পুজো মণ্ডপে অ্যাম্বুল্যান্সের ধাক্কায় মৃত ২
ভিড়ে ঠাসা কালীপুজোর মণ্ডপের সামনে ভিড়ের মধ্যে আচমকা ঢুকে পড়ে একটি অ্যাম্বুলেন্স। তার ধাক্কায় মারা যান দুই মহিলা। রবিবার রাতে নকশালবাড়ি থানার স্টেশনপাড়া পাড়া এলাকায় এই ঘটনার পরে তড়িঘড়ি পালাতে গিয়ে চালক ধাক্কা দেন আরও বহু লোকজনকে। নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ঢুকে পড়ে স্থানীয় একটি বস্তিতেও। সব মিলিয়ে অন্তত ৩৫ জন গুরুতর আহত হয়েছেন। তাঁরা বেশিরভাগই নকশালবাড়ির বাসিন্দা। তাঁদের মধ্যে মহিলা এবং শিশুদের সংখ্যা বেশি। রাত পর্যন্ত ১৬ জনকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। বাকিদের নকশালবাড়ি হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে। অ্যাম্বুল্যান্সটিতে আগুন ধরিয়ে দেয় উত্তেজিত জনতা। চালক আহত হয়ে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, শহরের মধ্যে কালীপুজোয় পুলিশের ‘নো-এন্ট্রি’ উপেক্ষা গাড়িটি ঢুকল কী করে? ক্ষুব্ধ বাসিন্দাদের সামলাতে পুলিশকে হিমসিম খেতে হয়। পুলিশকে লক্ষ্য করে ঢিলও ছোড়া হয় বলে অভিযোগ। সেই সময় পুলিশ মৃদু লাঠিচার্জ করেও বলে অভিযোগ। দমকল গিয়ে শেষ পর্যন্ত আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। খবর পেয়ে পুলিশ-প্রশাসন এবং মেডিক্যাল কলেজের সুপারকে টেলিফোন করে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব।
গৌতমবাবু বলেন, “খুবই দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। ওই চালক সুস্থ অবস্থায় ছিলেন না বলে বাসিন্দারা অভিযোগ করেছেন। আইজি, পুলিশ সুপারকে ঘটনাস্থলে যেতে বলেছি। মেডিক্যাল কলেজে রক্ত-সহ সমস্ত প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র তৈরি রাখার জন্য বলেছি।” পুলিশ জানিয়েছে, মৃতদের একজনের নাম জবা সিংহ (২০)। তাঁর বাড়ি খড়িবাড়ি ব্লকের বাতাসি এলাকার খয়েরমণি গ্রামে। ঘটনাস্থলেই মারা গিয়েছেন তিনি। পরিবারের লোকজনের সঙ্গে পুজো দেখতে এসেছিলেন তিনি। আর একজন মৃতার নাম সুনীতা তামাঙ্গ (৩৫)। তাঁর বাড়ি নেপালের ঝাপা জেলায়। সুনীকার স্বামী বুদ্ধ তামাঙ্গ বলেন, “নকশালবাড়িতে এক আত্মীয়ের বাড়িতে স্ত্রী ঘুরতে এসেছিল। পুজো দেখতে বার হয়ে কী হল বুঝতে পারছি না।”
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, গাড়ির চালক মদ্যপ অবস্থায় থাকায় ঘটনাটি ঘটেছে। ওই অ্যাম্বুল্যান্সটি ত্রিহানা চা-বাগানের দিক থেকে নকশালবাড়ি স্টেশনপাড়া হয়ে ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কের দিকে যাচ্ছিল। নকশালবাড়ি ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ কর বলেন, “গাড়িটি ওই নো-এন্ট্রি এলাকায় কীভাবে ঢুকলে পড়ল তা বোঝা যাচ্ছে না। ওই তরুণীকে ধাক্কা মেরে পালানোর জন্য চালক বাকিদের ধাক্কা দেয়।” স্থানীয় বাসিন্দা সৌরদ্বীপ মিত্র বলেন, “ওই এলাকায় একটি বড় পুজো হয়। গ্রামের থেকে লোকজন ভিড় করেছিল। প্রচন্ড গতিতে গাড়িটি ভিড়ে ঢুকে পড়েছে বলে শুনেছি।”
দার্জিলিং জেলা পুলিশ সুপার কুনাল অগ্রবাল বলেন, “পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা চলছে।” উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন নকশালবাড়ির বাসিন্দা ভানু রায় বলেন, “পুজো দেখতে বার হয়েছিল। স্টেশনপাড়ার ওই ক্লাবের ভিড়ের মধ্যে চিৎকার চেঁচামেচি শুনি। এগিয়ে যেতেই অ্যাম্বুল্যান্সটি ধাক্কা মারে। ছিটকে রাস্তায় ধারে পড়ে।” ভানুবাবুর মাথায় এবং কোমড়ে চোট রয়েছে। রাতে মেডিক্যাল কলেজে যান মাটিগাড়া-নকশালবাড়ির কংগ্রেসের বিধায়ক শঙ্কর মালাকার এবং শিলিগুড়ির তৃণমূল বিধায়ক রুদ্রনাথ ভট্টাচার্য এবং তৃণমূল নেতা কৃষ্ণ পাল।






First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.