দু’জনের সামনেই প্রায় একই পরিস্থিতি। চোটের জন্য তাঁদের আইডল টিমে নেই। কাঁধে টিমকে জেতানোর অতিরিক্ত দায়িত্ব। তাতে একজন ক্রমশ জ্বলে উঠছেন আর একজনের ফর্ম প্রতি ম্যাচেই পড়তির দিকে। গ্যারেথ বেল আর নেইমার।
লিও মেসির অভাব পূরণ করতে ফের ব্যর্থ ‘সাও পাওলোর ওয়ান্ডার কিড’। এ বার লা লিগায় আটলেটিক বিলবাওয়ের বিরুদ্ধে। ড্রিবল করতে গিয়েই রবিবারের ম্যাচে বারবার পিছলে পড়ছিলেন নেইমার। শেষ পর্যন্ত বুট পাল্টেই নিলেন প্রথমার্ধে। তাতেও লাভ হল কোথায়! কয়েক বার মার্কারের কড়া ট্যাকলে যন্ত্রণার অভিব্যক্তি ম্যাচের পরও তাঁর চেহারা থেকে মুছল না। বরং ছড়িয়ে পড়ল গোটা টিমে। ০-১ হারের যন্ত্রণা হয়ে। |
রবিবারের নেইমার। ছবি: এএফপি। |
কাতালানদের প্রতিদ্বন্দ্বী ক্লাবে একই রকম পরিস্থিতিতে রোনাল্ডোর অনুপস্থিতি মালুমই পড়তে দিচ্ছেন না গ্যারেথ বেল। বার্সা সমর্থকরা আশায় ছিলেন এই ম্যাচে নেইমার বুঝিয়ে দেবেন ‘আমিও কম যাই না’। কিন্তু দেখা গেল উল্টো ছবি। মেসির সঙ্গে সঙ্গে ‘বার্সেলোনার বোমা’-র বিস্ফোরণের মশলাটাও উধাও। ঘরোয়া লিগে ১৪ ম্যাচ পর হারল বার্সা। কিন্তু বেল যেখানে গোলের মালা পরিয়ে দিচ্ছেন, নেইমার কেন বারবার ব্যর্থ? বিশেষজ্ঞদের মতে বেলের দুরন্ত ফর্মের পিছনে ফিটনেস ফিরে পাওয়া বড় কারণ। প্রাক্ মরসুমে ঠিকঠাক প্রস্তুতির অভাব আর স্পেনে নতুন পরিবেশে মানিয়ে নেওয়ার ব্যাপারটা দ্রুত কাটিয়ে উঠেছেন ওয়েলস তারকা। আর নেইমার? স্প্যানিশ মিডিয়ার খবর, আমস্টারডামে হারের পরই টিমের প্লেয়ারদের গা-ছাড়া ভাবে বেজায় চটে গিয়েছিলেন টাটা মার্টিনো। ম্যাচের পরেও মার্টিনোর গরগরে রাগটা স্পষ্ট বোঝা গিয়েছে যখন বলছিলেন, “ব্যক্তিগত দক্ষতার দিক থেকেও আয়াখস আমাদের ছাপিয়ে গিয়েছে।” প্রশ্ন উঠেছে, নেইমারের ব্যর্থতাকেই কি ইঙ্গিত করেছিলেন কোচ?
অবশ্য চোট-আঘাতের সমস্যা সান মেনসেও পিছু ছাড়েনি স্প্যানিশ ক্লাবের। মেসি ছাড়াও চোটের জন্য ছিলেন না গোলকিপার ভিক্টর ভালদেস, ডিফেন্ডার দানি আলভেস, কার্লোস পুওল আর ইওর্দি আলবা। তা-ও বার্সা যা সুযোগ পেয়েছিল ম্যাচে তা কাজে লাগাতে পারলে অনায়াসে জেতার কথা। সুযোগ ফস্কানোতেও এক নম্বরে নেইমার। ১২ মিনিটে ব্রাজিলের তারকার শট ঠেকান বিলবাও গোলকিপার গোর্কা ইরাইজোজ। ৫০ মিনিটে ফাব্রেগাসের পাস থেকে তাঁর শট ফের লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। গোলের সুযোগ ফস্কানোর হতাশায় মাথা গরম করে হলুদ কার্ডও দেখেন নেইমার। ৫৯ মিনিটে ফের বাইরে মারেন ফ্রি-কিক। শেষ পর্যন্ত ৭০ মিনিটে বিলবাওয়ের ইকার মুনিয়াইনের গোলেও পাল্টা জ্বলে উঠতে পারেননি ‘ব্রাজিলের বোমা’।
ম্যাচের পর হতাশ ইনিয়েস্তাও বলছেন, “একটা মরসুমে হার আসতেই পারে। তবে আয়াখসের সঙ্গে এই ম্যাচের হারের তুলনা করাটা ঠিক হবে না। প্রথমার্ধটা ভালই খেলেছি।”
ঘুরিয়ে কি নেইমারের ব্যর্থতাকেই আড়াল করলেন বার্সা মিডফিল্ডার?
|
দুই তরুণ তারকার মরসুম এখন পর্যন্ত |
গ্যারেথ বেল
১৩ ম্যাচে ৯ গোল। মাঠে ছিলেন ৮৮০ মিনিট। গোলের পাস ৬। হ্যাটট্রিক ১। হলুদ কার্ড ১। রোনাল্ডো ছাড়া ২ ম্যাচে গোল ৪। |
নেইমার
১৯ ম্যাচে ৫ গোল। মাঠে ছিলেন ১০০৫ মিনিট। গোলের পাস ৯। হলুদ কার্ড ৩। মেসি ছাড়া ৩ ম্যাচে কোনও গোল নেই। |
|
পরের ম্যাচেই ফিরছি: রোনাল্ডো |
২০১২-’১৩ মরসুমে স্প্যানিশ সংবাদপত্র মার্কা-র বিচারে লা লিগার বর্ষসেরা প্লেয়ার নির্বাচিত ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো আলফ্রেদো দি’স্তেফানো ট্রফি পেলেন। চোটের জন্য রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে গত দু’ম্যাচে নামতে না পারলেও টানা দ্বিতীয় বার এই পুরস্কার জয়ের মঞ্চে রিয়াল মাদ্রিদ তারকা পরের ম্যাচেই টিমে ফেরার কথা বলেন। একই অনুষ্ঠানে লা লিগার সর্বোচ্চ গোলদাতার জন্য পিচিচি পুরস্কার পান লিও মেসি। আর বর্ষসেরা ফুটবল ম্যানেজারের পুরস্কার জেতেন প্রাক্তন বার্সা কোচ টিটো ভিলানোভা। তবে দু’জনেই কেউই পুরস্কার নিতে হাজির ছিলেন না। |