মঙ্গলকোট
গ্রামে গিয়ে কর্তারা শুনলেন বোমাবাজি
ঙ্গলকোটে গ্রামের মানুষের সমস্যা শুনতে গিয়ে বোমার আওয়াজ শুনে এলেন বর্ধমানের কাটোয়া মহকুমা প্রশাসনের কর্তারা।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মহকুমাশাসক-সহ অন্য কর্তারা স্থানীয় লাখুরিয়া গ্রামে বাসিন্দাদের অভাব-অভিযোগর কথা শোনার সময়ে লাগাতার বোমা পড়ার আওয়াজ শোনা যেতে থাকে। তবে কোন এলাকায় বোমা পড়েছে, তা নিয়ে পুলিশ ও প্রশাসনের মধ্যে মতপার্থক্য রয়েছে।
মানুষের সমস্যা জেনে সমাধানের রাস্তা খোঁজা এবং তাঁদের জীবনযাত্রার মান বাড়ানোর লক্ষ্যে ধারাবাহিক ভাবে সরকারি আমলাদের বিভিন্ন প্রত্যন্ত গ্রামে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বর্ধমান জেলা প্রশাসন। গত ১৯ অগস্ট মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় বর্ধমানে এসে জেলাশাসক, মহকুমাশাসক, বিডিও এবং অন্য আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠক করে গ্রামে যাওয়ার পরামর্শ দেন।
এর পরেই ২৬ সেপ্টেম্বর জেলার উন্নয়নমূলক বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, প্রশাসনের আধিকারিকেরা গ্রামে যাবেন, সেখানেই রাত কাটাবেন। অচেনা পরিবেশে মুশকিল আসানের জন্য মশা তাড়ানো ধূপ এবং শুকনো খাবার নিয়ে যাওয়ার কথাও বলা হয। সেই মতোই আধিকারিকেরা লাখুরিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের মানুষের সমস্যা শুনতে গিয়েছিলেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সন্ধ্যায় মহকুমাশাসক আর অর্জুন, মঙ্গলকোটের বিডিও সুশান্তকুমার মণ্ডল-সহ প্রশাসনের অন্য দফতরের কর্তারা লাখুরিয়া গ্রামে গিয়ে উপস্থিত হন। গ্রামের হাটতলায় সভার শুরুতেই নানান সামাজিক প্রকল্পে সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন বলে অভিযোগ তোলেন গ্রামবাসীরা। ব্লক অফিসে অন্য জনজাতির (ওবিসি) শংসাপত্র আনতে গিয়েও হয়রানি হতে হয় বলে অভিযোগ করেন তাঁরা।
সবে সভা জমে উঠেছে, সেই সময়েই অজয় নদের দিক থেকে একের পর এক বোমা পড়ার শব্দ আসতে থাকে। গ্রামবাসীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। অন্য সব ভুলে তাঁরা প্রশাসনের কাছে নিরাপত্তার দাবি জানাতে থাকেন। মাঝপথেই সভা বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়। বিডিও বলেন, “ওই অবস্থাতেও আমরা রাত ১১টা পর্যন্ত সভা চালিয়েছি।” মহকুমাশাসক বলেন, “বোমার আওয়াজ শুনেছি। গ্রামবাসীরা নিরাপত্তার দাবি জানিয়েছেন। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”
প্রশাসনের কর্তাদের দাবি, সভা শেষ হওয়ার পরেই বোমার আওয়াজ বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। স্বভাবতই প্রশ্ন উঠেছে, বেছে-বুছে ঠিক সভা চলাকালীন বোমাবাজি করল কারা?
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, বেশ কিছু দিন যাবৎ তৃণমূলের আশ্রিত দু’টি সমাজবিরোধী গোষ্ঠীর লড়াইয়ে মঙ্গলকোটের মানুষের জীবন অতিষ্ঠ। গোষ্ঠী-লড়াইয়ে বেশ কয়েক জন মারাও গিয়েছেন। তবে একটি গোষ্ঠীর লোকজন বর্তমানে মঙ্গলকোট ছেড়ে অজয় পেরিয়ে বীরভূমে আশ্রয় নিয়েছে। মাঝে-মধ্যেই অজয়ের পাড়ে দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষ হয়। তবে বেশ কয়েক দিন ধরে বোমা পড়ার আওয়াজ বন্ধ ছিল। বোমা নদের এ পারে পড়েছে, না ও পারে তা নিয়ে অবশ্য পুলিশ-প্রশাসন ভিন্নমত। বিডিও বলেন, “যে জায়গায় বোমা পড়েছে, বুধবার সকালে আমি সেখানে ঘুরে এসেছি। অন্যদিকে পুলিশের দাবি, মঙ্গলকোট এলাকায় নয়, বীরভূমের দিকে বোমা ফেটেছে। সে কারণে তাদের কিছু করার নেই।
তা হলে ওই রাতে ফের ঝুড়ি-ঝুড়ি বোমা পড়ার কারণ কী?
পুলিশ-প্রশাসনের অনুমান: মঙ্গলকোটে সদ্য নতুন ওসি এসেছেন। তার মধ্যেই প্রশাসনের সভা। এই অবস্থায় এলাকায় আতঙ্কের পরিস্থিতি বজায় রাখতেই সমবাজবিরোধীরা বোমা ফাটিয়ে নিজেদের অস্তিত্ব জাহির করেছে। অর্থাৎ বোমা যেখানেই পড়ুক, গত বিধানসভা নির্বাচনের আগে থেকে মঙ্গলকোটে যে অশান্তি শুরু হয়েছে, তা থামার এখনও কোনও লক্ষণ নেই।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.