পাকিস্তানই বিষিয়ে দিচ্ছে পরিবেশ, সরতাজকে তোপ
মেয়াদ ফুরিয়ে আসছে এই দফায়। শেষ বেলায় সন্ত্রাসবাদ প্রশ্নে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে তোপ দাগল মনমোহন সরকার।
আজ ৪৯টি দেশের প্রতিনিধিদের নিয়ে এশিয়া -ইউরোপ বৈঠকের (আসেম ) সুবিশাল মঞ্চকে কাজে লাগিয়ে ইসলামাবাদের উপর সার্বিক চাপ তৈরি করা হল। একই সঙ্গে বার্তা দেওয়া হল ঘরোয়া রাজনৈতিক শিবিরকেও। আসেম -এর পার্শ্ববৈঠকে পাকিস্তানের নিরাপত্তা উপদেষ্টা তথা বিদেশমন্ত্রী সরতাজ আজিজকে বিদেশমন্ত্রী খুরশিদ জানালেন, হুরিয়ত নেতাদের সঙ্গে তাঁর সাম্প্রতিক বৈঠক কী ভাবে দু’দেশের মধ্যে আলোচনার পরিবেশকে বিষিয়ে দিয়েছে। নিয়ন্ত্রণরেখায় শান্তি আনার লক্ষ্যে শীঘ্র ডিজিএমও পর্যায়ে বৈঠকের দিন স্থির করা নিয়েও আলোচনা করলেন দু’দেশের বিদেশমন্ত্রী।
লোকসভা নির্বাচনের আগে এটাই ছিল শীর্ষ পর্যায়ে ভারত -পাক মুখোমুখি দ্বৈরথের শেষ ক্ষেত্র। কংগ্রেস হাইকম্যান্ডের পক্ষ থেকে তাই নির্দেশ ছিল, মনমোহন সিংহের পাক -নীতি নিয়ে বিপুল রাজনৈতিক ক্ষোভ নিরসনে এই সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে হবে। সরকারের তরফে দিন পুরোদমে সেই চেষ্টাই চালানো হয়। আসেম বিদেশমন্ত্রীদের সম্মেলনের শেষে সরতাজের সঙ্গে প্রায় আধ ঘণ্টা বৈঠক করেন খুরশিদ। এর পরে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা শিবশঙ্কর মেননও কথা বলেন তাঁর সঙ্গে। ভারতের উদ্বেগের জায়গাগুলিকে চিহ্নিত করে তাঁরা জানিয়ে দেন, দু’দেশের মধ্যে শান্তিপ্রক্রিয়ার পূর্বশর্তই হল নিয়ন্ত্রণরেখায় শান্তি সুস্থিতির পরিবেশ বজায় রাখা। ভারতের তরফে যে বিষয়গুলি নিয়ে তীব্র অসন্তোষ জানানো হয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে হুরিয়ত নেতাদের সঙ্গে সরতাজের বৈঠক, পাক অধিকৃত কাশ্মীরের উপর দিয়ে চিন -পাক অর্থনৈতিক করিডরের প্রস্তাব, মুম্বই হামলার চক্রীদের বিচার নিয়ে টালবাহানার মতো বিষয়গুলি।
পাক বিদেশমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের আগেই সাংবাদিকদের সামনে এসে খুরশিদ দিন ভারতের মেজাজ স্পষ্ট করে দেন। বৈঠকেও একই ভাবে সরব হন তিনি। হুরিয়তের সঙ্গে সরতাজের বৈঠককে দুর্ভাগ্যজনক আখ্যা দিয়ে খুরশিদ বলেন, “এই ধরনের পদক্ষেপে হিতে বিপরীত হয়।” নিয়ন্ত্রণরেখায় পাক সেনার আগ্রাসন এবং মুন্ডচ্ছেদের ঘটনায় এমনিতেই ঘরোয়া রাজনীতিতে অস্বস্তিতে রয়েছে কংগ্রেস। তার মধ্যে নিউ ইয়র্কে নওয়াজ শরিফের সঙ্গে মনমোহনের বৈঠক কার্যত অশ্বডিম্ব প্রসব করেছে বলে দাবি করছেন বিরোধীরা। একই মত উঠে আসছে কংগ্রেসের অন্দরেও। এরই মধ্যে রাজধানীর রাজনীতি তপ্ত হয়ে ওঠে হুরিয়ত -সরতাজ বৈঠকে।
এই পরিস্থিতিতে খুরশিদ আজ বলেছেন, “দেশবাসীর আবেগ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে কোনও আলোচনা করা যায় না। আলোচনার পরিবেশ গড়ে তোলার জন্য আমরা পাকিস্তানকে যথেষ্ট সাহায্য করেছি। দুর্ভাগ্যজনক ভাবে আমাদের দেশে সেই পরিবেশ গড়ে তোলার ক্ষেত্রে পাকিস্তানের কোনও ভূমিকা নেই।’’
বৈঠক শেষে বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র সৈয়দ আকবরউদ্দিন বলেন, “মুম্বই সন্ত্রাস নিয়ে সমস্ত নথি তথ্য পাওয়ার কথা পাকিস্তান স্বীকার করেছে। ভারত চাইছে যত দ্রুত সম্ভব বিচার শেষ করা হোক।” ডিজিএমও বৈঠক যাতে দ্রুত শুরু করা যায় তার জন্য সক্রিয়তা বাড়ানোর কথা জানিয়ে আকবরউদ্দিন বলেন, “সেনাপ্রধানের সঙ্গে কথা বলে আলোচনার তারিখ স্থির করা হবে।”
আসেমের মূল বৈঠকেও সন্ত্রাসবাদের প্রশ্নটিকে সামনে নিয়ে এনেছে ভারত। আফগানিস্তানের প্রসঙ্গে বিদেশমন্ত্রী বলেছেন, সে দেশের নিরাপত্তা এবং সুস্থিতির প্রশ্নে সব থেকে বড় চ্যালেঞ্জ সন্ত্রাসবাদ। ব্যাপারে আন্তর্জাতিক উদ্যোগ তৈরির ডাক দিয়েছেন খুরশিদ। শুধু আফগানিস্তানই নয়, গোটা বিশ্বের সামনে সন্ত্রাসই যে সবচেয়ে বড় বিপদ, এ কথা বারবার মনে করিয়ে দিয়েছে নয়াদিল্লি।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.