|
|
|
|
ফের কাঠগড়ায় বেপরোয়া অ্যাম্বুল্যান্স |
দেহ ফেলে পালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ |
নিজস্ব প্রতিবেদন |
শিলিগুড়ি শহরের পরে মালবাজারের মৌলানি বাজার। ফের দুর্ঘটনায় এক ব্যক্তির মৃত্যুকে ঘিরে অভিযোগ উঠল বেপরোয়া অ্যাম্বুল্যান্সের দিকে। রবিবার রাত ১১টা নাগাদ মালবাজারের ক্রান্তি ফাঁড়ির মৌলানি বাজার এলাকায় একটি দেহ ফেলে পালিয়ে যায় একটি অ্যাম্বুল্যান্স। কালীপুজোর জন্য তখনও রাস্তায় কিছু বাসিন্দা ছিলেন। সকলে ছুটে যান। তবে অ্যাম্বুল্যান্সটি ধরা যায়নি। সোমবার সকালে দেহটি শনাক্ত হলেও গাড়ি বা চালকের খোঁজ পায়নি পুলিশ। অন্য দিকে, শিলিগুড়িতে পুজোমণ্ডপের ভিড়ে অ্যাম্বুল্যান্সের ধাক্কার ঘটনায় আরও এক জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে ওই দুর্ঘটনায় মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল তিন। |
|
হরেন্দ্রনাথ সিংহের শোকার্ত পরিজনেরা। ছবি: দীপঙ্কর ঘটক। |
পুলিশ জানায়, মালবাজারের ক্রান্তি এলাকায় মৌলানি বাজারে যাঁর মৃত্যু হয়েছে তাঁর নাম হরেন্দ্রনাথ সিংহ (৫১)। তিনি ময়নাগুড়ির ব্রহ্মপুর সংলগ্ন সিংহপাড়া এলাকার বাসিন্দা। রবিবার সন্ধ্যা নাগাদ সাইকেলে বাড়ি থেকে দু’কিলোমিটার দূরে বাজারে বার হয়ে ওই চাষি আর ফেরেননি। রাতে পরিবারের লোকজন খোঁজ করতে বেড়িয়ে সার্ক রোডের পাশ থেকে তাঁর দুমড়ে যাওয়া সাইকেল উদ্ধার করেন। পাওয়া যায় চপ্পল। সেখানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে ছিল গাড়ির ‘ফগ লাইটে’র হলুদ কাঁচের কুচি। বাড়ির লোকজন রাতেই পুলিশকে জানান। অভিযোগ, পুলিশ রাতে তল্লাশিতে নামেনি। সার্ক রোডের পাশে বাড়ির সামনে বসে হরেন্দ্রনাথবাবুর স্ত্রী কুমুদিনীদেবী বলেন, “রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ প্রতিবেশী এক ব্যক্তি রাস্তায় সাইকেল পড়ে আছে দেখে বাড়িতে ঢুকে জানতে চান, তাঁর স্বামী ফিরেছেন কি না। তিনিই জানান, রাস্তার পাশে সাইকেল পড়ে আছে। মনে হচ্ছে সেটি হরেন্দ্রনাথবাবুর। তা শোনার পরে টর্চ নিয়ে গিয়ে ভাঙা সাইকেল দেখে টের পান ওটা তাঁদের।
যেখানে হরেন্দ্রনাথবাবুর সাইকেল পাওয়া গিয়েছিল সেখান থেকে মৌলানি বাজারের দূরত্ব প্রায় ৩০ কিলোমিটার। সেখানেই তাঁর দেহটি ছুড়ে ফেলা হয় বলে অভিযোগ। ঘটনাস্থলের কাছেই একটি বাড়িতে কালীপুজোর আয়োজন করা হয়েছিল। ওই পুজো কমিটির কর্মকর্তা পরেশচন্দ্র বিশ্বাস ঘটনার বিবরণ দিতে গিয়ে বলেন, “তীব্র গতিতে হুটার বাজিয়ে একটি সাদা রঙের অ্যাম্বুল্যান্স থামে। পেছনের দরজা খুলে দেহটিকে রাস্তা ফেলা হয়। দেহটি প্রায় ৫০ ফুট গড়িয়ে রাস্তার কিনারে চলে যায়। ঘটনা বুঝতে বেশ কিছুক্ষণ সময় লাগে।” ঘটনার খবরে বাজারে যান মৌলানি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান আফিজুদ্দিন আমেদ। তিনিই ক্রান্তি ফাঁড়িকে ফোন করে বিষয়টি জানান। রাতেই পুলিশ গিয়ে দেহটি নিয়ে যায়। কুমুদিনীদেবীর কথায়, “রাতেই পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। হাসপাতালে যোগাযোগ করা হয়। কিন্তু কোথাও খোঁজ পাইনি। সকালে পুলিশ খবর দেয় মৌলানি এলাকায় একটি দেহ পাওয়া গিয়েছে। ক্রান্তি ফাঁড়িতে রাখা আছে। এর পরে ছেলে বাপি সেখানে গিয়ে বাবাকে শনাক্ত করে।” জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপার অমিত জাভালগি বলেন, “অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলছে। কেমন করে ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে সেটা এখনই বলা সম্ভব নয়। আমরা সব দিক দেখছি।” মালবাজারের এসডিপিও অরিন্দম সরকার বলেন, “দেহ ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। এর পরে মৃত্যুর কারণ জানা যাবে।” অন্য দিকে, শিলিগুড়ির ঘটনায় সোমবার মৃত্যু হয় ভানু রায় (৩৫ ) নামে এক ব্যক্তির। রবিবার রাত ৮টা নাগাদ শিলিগুড়ির নকশালবাড়ি থানার স্টেশনপাড়ায় বেপরোয়া অ্যাম্বুল্যান্সের ধাক্কায় ২ জনের মৃত্যু হয়। জখম হন অন্তত ৩৫ জন। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে এখন চিকিৎসাধীন রয়েছেন ৪ জন। পুজোমণ্ডপের ভিড়ের মধ্যে দিয়ে চালক গাড়িটি চালানোয় এমন ঘটনা ঘটে। ওই সময়ে যান নিয়ন্ত্রণে কোনও পুলিশকর্মী ছিলেন না বলে বঅভিযোগ। কিছু এনসিসি স্বেচ্ছাসেবককে দিয়ে যান নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছিল। মালবাজারের বাসিন্দাদেরও অভিযোগ, কালীপুজোর রাত হওয়া সত্ত্বেও রাস্তায় পুলিশি নজরদারি ছিল না।
|
পুরনো খবর: পুজো মণ্ডপে অ্যাম্বুল্যান্সের ধাক্কায় মৃত ২ |
|
|
|
|
|