দুই মেয়ে শ্যুটারের চুলোচুলি, মারামারিতে সোমবার সকালে উত্তাল হয়ে উঠল বেলগাছিয়ার নর্থ ক্যালকাটা রাইফেল ক্লাব। যাতে জড়িয়ে পড়েছে বহু বারের জাতীয় চ্যাম্পিয়ন কুহেলি গঙ্গোপাধ্যায় এবং সুচন্দ্রা ঘটকের নামও। দু’পক্ষই পুলিশের কাছে একে অন্যের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ এনেছে। পুলিশের পক্ষ থেকে দু’পক্ষকেই থানায় ডাকা হয়েছিল এ দিন বিকেলে। অলোচনায় সমস্যার সমাধান হয়নি বলে খবর।
ক্লাব কর্তাদের একাংশের সঙ্গে জাতীয় জুনিয়র চ্যাম্পিয়ন ও আন্তর্জাতিক পদকজয়ী শ্যুটার মাম্পি দাসের দীর্ঘদিন ধরে নানা বিষয় নিয়ে ঝামেলা চলছে। এটা তারই রেশ বলে মনে করছেন শ্যুটিংয়ের সঙ্গে যুক্ত অনেকেই। মাম্পির মা লক্ষ্মী দাসের অভিযোগ, “সামনে জাতীয় শ্যুটিং। যাতে আমার মেয়ে ভাল ফল করতে না পারে সে জন্যই চক্রান্ত করে ওকে মারা হয়েছে।” ক্লাব সচিব দেবরঞ্জন মুখোপাধ্যায় পাল্টা বললেন, “ক্লাবে সকালে একটা ঝামেলা হয়েছে। মাম্পি বহু দিন ধরেই ক্লাবের নিয়মকানুন ভাঙছে। জয়দীপ কর্মকারের মতো শ্যুটার সিনিয়রদের সম্মান করলেও ও তা করে না। সবার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে। ওর বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। ওকে শো-কজ বা সাসপেন্ড করার কথা ভাবছি আমরা।” |
এগারোই ডিসেম্বর থেকে জাতীয় শ্যুটিং শুরু হচ্ছে দিল্লিতে। সব শ্যুটার সে জন্য অনুশীলন করছে। এই অনুশীলন করা নিয়েই ঝামেলা বাধে দুই শ্যুটার মাম্পি দাসের সঙ্গে কৌশল্যা মণ্ডলের। রাইফেল নিয়ে গুলি না ছুড়লেও চুল ধরে টানাটানি থেকে ধাক্কাধাক্কি হাতাহাতি সবই হয় দু’জনের মধ্যে।
প্রাক্তন জাতীয় শ্যুটার কুহেলি পুলিশে অভিযোগ করেন, সোমবার সকাল দশটা নাগাদ এক শ্যুটার কৌশল্যা মণ্ডল (যিনি কুহেলির বাড়িতে কাজ করেন এবং রাজ্য স্তরে রুপো জিতেছেন) অনুশীলন করছিলেন একটি লেনে। হঠাৎ-ই সেখানে এসে মাম্পি এবং তাঁর মা ঝামেলা শুরু করেন। কৌশল্যাকে ওই লেন থেকে সরে যেতে বলেন ওঁরা। কৌশল্যার রাইফেল ছুড়ে ফেলে দিয়ে থান ইট দিয়ে মারার চেষ্টা হয়। তাঁকে মারা হয়। কাঁধে এবং ঘাড়ে চোট লাগে। কৌশল্যাকে হাসপাতালেও নিয়ে যেতে হয়।
কুহেলির দাবি মানতে চাননি মাম্পি ও তাঁর মা লক্ষ্মী দাস। মাম্পি বলেন, “আমি জাতীয় প্রতিযোগিতার জন্য সরাসরিই এন্ট্রি ফি পাঠিয়েছি বলেই ক্লাবের রাগ। এর আগে দু’বার ওদের মারফত পাঠিয়ে বিপদে পড়েছিলাম। ক্লাব আমার অনেক সার্টিফিকেট আটকে রেখেছে। কুহেলি এবং আরও কয়েক জন মিলে আজ আমাকে মারধর করেছে। কৌশল্যা আমার ব্যাগে লাথি মেরে ফেলে দিয়েছে। আমি ভাল ফল করি সেটা ওরা চায় না। আমার মার খেয়ে জ্বর এসে গিয়েছে।” মাম্পির পাশে অবশ্য দাঁড়াননি বেশির ভাগ ক্লাব কর্তাই। যা পরিস্থিতি তাতে সম্প্রতি ইরান থেকে সদ্য রুপো জিতে ফেরা মাম্পি এক দিকে বাকিরা সবাই উল্টো দিকে। কেন এমন হল তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। মাম্পির মা অবশ্য হুমকি দিয়ে রেখেছেন, “মেয়েকে ক্লাবে অনুশীলন করতে নিয়ে যাব। দেখি কে আটকায়।” |