জেসপ কারখানা বন্ধ করতে চেয়ে রাজ্য সরকারকে চিঠি দিয়েছিলেন সংস্থা কর্তৃপক্ষ। এই নিয়ে আলোচনার জন্য ৮ নভেম্বর ত্রিপাক্ষিক বৈঠক ডাকল শ্রম দফতর। সরকার যে কারখানা বন্ধ করে দেওয়ার ওই চিঠি মানবে না, তা এ দিন স্পষ্ট করে দেওয়ার পাশাপাশি শ্রমমন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসু অভিযোগ করেন, রেলের কাছ থেকে বিনামূল্যে পাওয়া বিপুল কাঁচামাল বিক্রি করে দিয়েছে সংস্থাটি। এই অভিযোগ অবশ্য অস্বীকার করা হয়েছে সংস্থার তরফে।
শ্রমমন্ত্রী সোমবার বলেন, “জেসপ কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে যে চিঠি আমি পেয়েছি, সেটা ‘ক্লোজার’ নোটিস বলে সরকার মানছে না। কারণ, ক্লোজার নোটিস ৬০ দিন আগে দিতে হয়।”
পূর্ণেন্দুবাবু জানান, বৈঠকে শ্রমিক ইউনিয়ন, মালিকপক্ষ এবং শ্রম দফতরের অফিসারদের সঙ্গে কেন্দ্রীয় ভারী শিল্প মন্ত্রকের প্রতিনিধিদেরও ডাকা হচ্ছে। কারণ, জেসপ কারখানায় ওই মন্ত্রকের অংশীদারিত্ব রয়েছে। তাঁর অভিযোগ, “রুইয়া গোষ্ঠী যে কৌশলে ডানলপের উৎপাদন বন্ধ করেছে, সেই ভাবে জেসপও বন্ধ করতে চাইছে।”
জেসপের দেওয়া চিঠির উল্লেখ করে শ্রমমন্ত্রী জানান, এক দিকে কারখানা বন্ধ করে দেওয়ার কথা বলা হচ্ছে। অন্য দিকে ৫০% কর্মী ছাঁটাইয়ের শর্তে মাসে চারটি ওয়াগন এবং ১৫টি রোড রোলার তৈরির কথা বলছেন কর্তৃপক্ষ! ১২৫ কোটি টাকার বরাত পাওয়া সত্ত্বেও কেন কর্তৃপক্ষ কারখানার উৎপাদন বন্ধ করতে চাইছেন, সেই প্রশ্ন তুলে পূর্ণেন্দুবাবু বলেন, “আগামী ছ’মাস কারখানা কী ভাবে চলবে, তার ‘রোডম্যাপ’ চেয়েছি কর্তৃপক্ষের কাছে।”
জেসপের হাতে ৭১ একর জমি রয়েছে। ৬৭৫ জনের মতো কর্মী কাজ করেন। রেল এই কারখানাকে ওয়াগন এবং রোড রোলার তৈরির কাঁচামাল বিনামূল্যে সরবরাহ করে বলে দাবি শ্রমমন্ত্রীর। গত ছ’বছরে প্রায় দেড়শো কোটি টাকার সেই সব সামগ্রী বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। পূর্ণেন্দুবাবুর কথায়, “এ ছাড়াও ব্যাঙ্ক থেকে ১০০ কোটি টাকা ঋণ নিয়ে তা কারখানার কাজে লাগাননি কর্তৃপক্ষ। শ্রম দফতরের অফিসারদের বলেছি, জেসপের বিরুদ্ধে কী কী মামলা চলছে তার নথি বের করতে।” তাঁর দাবি, কর্মীদের পিএফ, ইএসআই এবং গ্র্যাচুইটি বাবদ প্রায় ১৫ কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে।
শ্রমমন্ত্রীর সব অভিযোগই অস্বীকার করেছেন জেসপ কর্তৃপক্ষ। পবন রুইয়া গোষ্ঠীর ভাইস প্রেসিডেন্ট ধ্রুবজ্যোতি নন্দী বলেন, “রেলের বরাত আমাদের কাছে আছে। কিন্তু কোনও যন্ত্রাংশই আমরা বিনা পয়সায় পাই না। সে জন্য ব্যাঙ্ক-গ্যারান্টি দিতে হয়। আর কোনও কিছুই বিক্রি করা হয়নি। মাননীয় মন্ত্রী যা অভিযোগ করেছেন, তা তিনি দয়া করে প্রমাণ করে দেখান।”
|