ন দফতরে নথি বাঁচানোর কাজ করছেন। শুধু প্রকাশনা বিভাগ নয়, যাদবপুর টিবি হাসপাতাল, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ-সহ নানা জায়গায় এই কাজ করেন। ওঁর অসৎ উদ্দেশ্য ছিল না। বড় ভুল বোঝাবুঝি হয়ে গিয়েছে।” এ দিনই ধৃত যুবকের দিদি সুমিতা দাস কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে যান। সেখান থেকে তাঁকে কলকাতা পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলা হয়। তিনি কলকাতার পুলিশ কমিশনার সুরজিৎ কর পুরকায়স্থের সঙ্গে দেখা করেন। লালবাজারের এক শীর্ষ কর্তা বলেন, “তদন্ত চলছে। সব দিক খোলা রেখেই বিষয়টি দেখা হচ্ছে।”
|