মাঠের ভেতর অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটারদের স্লেজিং! আর মাঠের বাইরে অস্ট্রেলীয় মিডিয়ার পাপারাৎজি সদৃশ কভারেজ! ডনের দেশে চলতি অ্যাসেজ সিরিজে ইংল্যান্ড দলের যেন জোড়া ফাঁসে শ্বাসরোধ হওয়ার উপক্রম!
মাঠের বাইরেও রেহাই নেই। ব্রিসবেনে প্রথম টেস্টে বিশ্রী হারের পর অ্যাডিলেডে কুক-বাহিনী দ্বিতীয় পরীক্ষায় নামছে বৃহস্পতিবার। তার আগে সপ্তাহান্তে দু’দিনের একটা হালকা ট্যুর ম্যাচে ইংল্যান্ড বিশ্রাম দিয়েছিল দলের ব্যাটিং-বোলিংয়ের দুই স্তম্ভ কেভিন পিটারসেন আর স্টুয়ার্ট ব্রড-কে। ফলে ঝাড়া হাত-পা দুই ইংরেজ ক্রিকেটার রবিবার রাতে স্থানীয় ‘জিভাগো’ ক্লাবে গিয়েছিলেন। কিন্তু অজি মিডিয়ার ‘আবিষ্কার’ কারি স্ট্রিটের সেই নৈশালয়ে পিটারসেন-ব্রড দেদার মদ্যপানই শুধু করেননি, তাঁদের ওই নৈশভ্রমণ সম্পর্কে ইংল্যান্ড টিম ম্যানেজমেন্ট কতটা ওয়াকিবহাল ছিল সেটাও সন্দেহের ঊর্ধ্বে নয়! সোজা কথা, অ্যাডিলেড টেস্টের দিনকয়েক মাত্র আগে ইংল্যান্ড শিবির পিটারসেন-ব্রডের নাইট ক্লাব অভিযান নিয়ে চাপে। |
নাইটক্লাবের সামনে পিটারসেন-ব্রডদের এই ছবিই প্রকাশিত হয় স্থানীয় কাগজের প্রথম পাতায়। |
ব্রিসবেনে ব্রড প্রথম ইনিংসে দুর্দান্ত পেস বোলিং করলেও পিটারসেনের দু’ইনিংসে সংগ্রহ ছিল ১৮ আর ২৬। এই দু’জনের সঙ্গে ‘জিভাগো’-তে তৃতীয় ইংরেজ প্লেয়ার জনি বেয়ারস্টো-কেও দেখা গিয়েছে। যদিও ক্লাবের মুখপাত্রের বর্ণনা অনুযায়ী, পিটারসেনরা রবিবার রাতের বেশির ভাগটা ‘আনন্দ’ করলেও তিন জনই ‘দারুণ বন্ধুত্বপূর্ণ মেজাজে’ ছিলেন। উপস্থিত অন্যরা যে চেয়েছে তার সঙ্গেই ওই তিন ইংরেজ ক্রিকেটার ছবি তুলেছেন। সই দিয়েছেন। তবে এক মদ্যপানকারী বলেছেন, “সে সব তো রাত পৌনে একটা পর্যন্ত হয়েছে। তার পর রাত সাড়ে তিনটে অবধি তিন ইংরেজ ক্রিকেটার ওখানে কী করছিল?”
গোটা ঘটনায় ইংল্যান্ড দলের পরিচালন সমিতির এক মুখপাত্র অবশ্য যথেষ্ট প্রাপ্তবয়স্ক মনোভাব দেখিয়েছেন। তাঁর কথায়, “কেপি-রা টিমের কোনও নিয়ম লঙ্ঘন করেনি। ওরা ট্যুর ম্যাচে ছিল না। নিজেদের ইচ্ছে মতো আনন্দ করার ব্যাপারে ওদের উপর কোনও নিষেধাজ্ঞা ছিল না। তা ছাড়া ওরা প্রত্যেকেই প্রাপ্তবয়স্ক।” মুখপাত্রটি আরও জানাচ্ছেন, ইংরেজ ক্রিকেটারদের বউ এবং বান্ধবীরা পরের সপ্তাহে পারথে উপস্থিত হবেন। তার আগে পিটারসেনদের কঠিন সিরিজে বউদের সঙ্গও পাওয়া হচ্ছে না।
কিন্তু এ সব ব্যাখ্যাতেও অস্ট্রেলীয় মিডিয়া চুপ থাকার বান্দা নয়। পিটারসেন-ব্রডের রবিবার রাতে বার-এ মদ্যপান করতে যাওয়াকে স্থানীয় অস্ট্রেলীয় সংবাদপত্র ‘অ্যাডভার্টাইজার’ প্রথম পাতায় ছবি-সহ হেডিং করেছে, ‘ইংল্যান্ডের অ্যাসেজ-খলনায়ক কেপি আর ব্রড নেটে ‘হিট’ করার বদলে যাঁরা বার-এ ‘হিট’ করেছেন!’ অ্যাডিলেডে পৌঁছনোর আগেই পিটারসেন খুব উৎসাহ-ব্যঞ্জক টুইট করেছিলেন। ‘জিভাগো-পর্বে’র পর তিনি কী করেন সেটা দেখার। |