তেজপালকে নিয়েই মতবিরোধ মণীশ-জহরের
রুণ তেজপালকে নিয়েই কি কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রীর সঙ্গে প্রসার ভারতীর শীর্ষ কর্তার দূরত্ব বেড়েছিল? মন্ত্রক সূত্রের খবর অন্তত তেমনই। সূত্রের দাবি, তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী সঙ্গে প্রসার ভারতীর সিইও জহর সরকারের ধারাবাহিক মতানৈক্যের মূলে যৌন হেনস্থায় অভিযুক্ত সাংবাদিক তরুণ তেজপাল।
রাজনৈতিক সূত্রের খবর, চণ্ডীগড়-পরম্পরার সূত্রেই তেজপাল ও মণীশ দীর্ঘদিনের অভিন্নহৃদয় বন্ধু। সম্প্রতি তরুণকে প্রসারভারতী বোর্ডের সদস্য হিসেবে নির্বাচিত করা হয়েছিল মণীশেরই আগ্রহে। দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকেই মণীশ চেয়েছেন, তহেলকার পাশাপাশি দূরদর্শনের খবরেরও পূর্ণ দায়িত্ব নিন তরুণ। কিন্তু এতে প্রথম থেকেই আপত্তি ছিল জহরবাবুর। মন্ত্রীকে সে কথা জানিয়েও দিয়েছিলেন তিনি। বিরোধের সূত্রপাত তা থেকেই। জহরবাবুর আপত্তিতে এক দিকে যেমন বন্ধ হয়ে যায় তেজপালের দূরদর্শনের পদ পাওয়া, তেমনই কার্যত কথা বন্ধ হয়ে যায় মণীশ এবং জহরের। জহরবাবুর আপত্তির প্রধান জায়গাটি ছিল, বেসরকারি সংস্থায় কর্মরত ব্যক্তি কখনওই বাড়তি কাজ হিসেবে সরকারি গুরুদায়িত্ব নিতে পারেন না। তাঁর মতে, বাইরের থেকে উপদেষ্টা আনার প্রয়োজন নেই। দু’তরফের মনোমালিন্য আরও বাড়ে যখন প্রসার ভারতীর কর্তাদের সঙ্গে আলোচনা না করেই দূরদর্শনের দু’টি সিরিয়াল দিয়ে দেওয়া হয় তেজপালের সংস্থাকে। প্রসার ভারতী কর্তারা জানাচ্ছেন, শুধু বরাত দেওয়া নয়, ভাল স্লটে সেই সিরিয়াল দেখানোর জন্য চাপ দেওয়া হত।
এমনিতেই প্রসারভারতীর জন্য অর্থের জোগান, শূন্য পদ পূরণে অনীহা, হিন্দি চ্যানেলের ক্ষেত্রে ব্যয়সঙ্কোচের মতো অভিযোগকে ঘিরে মন্ত্রী ও সিইও-র সম্পর্ক যথেষ্ট তিক্ত। সূত্রের খবর, বিষয়টি এমন পর্যায়ে পৌঁছয় যে, দূরদর্শনের এডিজি এক জন মহিলা কর্মী সম্পর্কে একটি অশালীন মন্তব্যের পরই মন্ত্রক থেকে সিইও-র কাছে একাধিক চিঠি আসে। সতর্কও করা হয় জহরবাবুকে। মণীশ-ঘনিষ্ঠ তেজপালকে যৌন হেনস্থার অভিযোগে প্রসার ভারতী বোর্ড থেকে তাড়ানোর বিষয়টিকে তাই ‘ডিভাইন জাস্টিস’ আখ্যা দিচ্ছেন অনেকে।
এই বিরোধ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে জহরবাবুর সহাস্য জবাব, “কাজের মধ্যে মতবিরোধ হতেই পারে।” মন্ত্রী মণীশ অবশ্য এ ধরনের কোনও বিরোধের কথা মানতে নারাজ।

তহেলকা ছাড়লেন সেই তরুণী
চাকরি থেকে ইস্তফা দিলেন তরুণ তেজপালের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ আনা মহিলা সাংবাদিক। দু’দিন আগেই পদত্যাগ-পত্র পাঠিয়ে দিয়েছেন বলে আজ এক বিবৃতিতে তিনি জানিয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, তহেলকায় কাজ করা তাঁর পক্ষে অসম্ভব হয়ে উঠেছিল। আজই দিল্লি হাইকোর্টে আগাম জামিনের আবেদন করেছেন তেজপাল। কাল তার শুনানি হবে। মনে করা হচ্ছে, মানসিক চাপে ও সংস্থার মালিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে সেই সংস্থাতেই কাজ করা মুশকিল বুঝেই চাকরি ছেড়েছেন অভিযোগকারিণী সাংবাদিক। তদন্তের নিরপেক্ষতার স্বার্থেও তিনি এই সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকতে পারেন। এ দিনই গোয়া পুলিশের ডিআইজি ও পি মিশ্র সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, তাঁরা অভিযোগকারিণীর সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। তবে কী কথা হয়েছে তা প্রকাশ্যে আনতে রাজি হননি তিনি।
তেজপাল কেলেঙ্কারি নিয়ে নতুন বিতর্ক তৈরি হয়েছে গোয়ার মুখ্যমন্ত্রী মনোহর পারিক্করের মন্তব্যে। ধর্ষণে অভিযুক্ত হওয়ার পরে তেজপাল দাবি করেছিলেন, পারস্পরিক সম্মতিতেই যৌন সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল ওই সাংবাদিকের সঙ্গে। ভুল বোঝাবুঝির শিকার হয়েছেন তিনি। এ নিয়ে কাল এক অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী পারিক্কর মন্তব্য করেন, তরুণ তেজপালের দাবি সত্যি নয়। পারিক্কর আবার এ-ও বলেন, “অবাক হয়ে যাচ্ছি, মাত্র চার মিনিটে তেজপাল এত কিছু করলেন কী করে, তা-ও আবার লিফ্টের ভিতরে।” পারিক্কর আরও বলেন, “সম্পাদকের পদ থেকে ছ’মাস সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়ে কার্যত অভিযোগ স্বীকারই করে নিয়েছেন তেজপাল।” তেজপালের অভিযোগ প্রকাশ্যে আসার পরে পারিক্করই জানিয়েছিলেন, পুলিশকে আইন মেনে কাজ করার সম্পূর্ণ স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে। তার পরেই তদন্তসাপেক্ষ বিষয়ে তাঁর এ সব মন্তব্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তেজপালের আইনজীবীরা।

পুরনো খবর:


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.