গুন্ডামি, বোমাবাজির একাধিক অভিযোগ থাকা এক যুবকের খোঁজে তার বাড়িতে হানা দিতে যাচ্ছে পুলিশ। বাড়ির সামনে গলির মুখে থমকে যেতে হল পুলিশকে। মুড়ি-মুড়কির মতো ইট, পাথর, ভাঙা টালি ধেয়ে এল পুলিশের দিকে। বোমাও ছোড়া হল পুলিশকে লক্ষ্য করে। ইট-পাথরের আঘাতে জখম হয়ে পালিয়ে এল পুলিশই!
নারকেলডাঙায় মঙ্গলবারের গুলি চালানোর ঘটনায় মূল অভিযুক্ত সেলিম হোসেনকে পাকড়াও করতে গিয়ে এক বছর আগে এমনই অভিজ্ঞতা হয়েছিল পুলিশের।
নারকেলডাঙা মেন রোডের বাসিন্দা, পেশায় ব্যবসায়ী সুরিন্দর পাল সিংহকে লক্ষ্য করে গুলি করার অভিযোগ উঠেছে সেলিমের বিরুদ্ধে। বুধবার রাত পর্যন্ত তাকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।
পুলিশ জানায়, নারকেলডাঙা নর্থ রোডের বাসিন্দা বছর তিরিশের সেলিমের বিরুদ্ধে তোলাবাজি, সন্ত্রাস সৃষ্টি, মদ ও জুয়ার ঠেক চালানো, বোমাবাজি ও গুলি চালানোর বহু অভিযোগ আছে। ২০০৫ থেকে সেলিম ও তার সঙ্গীদের সঙ্গে গোলমাল চলছে সুরিন্দর পাল সিংহ, প্রেমনাথ ঠাকুর-সহ একাধিক বাসিন্দার। ওই বাসিন্দারা সেলিমের দুষ্কর্মের প্রতিবাদ করছিলেন বলে স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন।
প্রেমনাথের অভিযোগ, “আমরা কোনও সামাজিক কাজ করতে গেলেই সেলিম ও তার দলবল বাধা দেয়।” পুলিশ জানায়, ২০১০ সালের জানুয়ারি মাসে নারকেলডাঙা মেন রোডে বোমাবাজি হয়েছিল। অভিযোগ, বোমা ছুড়েছিল সেলিম। ২০১২ সালের জুন মাসে এক দিন স্থানীয় এক যুবক ঝন্টু দে-কে ভোজালি দিয়ে সেলিমের এক সঙ্গী কুপিয়েছিল বলে অভিযোগ। ঘটনার প্রতিবাদে এলাকার লোকজন নারকেলডাঙা থানা ঘেরাও করেন। সেই বছরেরই নভেম্বরে মহম্মদ আসিফ নামে এক ব্যক্তির পায়ে গুলি করার অভিযোগ ওঠে সেলিমের বিরুদ্ধে। কিন্তু তার পরেও সেলিমকে বাগে আনতে পারেনি পুলিশ। শুধুমাত্র ২০১২ সালেই সেলিম গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ১১ বার দুষ্কর্মের অভিযোগ থানায় লিখিত ভাবে জানানো হয়।
পুলিশ অবশ্য দাবি করেছে, বেশ কয়েক বার সেলিমকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। কিন্তু প্রতিবারই সে কিছু দিন পরে জামিনে ছাড়া পায়। স্থানীয় ষষ্ঠীতলা এলাকার এক বাসিন্দার অভিযোগ, “৩০ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর স্বপন সমাদ্দারের ছত্রছায়ায় রয়েছে সেলিম।” স্বপনবাবু অবশ্য দাবি করেছেন, “আমি সেলিমকে চিনি না।” তাঁর পাল্টা অভিযোগ, সুরিন্দর ও প্রেমনাথের বিরুদ্ধেও নারকেলডাঙা থানায় দুষ্কর্মের অভিযোগ রয়েছে। পুলিশ জানায়, সুরিন্দর ও প্রেমনাথের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় কোনও অভিযোগ নেই।
|