পাহাড়ি টোটকা দিয়েই পাহাড়-জয় করতে চাইছেন করিম বেঞ্চারিফা!
সমতলের সঙ্গে পাহাড়ের পার্থক্য হল জোড়া ‘দ’— দৌড় আর দম। কাল বুধবার লাজং এফসি ম্যাচে সেই ‘দ’-ই প্রধান অস্ত্র ওডাফা-মুরান্ডাহীন মোহনবাগান কোচের। সোমবার রাতে শিলং থেকে ফোনে করিম বলে দিলেন, “এখানকার ফুটবলারদের প্রচুর দম আর গতি। এখান থেকে তিন পয়েন্ট পেতে হলে প্রচুর দৌড়তে হবে আমাদের।” শুধু দৌড় নয়, লাজংকে আরও দু’টো জায়গায় এগিয়ে রাখছেন করিম। এক) মোহনবাগান ভাঙা দল নিয়ে নামলেও, লাজং পুরো টিম পাচ্ছে। দুই) ঘরের মাঠের সুবিধা ও শব্দব্রহ্ম। বাগানের মরক্কান কোচ বলেও দিলেন, “সমর্থকদের চিৎকার এবং আবহাওয়া দু’টো লাজংয়ের দিকে। ঘরের মাঠে পুরো শক্তি দিয়ে নামবে। একটু হলেও ওরা আমাদের থেকে এগিয়ে।”
লাজংয়ের কাছে ঘরের মাঠের সুবিধা থাকলে, বাগানের শক্তি রক্ষণের সংগঠন ও এক ঝাঁক প্রাণোচ্ছল ফুটবলার। দলের দুই প্রধান স্ট্রাইকার না থাকা সত্ত্বেও আগের তিনটে অ্যাওয়ে ম্যাচ থেকে ৭ পয়েন্ট নিশ্চিত করেছেন সাবিথ-ডেনসনরা। হারেননি একটি ম্যাচেও। ইস্টবেঙ্গল ম্যাচে নামার আগে তাই অপরাজিত থাকতে চাইছেন করিম। বলছিলেন, “টানা তিনটে অ্যাওয়ে ম্যাচ অপরাজিত আমরা। এই আত্মবিশ্বাসটাই দরকার ছিল। তবে লাজংয়ের পরিস্থিতির সঙ্গে গোয়া-পুণের অনেক পার্থক্য। সমতলে লড়াই ৫০-৫০ হয়। এখানে ৭০-৩০।” পাহাড়ের সঙ্গে সমানে সমানে লড়াই করতে সোমবার সকালের প্র্যাক্টিসে ফুটবলারদের ফিটনেসের দিকেই বেশি জোর দিলেন করিম। এ দিন আবার কলকাতায় এক হাসপাতালে এম আর আই করাতে গিয়েছিলেন এরিক মুরান্ডা। সেখানেই মোহনবাগানের নাইজিরিয়ান স্ট্রাইকার বললেন, “আশা করছি বড় ম্যাচের আগে ফিট হয়ে যাব।”
লাজং-বধের চিন্তার মধ্যেই করিম আবার উচ্ছ্বসিত জাতীয় দলের নির্বাচন নিয়ে। সোমবার ফিলিপাইন্স ও নেপালের সঙ্গে দু’টি আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচ খেলার জন্য যে ২১ জনের দল ঘোষণা করা হয়েছে, তাতে বাগান কোচের হাতে তৈরি করা ফুটবলারের সংখ্যাই নাকি বেশি। করিমের দাবি, “চার্চিল, সালগাওকর এবং মোহনবাগানের প্রচুর ফুটবলার জাতীয় দলে সুযোগ পেয়েছে। নিকোলাও, ফ্রান্সিস, অ্যান্টনি পেরিরার মতো ফুটবলাররা আমার কোচিংয়েই প্রথম জাতীয় দলে সুযোগ পায়। তবে কিংশুকের দলে থাকা উচিত ছিল।”
এ দিকে, টানা ম্যাচ জিতে মোহনবাগান যখন আত্মবিশ্বাসে ভরপুর, মহমেডান কোচ তখন শহরে ঘর গোছাতে ব্যস্ত। আবদুল আজিজ বলছিলেন, “আমাদের নতুন করে শুরু করতে হবে। দলের যা সম্পদ আছে, তাতে কোনও কিছুই অসম্ভব নয়।” আজিজ ‘সম্পদ’-এর কথা বললেও, সেটা কি মাঠে আদৌ সঠিক ভাবে ব্যবহার করছেন সাদা-কালো কোচ? ফরোয়ার্ডে জোসিমার গোল পেলেও টোলগে চূড়ান্ত ব্যর্থ। অস্ট্রেলিয়ান স্ট্রাইকারের বদলে দীপেন্দু বিশ্বাস কিংবা অসীম বিশ্বাসের মতো বঙ্গসন্তানদেরও তো দু’একটা ম্যাচে ঝালিয়ে নিতে পারেন? জোরির চোটও চিন্তায় রেখেছে মহমেডানকে। তবে সুখবর একটাই, দলের তারকা মিডিও পেন ওরজি এখন ম্যাচ ফিট। বুধবার ঘরের মাঠে মুম্বই এফসি ম্যাচেও তিনি খেলবেন।
|