এখনই হাত বদল হচ্ছে না ব্ল্যাকবেরি।
কথা ছিল, ধুঁকতে থাকা এই স্মার্ট ফোন বহুজাতিককে শেয়ার-পিছু ৯ ডলার দরে কিনে নেবে ভারতীয় বংশোদ্ভুত প্রেম বৎসের সংস্থা ফেয়ারফ্যাক্স ফিনান্সিয়াল হোল্ডিংস। এ জন্য মোট ৪৭০ কোটি ডলার উপুড় করবে কানাডার বিমা ও আর্থিক পরিষেবা সংস্থাটি। কিন্তু অন্তত এখনকার মতো সেই পরিকল্পনা বাতিল করতে বাধ্য হচ্ছে ব্ল্যাকবেরি। তার বদলে যে সব আর্থিক সংস্থার হাতে ব্ল্যাকবেরির শেয়ার রয়েছে, তাদের কাছ থেকে ডিবেঞ্চারের (ঋণপত্র) মাধ্যমে ১০০ কোটি ডলার তুলবে তারা। ঢেলে সাজার চেষ্টা হবে সংস্থাকে। সরিয়ে দেওয়া হবে সিইও থর্স্টেন হেইনস-কেও।
বিদায়ী সিইও হেইনস।
ছবি: রয়টার্স।
|
এখনকার মতো সেই দায়িত্ব সামলাবেন জন শেন। ওয়াকিবহাল মহল মনে করছে, ফেয়ারফ্যাক্সের নেতৃত্বাধীন কনসোর্টিয়াম নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে ৪৭০ কোটি ডলার জোগাড় না-করতে পারার কারণেই বিক্রি থমকে গেল ব্ল্যাকবেরির। তবে তাঁদের মতে, অদূর ভবিষ্যতে হাত বদলের পথ খোলা রেখেই এ দিনের ঘোষণা করেছে তারা। যেমন, টাকা জোগাড়ের জন্য যে ১০০ কোটি ডলারের ডিবেঞ্চার তারা ছাড়বে, সংস্থার বৃহত্তম অংশীদার হওয়ার দৌলতে তার মধ্যে ২৫ কোটি ডলারের ঋণপত্র কিনবে ফেয়ারফ্যাক্সই। সব মিলিয়ে প্রায় ১০০ কোটি ডলার লগ্নি করতে পারে তারা। অনেকে আবার মনে করছেন, পরে ওই ডিবেঞ্চার শেয়ারে বদলে নেওয়ার সুযোগ খোলা রাখা হবে। সংস্থার লিড ডিরেক্টর করা হয়েছে প্রেম বৎসকেই।
শুধু তা-ই নয়। ফেয়ারফ্যাক্সের পরিকল্পনায় জট বাঁধতেই ভেসে উঠছে অনেক নতুন সম্ভাব্য ক্রেতার নাম। কেউ কেউ বলছেন, এ বার ব্ল্যাকবেরি হাতে নিতে আগ্রহ দেখাতে পারে চিনা সংস্থা লেনোভো। শোনা যাচ্ছে গুগ্ল এবং কোয়ালকম-এর কথা। জল্পনায় রয়েছেন অ্যাপলের প্রাক্তন সিইও জন স্কালি-ও। কারণ, এক সময় অ্যাপল থেকে স্টিভ জোবসকে ‘তাড়ানো’ স্কালি না কি ব্ল্যাকবেরি কিনতে আগ্রহী। তবে এখনকার মতো বিক্রি হচ্ছে না কানাডীয় এই স্মার্ট ফোন নির্মাতা সংস্থাটি।
উল্লেখ্য, মোবাইলে প্রথম ই-মেল পরিষেবা চালু করে ব্ল্যাকবেরি। সেই অর্থে স্মার্ট ফোনের পথিকৃৎ তারাই। কিন্তু পরে অ্যাপলের আই ফোন, গুগ্লের অ্যান্ড্রয়েড এবং তা ব্যবহার করে স্যামসাংয়ের নিত্য-নতুন উদ্ভাবনের সঙ্গে অনেক দিন ধরেই প্রতিযোগিতায় এঁটে উঠতে পারছিল না তারা। ক্রমশ হাতছাড়া হচ্ছিল বাজার। লোকসানের বোঝা কমাতে সংস্থা বাধ্য হচ্ছিল বিপুল সংখ্যায় কর্মী ছাঁটাই করতেও। এই পরিস্থিতিতেই ব্ল্যাকবেরিকে কিনে নেওয়ার প্রস্তাব দেয় প্রেম বৎসের ফেয়ারফ্যাক্স। কানাডার ওয়ারেন বাফে হিসেবে খ্যাত বৎস জানান, দীর্ঘ মেয়াদে ব্ল্যাকবেরির ঘুরে দাঁড়ানোর সম্ভাবনা উজ্জ্বল বলেই এই বিনিয়োগ করতে আগ্রহী তাঁরা। কিন্তু আপাতত তার জন্য প্রয়োজনীয় টাকা জোগাড়ে জটিলতা তৈরি হওয়ার কারণেই সম্ভবত এখনকার মতো থমকে গেল ব্ল্যাকবেরির সেই হাতবদল। |