|
|
|
|
বিতর্ক এড়াতে বিশ্রাম নিন মোদী, নেতাদের পরামর্শ |
দিগন্ত বন্দ্যোপাধ্যায় • নয়াদিল্লি |
দেশ দাপিয়ে বেড়ানোর সুফল মিলছে বটে, কিন্তু বাড়ছে বিতর্কও। বিধানসভা নির্বাচন -পর্ব মিটে গেলেই তাই নরেন্দ্র মোদীকে মাস দুয়েকের বিরতি নেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন বিজেপি নেতাদের একাংশ।
রাজনাথ সিংহ -অরুণ জেটলির মতো নেতারা মনে করছেন, মোদী যে ভাবে গোটা দেশে প্রচারের ঝড় তুলছেন, তাতে দলের খুবই লাভ হচ্ছে। কিন্তু লোকসভা নির্বাচন পর্যন্ত এই গতি ধরে রাখা মুশকিল। কারণ, মোদী যত প্রচারের আলোয় থাকছেন, তাঁকে ঘিরে বিতর্কও তত বাড়ছে। বিরোধী দলগুলিও তাঁর বিরুদ্ধে এককাট্টা হওয়ার সুযোগ পাচ্ছে। বিজেপির এক শীর্ষ নেতার কথায়, “এই পরিস্থিতিতে বিধানসভা ভোটের প্রচারের পর অন্তত দু’মাস মোদীর বিরতি নেওয়া উচিত। তার পর জানুয়ারির মাঝামাঝি ফের তিনি লোকসভার জন্য নতুন উদ্যমে নেমে পড়ুন।”
ছত্তীসগঢ়ের প্রথম দফা বিধানসভা নির্বাচন ইতিমধ্যেই মিটেছে। এখন সে রাজ্যের আর এক দফার নির্বাচন বাকি। এর পরে ভোট হবে মধ্যপ্রদেশ, দিল্লি, রাজস্থান ও মিজোরামে। এই রাজ্যগুলিতে কাল থেকে ফের প্রচারে নামছেন মোদী। আগে যেমন মোদী কয়েকটি লোকসভা কেন্দ্র মিলিয়ে একটাই জনসভা করতেন, সেই কৌশল বদলে বিজেপির প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী এ বারে পৌঁছে যেতে চাইছেন রাজ্যের প্রতিটি কোণে। এর জন্য প্রতিদিন ৩ -৪টি করে সভা করছেন তিনি। দিল্লির মতো ছোট রাজ্যেও মোদী তিন দিন প্রচার করবেন, মধ্যপ্রদেশে পাঁচ দিন, রাজস্থানে চার দিন। ফলে আগামী পনেরো দিনে প্রায় ৫০টির মতো সভার আয়োজন করা হয়েছে। দিল্লিতে দলের সদর দফতরেই একটি ‘ওয়্যার রুম’ খোলা হয়েছে। সেখান থেকেই পরিচালিত হচ্ছে গোটা দেশের মোদী -প্রচার।
বিজেপি নেতারা মনে করছেন, এই অতিরিক্ত প্রচারই হিতে বিপরীত হয়ে উঠতে পারে। মোদীর কাছে সমস্যা হল, তাঁকে প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী করা হয়েছে বিধানসভা ভোটের আগেই। ফলে বিধানসভা নির্বাচনগুলিতে জেতা -হারার দায়ও এখন তাঁর কাঁধে। কোনও রাজ্যে হার হলে বিরোধীরা বলার সুযোগ পাবে, মোদী -জাদু ফেল।
ছত্তীসগঢ়ের এখন যা রাজনৈতিক পরিস্থিতি, তাতে হার -জিতের ব্যবধান হতে পারে খুবই অল্প। দিল্লিতে দলের নেতাদের মধ্যেই কোন্দল। সেখানে শীলা দীক্ষিত ১৫ বছর রাজত্ব করার পরেও বিজেপির পক্ষে তাঁকে হারানো খুবই কঠিন। আবার মধ্যপ্রদেশেও শিবরাজ সিংহ চৌহানকে কড়া চ্যালেঞ্জের মুখে ঠেলে দিয়েছেন কংগ্রেসের তরুণ নেতা জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া। রাজস্থানে অশোক গহলৌত সরকারকে উৎখাত করতেও মোদীর সাহায্য চাই বসুন্ধরা রাজে সিন্ধিয়ার। সুতরাং বিধানসভা নির্বাচনে বেশ চ্যালেঞ্জের মুখেই রয়েছে বিজেপি।
এই পরিস্থিতিতে বিধানসভা ভোটের অভিমুখই বদলে দিতে চাইছেন মোদী। প্রতিটি রাজ্যে গিয়ে আক্রমণের নিশানায় তিনি কেন্দ্রের মনমোহন সিংহ সরকারকেই আনতে চাইছেন, যাতে বিধানসভা ভোটও আসলে লোকসভার নিরিখেই হয়। বিজেপি নেতৃত্ব বুঝতে পারছেন, এই বাধ্যবাধকতার জন্যই মোদীকে এখন এত বেশি দৌড়ঝাঁপ করতে হচ্ছে। এ জন্যই তাঁকে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে, বিধানসভা ভোটের পর্ব মিটে গেলেই তিনি অন্তত মাস দুয়েক বিশ্রামে থাকুন। আবার লোকসভার আগে নতুন কলেবরে, নতুন কৌশল নিয়ে তিনি ময়দানে নামুন। তত ক্ষণে বিধানসভার ফলাফলের পর্যালোচনাও হয়ে যাবে। লোকসভার কৌশলও নতুন করে তৈরি করা সম্ভব হবে।
কিন্তু বিজেপিতে মোদীকে যাঁরা চেনেন, তাঁরা অনেকেই মনে করছেন তা হওয়ার নয়। যে গতিতে মোদী কাজ করেন, তাতে তাঁর পক্ষে দু -দুটো মাস হাত গুটিয়ে বসে থাকা খুবই শক্ত। |
পুরনো খবর: • উন্নয়ন নিয়ে নিজের রাজ্যেই বিপাকে মোদী • মোদীর রথযাত্রায় নেই আডবাণী, দলে বিতর্ক • প্রধানমন্ত্রীর সমান নিরাপত্তার দাবি মোদীর, খারিজ করল কেন্দ্র |
|
|
|
|
|