ঝুলন্ত সেতুর ফাটলে তৈরি হয়েছে মরণ ফাঁদ। পানীয় জলের জন্য তৈরি জলাধার থেকে স্ট্যান্ড পোস্ট বিকল হয়ে রয়েছে। বনভোজনকারীদের জন্য নির্দিষ্ট জায়গায়ও আগাছার জঙ্গলে ভরে গিয়েছে। সঠিক রক্ষণাবেক্ষণ না হওয়ায় কচুরিপানায় ভরে গিয়েছে গোটা রসিকবিলের টলটলে জল। শীতের মুখে পর্যটন মরসুমের শুরুতে এমন অব্যবস্থায় ধুঁকছে কোচবিহারের রসিকবিল পর্যটন কেন্দ্র। রসিকবিলকে কেন্দ্র করে দেহ ব্যবসার একটি চক্রও সক্রিয় হয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ করেছেন বাসিন্দারা। কোচবিহারের ডিএফও কৌশিক সরকার বলেন, “একশো দিনের কাজ প্রকল্পে রসিক বিলের জলাশয়ের কচুরিপানা সাফাই করানো হবে। এক মাসের মধ্যে ওই কাজ শুরু করা যাবে আশা করছি। সেতু সংস্কারে পরিকল্পনা বর্হিভূত খাত থেকে বরাদ্দ দেওয়া হবে। জলের সমস্যা মেটানো হবে। জু অথরিটির কাছে ৪৩ লক্ষ টাকা চাওয়া হয়েছে।” তবে পর্যটন কেন্দ্রকে ঘিরে ওঠা দেহ ব্যবসার অভিযোগ নিয়ে কোনও রকম মন্তব্য করতে চাননি বনকর্তারা। তবে রাজ্যের পূর্ত দফতরের পরিষদীয় সচিব রবীন্দ্রনাথ ঘোষ এই প্রসঙ্গে বলেন, “রসিকবিলের ব্যাপারে অনেক অভিযোগ শুনেছি। বনমন্ত্রী ও সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলব।” তুফানগঞ্জ ২ পঞ্চায়েত সমিতি সভাপতি স্বপন সাহা জানান, তিনি খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন। |
বিপজ্জনক সেতু। ছবি: হিমাংশুরঞ্জন দেব। |
বন দফতর সূত্রেই জানা গিয়েছে, কোচবিহারের রসিকবিল জলাশয় মোট ৫০২ হেক্টর এলাকা। সেখানে রয়েছে রাইচেংমারি, বোচামারি ও নলবোনার মত তিনটি বিল। সব মিলিয়ে বিশাল জলাভূমি রসিকবিল নামে পরিচিতি লাভ করেছে। ফি বছর শীত জাঁকিয়ে পড়লে দেশ বিদেশের হাজারো পাখির ভিড় জমে। সেখানে রসিকবিলের ওই পাখির টানে সেখানে মূলত সেখানে পর্যটকদের আনাগোনা শুরু হয়। পরে জলাভূমিকে কেন্দ্র করে মিনি চিড়িয়াখানা গড়ে ওঠে। চিতাবাঘ, হরিণ, পাইথন, ঘড়িয়াল উদ্ধার কেন্দ্র ছাড়াও পাখিরালয় অন্যতম আকর্ষণ।
পিকনিকের মরসুমেও সেখানে ব্যাপক ভিড় হয়। বর্তমানে সেখানকার জলধারা অকেজো। পানীয় জলের স্ট্যান্ড পোস্ট আগাছায় ঢাকা। চারটি টিউবওয়েল থাকলেও জল খাওয়ার অযোগ্য। বনভোজনের জন্য নির্ধারিত এলাকা আগাছায় ভরেছে। বেহাল ঝুলন্ত সেতু পারাপারে দুর্ঘটনা ঘটছে। সঙ্গে বাসিন্দাদের অনেকের অভিযোগ, মিনি চিড়িয়াখানার এলাকাকে কেন্দ্র করে দেহ ব্যবসার রমরমা চলছে। কিছু দিন আগে পুলিশ ওই মিনি জু লাগোয়া এলাকার একটি অতিথি নিবাস থেকে দেহ ব্যবসার অভিযোগে মহিলা সহ কয়েকজনকে গ্রেফতার করে। এই ব্যাপারে কোচবিহারের পুলিশ সুপার অনুপ জায়সবাল বেলেছেন, “ওসিকে এই সংক্রান্ত অভিযোগগুলি খতিয়ে দেখে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে বলব।” |