একশো দিনের কাজের জবকার্ড নিয়ে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর গোলমালের জেরে বোমাবাজি হল মন্তেশ্বরের দেনুড় পঞ্চায়েতের মৌসা গ্রামে। বুধবারের ওই ঘটনায় আহত হয়েছেন মকবুল শেখ নামে এক তৃণমূল কর্মী। বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে তাঁকে। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, এ দিন সকালে তৃণমূলের একটি গোষ্ঠীর লোকেরা গ্রাম থেকে বাজার পর্যন্ত এলাকায় বোমাবাজি করে। গুলি চালানোর ঘটনাও ঘটে। তৃণমূলের একটি কার্যালয় ও একটি গয়নার দোকানে ভাঙচুর চলে বলেও জানা গিয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই গ্রামে লাল্টু শেখ ও হাবিবুর শেখের নেতৃত্বে তৃণমূলের দু’টি দল রয়েছে। এর মধ্যে লাল্টু শেখের দলটি পুরনো। আর মাসখানেক হাবিবুর তাঁর অনুগামীদের নিয়ে এইউআইডিএফ থেকে তৃণমূলের যোগ দেন। তারপর থেকে ছোটখাট ঝুটঝামেলা চললেও সম্প্রতি একশো দিনের কাজের জবকার্ড নিয়ে তাঁদের বিরোধ তুঙ্গে ওঠে। অভিযোগ, কয়েকজনের জবকার্ড আটকে রাখার অভিযোগে মঙ্গলবার লাল্টুর লোকজন হাবিবুরের এক অনুগামীকে মারধর করে। বুধবার সকাল থেকে থেকেই শুরু হয় বোমাবাজি। লাল্টুর অনুগামীদের দাবি, ঘটনার সময় নিজের গুল কারখানায় ছিলেন মকবুল। সেখানেই তার উপর গুলি, বোমা ছোড়া হয়। পায়ে আঘাত লাগায় মকবুলকে বর্ধমান মেডিক্যালে ভর্তি করানো হয়। এরপরে ওই দলটি এলাকার একটি গয়নার দোকানে ও নিজেদের দলীয় কার্যালয়ে ভাঙচুর চালায় বলেও অভিযোগ। তবে হাবিবুর অনুগামীদের পাল্টা দাবি, লাল্টুর লোকজনেরাই প্রথমে ঝামেলা শুরু করে। তারপর আঘাত, পাল্টা আঘাতে এলাকা উত্তপ্ত হয়।
ঘটনার পরেই এ দিন ওই গ্রামে গিয়েছিলেন তৃণমূলের মন্তেশ্বর ব্লক সভাপতি সজল পাঁজা। দু’টি দলের লোকেদের নিয়েই আলোচনায় বসেন তিনি। সজলবাবু বলেন, “হাবিবুর মাসখানেক আগে আমাদের দলে যোগ দিয়েছেন। আর লাল্টু পুরনো কর্মী। একশো দিনের কাজ নিয়ে ওদের একটা ঝামেলা হয়েছিল। তবে আমি মিটিয়ে দিয়েছি।” তাঁর দাবি, পরিস্থিতি উত্তপ্ত হওয়ার পিছনে সিপিএমেরও মদত রয়েছে। তবে সিপিএমের মন্তেশ্বর জোনাল কমিটি বিষয়টি ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছে।
মাস তিনেক আগেও মৌসা গ্রামে তৃণমূলের একটি দলীয় কার্যালয় পোড়ানোর ঘটনা ঘটেছিল। অভিযোগ উঠেছিল তৃণমূলের একটি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধেই। এ দিন পরিস্থিতি উত্তপ্ত হওয়ার খবর পেয়েই মন্তেশ্বর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। মহকুমা পুলিশের এক আধিকারিক জানান, বিষয়টি নিয়ে লিখিত কোনও অভিযোগ জমা পড়েনি। তবে গ্রামের পরিস্থিতির দিকে নজর রাখা হয়েছে। কালনার মহকুমাশাসক শশাঙ্ক শেঠি জানান, বিডিওকে খোঁজ নিতে বলা হয়েছে। |