ভারত-বধে গতিই দক্ষিণ আফ্রিকার প্রধান অস্ত্র, হুঁশিয়ারি দিয়ে রাখলেন সে দেশের ওয়ান ডে টিমের ক্যাপ্টেন এবি ডে’ভিলিয়ার্স। এবং ওয়ান্ডারার্সে প্রথম ম্যাচেই যে তা টের পেতে চলেছেন ভারতীয়রা, তেমনই ইঙ্গিত সেখানকার কিউরেটরের।
আর সোমবার জোহানেসবার্গে নেমে মহেন্দ্র সিংহ ধোনি বলে দিলেন, ফাস্ট উইকেট নিয়ে তিনি চিন্তিত নন। “একটা উত্তেজক সিরিজ হতে চলেছে। আসলে এখানকার উইকেটে ফাস্ট বোলারদের জন্য সব সময় কিছু না কিছু থাকে। আবার পাশাপাশি বলটা ব্যাটে আসে বলে ব্যাটসম্যানদেরও স্ট্রোক খেলতে সমস্যা হয় না।”
ইদানীং দেখা যাচ্ছে সাংবাদিক সম্মেলনে ধোনি প্রায়ই খোঁচা দিয়ে কথা বলে চলেছেন। দক্ষিণ আফ্রিকায় নেমেও তার ব্যতিক্রম হল না। প্রশ্ন ছিল, দু’দেশের বোর্ডের সম্পর্ক ভাল জায়গায় নেই, যার জেরে সিরিজটাই ছোট হয়ে গেল। আপনার কী বক্তব্য? “ক’টা ম্যাচ আমাদের খেলতে হবে, তা নিয়ে মাথা ঘামাই না,” বলে ধোনির বাউন্সার, “আমার মনে হয় প্রশাসকদের মধ্যে একটা ম্যাচ করলে ভাল হয়। তা হলে সেটায় ওরা একে অন্যের উপর ঝাঁপাতে পারবে।” |
প্রশাসকদের মধ্যে লড়াই কেমন হবে, সেটা জানা না গেলেও এটা বলাই যায় যে ওয়ান ডে সিরিজের প্রথম ম্যাচে লড়াইটাই হবে দুই দলের পেসারদের মধ্যে। সেটা বলছেন ওয়ান্ডারার্সের প্রধান কিউরেটর ক্রিস স্কট। এখানেই বৃহস্পতিবার নামবেন ধোনিরা। প্রথম টেস্টও এখানেই। ধোনিদের জো’বার্গ পৌঁছে যাওয়ার দিনই ওয়ান্ডারার্স পিচ নিয়ে হুঁশিয়ারি দিয়ে রাখলেন স্কট, “পেসাররা চাইলে বলে বলে মাথার উপর বল তুলতে পারে। এই উইকেটে গতির লড়াই দেখা যাবে। আর একটু অসাবধান হলেই ব্যাটসম্যানদের সর্বনাশ।” তাঁর সহকারী এডওয়ার্ড নেটস-ও মনে করাচ্ছেন, “এ বছর মার্চে ওয়ান্ডারার্সে যে শেষ ওয়ান ডে হয়, তাতে ১৫টির মধ্যে ১২টি উইকেটই পেসারদের। রানও হয়েছিল তিনশোর উপর।”
দক্ষিণ আফ্রিকার ওয়ান ডে দলের অধিনায়কও ওয়ান্ডারার্সের উইকেটের এই চরিত্রে বেশ খুশি। এ বছর ওয়ান ডে ক্রিকেটে সবচেয়ে বেশি রান পাওয়া তিন ব্যাটসম্যানই যে ভারতীয়, এই খবর জানা সত্ত্বেও ডেভিলিয়ার্স বলেছেন, “ওদের নিজেদের দেশে অন্য রকম পরিবেশ থাকে। মাঠ ছোট হয়। নতুন বল তেমন বিষাক্ত হয়ে উঠতে পারে না। আমাদের এখানে নতুন বলকেই বিষাক্ত করে তুলতে হবে আমাদের।”
তবে এমন উইকেটে যে ভারতীয় ব্যাটসম্যানরাই শুধু চাপে পড়বে, এমন সম্ভাবনা দেখছেন না ডোনাল্ড। উল্টে ভারতীয় পেসাররাও কালিসদের চাপে ফেলে দিতে পারেন, এমন আশঙ্কাই করছেন ডোনাল্ড। মহম্মদ শামিকে তো একটু বেশিই নম্বর দিচ্ছেন তিনি। |
জোহানেসবার্গের বিমান ধরার আগে টিম ইন্ডিয়া। সোমবার। ছবি: পিটিআই। |
দক্ষিণ আফ্রিকা রওনা হওয়ার আগে ধোনি যেমন বলে গিয়েছেন, আগুনের জবাব আগুনেই দিতে চান, ডোনাল্ডের ধারণাও ব্যাপারটা তাই হবে। প্রাক্তন পেসার মনে করেন, ভারত এ বার যে দল নিয়ে গিয়েছে, তারা দক্ষিণ আফ্রিকাকে ছেড়ে কথা বলবে না। ডোনাল্ড বলেন, “ভারত এখন আর সে রকম দল নেই যে এখানকার উইকেটে কুঁকড়ে যাবে। ওদের তরুণ পেস ব্রিগেড যা বল করছে, তাতে এমন উইকেটে ওরাও পাল্টা মার দেওয়ার ক্ষমতা রাখে। ওদের মধ্যে সেই খুনে প্রবৃত্তিটা আছে। বিশেষ করে মহম্মদ শামি নামের ছেলেটা তো খুবই প্রতিশ্রুতিমান। ওর বোলিং মনে রাখার মতো। টাফ গাই। সুইংটা দারুণ। আর ভুবনেশ্বর কুমার তো দু’দিকেই রিভার্স সুইং করতে পারে। উইকেটের বাউন্স কাজে লাগাতে পারলে ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারে ওরা দুজনই।” ভারতীয় ব্যাটিং সম্পর্কেও যথেষ্ট উচ্চ ধারণা ডোনাল্ডের। বললেন, “বিরাট কোহলি যা ব্যাট করছে, তাতে তো মনে হচ্ছে সচিনের জায়গাটা ও-ই নেবে।” সব মিলিয়ে ডোনাল্ডের ধারণা, “ভারতকে এই সিরিজে আন্ডারডগ ভাবলে সেটা ভুল করা হবে।”
|