যে ট্রেন থেকে নামিয়ে মহিলাকে ধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ, তিনি যে সেই সন্ধ্যায় সেই ট্রেনের যাত্রী ছিলেন, সাক্ষীর কাছে তার প্রমাণ চাইলেন অভিযুক্তদের অন্যতম আইনজীবী। কাটোয়া ধর্ষণ কাণ্ডের সাক্ষ্যগ্রহণ পর্বে অন্যতম সাক্ষী বীরভূমের ময়ূরেশ্বর থানার কাটিহাটি গ্রামের নারায়ণ সূত্রধর এই প্রশ্ন শুনে জামার পকেট থেকে ট্রেনের টিকিট বের করে দেখালেন বুধবার।
২০১২ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি কাটোয়া-আমোদপুর ছোট ট্রেনে চেপে কাটোয়া আসছিলেন নারায়ণবাবু ও তাঁর স্ত্রী মিনতিদেবী। কাটোয়া শহরের কাশীগঞ্জ পাড়ায় রাত কাটিয়ে নবদ্বীপ যাওয়ার কথা ছিল তাঁদের। সরকারি আইনজীবী কাঞ্চন মুখোপাধ্যায় বলেন, এই মামলায় ট্রেনের টিকিটটি খুব গুরুত্বপূর্ণ নথি হয়ে দাঁড়াল বলে আমার ধারণা।
কেতুগ্রামে ছোট রেলে ধর্ষণ ও ডাকাতির ঘটনায় দ্বিতীয় পর্যায়ে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়েছে গত ১৯ নভেম্বর থেকে। কাটোয়া আদালতের ফাস্ট ট্র্যাক বিচারক সৈয়দ নেহাজুদ্দিন আজাদের এজলাসে এই মামলাটির সাক্ষ্য চলছে। গত দু’দিনে আমোদপুরের দম্পতি শিবরাম ও স্বাতী সূত্রধর এই মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছিলেন। তাঁরা মূলত আদালতের কাছে ডাকাতির ঘটনা তুলে ধরেন বলে আইনজীবীরা জানিয়েছেন। আইনজীবীদের থেকে আরও জানা যায়, এ দিন সাক্ষ্যের শুরুতেই নারায়ণবাবু জানান, দুষ্কৃতীরা তাঁর কাছ থেকে মোবাইল ও ৫০০ টাকা কেড়ে নিয়েছিল। সরকারী আইনজীবী কাঞ্চনবাবু আদালতে একটি মোবাইল দেখিয়ে সাক্ষীর কাছে জানতে চান, এই মোবাইলটা তাঁর কি না। নারায়ণবাবু জানান, ওই মোবাইলটি তাঁর। তার স্বপক্ষে মোবাইল সেটটি কেনার সময়ের একটি বিল আদালতে পেশ করেন নারায়ণবাবু। যদিও অভিযুক্তদের অন্যতম আইনজীবী ধীরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, ওই সাক্ষী আদালতে যে বিল পেশ করেছেন, তাতে ওই মোবাইলটি যে তাঁরই, তা প্রমাণ হয় না। এর পরেই ধীরেন্দ্রনাথবাবু প্রশ্ন করেন, তিনি ওই ট্রেনের যাত্রী ছিলেন কি না। তার প্রেক্ষিতেই নারায়ণবাবু টিকিট বের করে দেখান। আদালত তা নথি হিসাবে গ্রহণ করে নেয়।
আইনজীবীরা জানিয়েছেন, ওই ট্রেনে লুঠপাট হওয়ার সময়ে নারায়ণবাবু মাথা নিচু করে বসেছিলেন। নারায়ণবাবু জানান, দুষ্কৃতীরা তাঁর কাছে আসতেই তিনি কিছু না বলে মোবাইল ও ৫০০ টাকা তাঁদের হাতে তুলে দেন। এর পরে দুষ্কৃতীরা বাকি যাত্রীদের কাছ থেকেও লুঠ করে। আজ, বৃহস্পতিবার নারায়ণবাবুর স্ত্রী মিনতিদেবী আদালতে সাক্ষ্য দেবেন। পুলিশ জানিয়েছে, এই মামলায় ৬ জন যাত্রী সাক্ষ্য দেবেন, যাঁরা আগে কাটোয়া রেলপুলিশের কাছে ডাকাতি ঘটনার বিবরণ দিয়েছিলেন। |