সি কে-তে অবনমন, রঞ্জিতে ঘরের শত্রু
বঙ্গ ক্রিকেটে এখন লজ্জা আর টেনশন
কটা টিম সোমবারের পর সর্বভারতীয় টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে যাওয়া শুধু নয়, সোজাসুজি অবনমনের লজ্জায় নিমজ্জিত।
অন্য টিমটা সোমবারের পর রঞ্জি ট্রফিতে এক আশ্চর্য প্রতিদ্বন্দ্বিতার সম্মুখীন। কোয়ার্টার ফাইনালের স্বপ্ন যদি দেখতে হয় তা হলে দেখতে হবে এক বাঙালির ‘প্রতিবন্ধকতা’-কে চূর্ণ করে। যাঁর নাম কিনা আবার বছরখানেক আগেও বাংলা টিম লিস্টে দেখা যেত!
দু’টো টিম। আর এই দুইকে নিয়ে লজ্জা আর টেনশনের দু’টো বৃত্ত তৈরি বাংলা ক্রিকেটে।
প্রথম টিমটাবাংলার অনূর্ধ্ব-২৫ টিম। যা বাংলা ‘এ’ টিম। সি কে নাইডু ট্রফিতে বিশ্রী খেলে যারা এ দিন এলিট থেকে প্লেট গ্রুপে নেমে গেল। এবং একইসঙ্গে প্রশ্ন তুলে দিল বঙ্গ ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ নিয়ে।
দ্বিতীয় টিমটালক্ষ্মীরতন শুক্লর সিনিয়র বাংলা। যাদের হাতে পড়ে গ্রুপের আর তিনটে ম্যাচ। কোয়ার্টার ফাইনালে উঠতে গেলে যাদের অন্তত একটা থেকে চাই অন্তত ছ’পয়েন্ট। মানে সরাসরি জয়। এবং প্রতিপক্ষের বিচারে সবচেয়ে সহজ প্রতিপক্ষ রেলওয়েজ। কিন্তু সেখানে যে আবার চলতি রঞ্জিতে ডাবল সেঞ্চুরি এবং প্রায় ৭৮ গড় নিয়ে কোনও এক অরিন্দম ঘোষ দাঁড়িয়ে!
বাংলা ক্রিকেটমহলে যদিও এ দিন সন্ধের তীব্র প্রতিক্রিয়াটা ছিল ‘এ’ টিমের নেমে যাওয়া নিয়ে। সি কে নাইডু ট্রফিতে চার ম্যাচ খেলে যারা একটাও জেতেনি। জুটেছে তিন পয়েন্ট। সৌরাষ্ট্র ‘এ’-র বিরুদ্ধে ‘অবনমন’ বাঁচানোর ম্যাচে এ দিন জুটল এক পয়েন্ট। বাংলার ২৯৯-এর জবাবে পাঁচশোর বেশি তুলে শেষ করল সৌরাষ্ট্র। যা দেখে নির্বাচক প্রধান দীপ দাশগুপ্ত স্তম্ভিত। “আমাদের উচিত কিছু বদলের কথা ভাবা। স্কুল ক্রিকেট চল্লিশ ওভার খেলে লাভ নেই। ওটা এখনই দু’দিনের করা হোক।” সিএবি যুগ্ম-সচিব সুজন মুধোপাধ্যায়ের আবার দাবি, “এই টিমটাই সেরা ছিল। কী করে এ রকম হল, বোঝা যাচ্ছে না!”
বাংলা ক্রিকেটমহল কিন্তু কড়া প্রশ্ন তুলছে কর্তাদের ভূমিকা নিয়েই। বলা হচ্ছে, বাংলার অনূর্ধ্ব উনিশ টিমটাকে (যারা সবচেয়ে ভাল খেলছে এখন) সর্বভারতীয় টুর্নামেন্ট শুরুর আগে যদি পঞ্জাব, গুজরাতে টুর্নামেন্ট খেলতে নিয়ে যাওয়া যেতে পারে, তা হলে অনূর্ধ্ব-২৫ টিমকে কেন স্রেফ ইন্ডোরে প্র্যাকটিস করে সি কে নাইডু খেলতে হল? বলা হচ্ছে, আচমকাই জয়দীপ মুখোপাধ্যায়কে অনূর্ধ্ব-২৫ কোচ ঘোষণা করা হয়েছে। যিনি গত বছর পর্যন্ত জুনিয়র ক্রিকেটের নির্বাচক ছিলেন। ‘এ’ টিমের কে কেমন ফর্মে, সেটা যাচাই করার ন্যূনতম সুযোগও তাঁকে দেওয়া হল না। সন্ধেয় জয়দীপ বলছিলেন, “রেলিগেশনে নামার টিম ছিল না। গণ্ডগোলটা হল ক্লোজ ম্যাচ কিছু হারায়।” কিন্তু পাল্টা বলা হচ্ছে টিমে সুদীপ চট্টোপাধ্যায়, সায়নশেখর মণ্ডলের মতো রঞ্জি খেলা ক্রিকেটার থাকার পরেও এমন হবে কেন? সিএবি-র কেউ কেউ বলেও ফেললেন, “ভয় লাগছে ভেবে যে, দু’বছর পর এরাই সিনিয়র খেলবে!”
সিনিয়র টিমও অবশ্য সুখকর জায়গায় নেই। পাঁচ ম্যাচে এগারো পয়েন্ট। ৬ ডিসেম্বর থেকে দিল্লির জামিয়ামিলিয়া ইসলামিয়ার মাঠে নামবে রেলওয়েজের সঙ্গে। যারা গ্রুপ শীর্ষে থাকলেও বাংলা যাদের অপেক্ষাকৃত সহজ বলে ধরছে, কারণ লক্ষ্মীদের শেষ দু’টো ম্যাচ উত্তরপ্রদেশ আর ডব্লিউ ভি রামনের তামিলনাড়ুর বিরুদ্ধে। কিন্তু পাকেচক্রে বাংলার বাঙালি প্রতিপক্ষ অরিন্দম ঘোষের গলা অন্য রকম শোনাচ্ছে। নয়াদিল্লি থেকে ফোনে বললেন, “বাংলা না খেলার আক্ষেপ হয়। কিন্তু বাংলায় এত সুযোগ পেতাম না। রেলে যা পাই। বাংলার সঙ্গে যুদ্ধটা বেশ হবে। মাঠে আলগা বন্ধুত্ব থাকবে, তবে বাইশ গজে এক ইঞ্চি ছাড়ব না। ওখানে কোনও বন্ধুত্ব হয় না।”
যা শোনার পরেও অবশ্য লক্ষ্মী নির্বিকার। ওই নয়াদিল্লি থেকেই ফোনে বলে দিলেন, “অরি (অরিন্দম) ভাল খেলছে। খেলুক। বাংলাও যেমন খেলার, খেলবে!’’




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.