বিধানসভায় কংগ্রেসের বয়কট কর্মসূচি চলছে। শাসক দলের বিরুদ্ধে সংসদীয় রীতি-নীতি অমান্য, সারদা-কাণ্ডের সিবিআই তদন্তের দাবিতেই গত বুধবার থেকে সভা বয়কট করছে কংগ্রেস।
বয়কটের আবহে বিধানসভার প্ল্যাটিনাম জুবিলির সমাপ্তি অনুষ্ঠানে কংগ্রেস শেষ পর্যন্ত কী করবে, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে। ওই অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়, লোকসভার স্পিকার মীরা কুমারের উপস্থিত থাকার কথা। ফলে কংগ্রেসের অন্দরেও কিছুটা অস্বস্তি রয়েছে। বিষয়টির গুরুত্ব বুঝে বুধবার বিধানসভায় তাঁদের পরিষদীয় দলের নেতা মহম্মদ সোহরাব ও দলীয় সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা করতে যান প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্য। কিন্তু তাঁকে কংগ্রেস বিধায়করা স্পষ্ট জানিয়ে দেন, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি নিয়ে বলতে এসে বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী একতরফা ভাবে কংগ্রেস ও কেন্দ্রকে আক্রমণ করেছেন। তার জবাব দেওয়ার সুযোগ কংগ্রেসকে দেওয়া হয়নি। মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিতিতে এ বিষয়ে স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় আলোচনার সুযোগ না দিলে তাঁরা বয়কটে অনড় থাকবেন।
বৈঠকের পরে প্রদীপবাবু বলেন, “আমি পরিষদীয় দলের সদস্যদের বলেছি, ওঁরা যা সিদ্ধান্ত নেবেন তা-ই হবে। তবে আশা করছি, অনুষ্ঠানের আগে একটা ফয়সালা হবে।” পরিষদীয়মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় অবশ্য মনে করেন, ‘‘যাঁরা বয়কটের কথা ভাবছেন, আশা করব তাঁরা এতটা অবিবেচক হবেন না। ওঁদের শুভ বুদ্ধি জাগ্রত হবে।’’
সরকারের সমালোচনায় অধিবেশনকে ব্যবহার করাই সংসদীয় রীতি বলে মনে করে কংগ্রেস। তবুও তাঁরা কেন বয়কটের পথে, তা ব্যাখ্যা করে দলের বর্ষীয়ান বিধায়ক মানস ভুঁইয়া এ দিন বলেন, “শাসক দল যে ভাবে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করছে, তার প্রতিবাদেই আমরা বয়কট করছি। বয়কটও সংসদীয় গণতন্ত্রের রীতি।”
প্রদীপবাবুর সঙ্গে কংগ্রেস বিধায়কদের বৈঠকে অনিবার্য ভাবেই এসে পড়ে দলে ভাঙনের বিষয়। অনেক বিধায়কই প্রদীপবাবুর কাছে অভিযোগ করেন, শাসক দল প্রশাসনকে কাজে লাগিয়ে তাঁদের ও কংগ্রেস কর্মীদের উপর সন্ত্রাস করছে। এর বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তোলার ব্যাপারেও বৈঠকে আলোচনা হয়। এই ব্যাপারে প্রদেশ নেতৃত্বের সঙ্গে নিয়মিত সমন্বয় রাখা দরকার বলে প্রদীপবাবুকে বিধায়করা জানান। পরে প্রদীপবাবু বলেন, “প্রয়োজনে ১৫ দিন অন্তর আমি নিজে পরিষদীয় দলের সঙ্গে বৈঠক করব।”
|