তেন্ডুলকরের শেষ নির্বাচনের বেদনা তো সমস্ত ক্রিকেটপ্রেমীর মতো আমাকেও কষ্ট দিচ্ছে। ৩১ অক্টোবর, ২০১৩-র পর আর কোনও দিন ভারতের দল নির্বাচনে সচিন তেন্ডুলকর নামটা উঠবে না!
কিন্তু এটাও বেদনাদায়ক যে, সচিনের ‘ফেয়ারওয়েল’ সিরিজের দল নির্বাচনকেও একেবারে ন্যায্য বলতে পারছি না। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে টেস্ট ম্যাচের জন্য ভারতের পনেরো জনের দলটা আমার মতে ধোনির টিম!
না হলে ইশান্ত শর্মা এর পরেও কী ভাবে টেস্ট দলে থাকে? গত দু’বছর ধরে এক ইনিংসে তিনটে উইকেটও তুলেছে কি না সন্দেহ। এটা ঠিক যে, মাঠে অধিনায়ককেই দলটাকে চালাতে হয়। কিন্তু তাই বলে ক্যাপ্টেন নিজের পছন্দের যাকে-তাকে দলে রাখবে সেটাই বা কী করে মেনে নেওয়া যায়? তা ছাড়া, ইশান্ত শুধুই বোলার। বিন্দুমাত্র ব্যাটের হাত নেই। অতিসাধারণ ফিল্ডার। শুধু বোলার হিসেবেই (তাও এই মুহর্তে চূড়ান্ত অফ ফর্মে) টেস্ট দলে নিবার্চন তা-ই আরও বেশি আশ্চর্যের!
অনেকে বলতে পারেন, এটা ধোনির টিম-ই হলে, সুরেশ রায়না-ও তো সুযোগ পেত। ধোনি-শ্রীনি-সিএসকে কম্বিনেশনের সুবাদে। এ ব্যাপারে আমার ব্যাখ্যা, ব্যাটিং বিভাগে একটাই জায়গা খালি ছিল, যেখানে রায়না বা রোহিত শর্মার মধ্যে এক জন ঢোকে। রোহিত সেই আইপিএল থেকে চলতি অস্ট্রেলিয়া সিরিজ সীমিত ওভারের ক্রিকেটে এত ভাল ব্যাট করে চলেছে যে, এর পরেও ওকে টেস্ট দলে না নিলে মিডিয়ায় সমালোচনার ঢেউ বয়ে যেত। তবে এখানেও একটা কথা বলব ওয়ান ডে-তে ওপেন করা আর টেস্টে ওপেন করা এক জিনিস নয়। টিমটা দেখলে মনে হবে রোহিত মিডল অর্ডার স্লটে ঢুকেছে। কিন্তু যেহেতু শিখর ধবন আর মুরলী বিজয় বাদে পনেরো জনের দলেও আর কোনও স্পেশ্যালিস্ট ওপেনার নেই, সে জন্য আমি অন্তত রোহিতকে তৃতীয় ওপেনার হিসেবেই ধরব। |
দলছুট চার সিনিয়র ক্রিকেটার সহবাগ, গম্ভীর, জাহির, হরভজনের কেউই এই সিরিজে প্রত্যাবর্তন ঘটাতে পারল না। সহবাগ-গম্ভীর শেষ কয়েক মাসে ইন্ডিয়া ‘এ’র হয়ে বা ঘরোয়া ক্রিকেটে এমন কিছু করেনি যে, জাতীয় দলে ফিরে আসবে। হরভজন রঞ্জিতে পঞ্জাবের প্রথম ম্যাচে ন’উইকেট নিলেও অশ্বিনের অফ স্পিনের উপরই এখনও ধোনির বেশি আস্থা। এখানেও সেই ক্যাপ্টেন’স চয়েস! তবে জাহিরের ডাক পাওয়া উচিত ছিল। সবচেয়ে বড় কথা, এই দলের পেস অ্যাটাকে অভিজ্ঞতার অভাব। জাহির থাকলে যেটা অনেকটা ঢাকা পড়ত। জাহির আমার মতে দক্ষিণ আফ্রিকায় যাবেই। সেক্ষেত্রে ওকে তো তার আগে আরওই বেশি করে ঘরের মাঠে একটা টেস্ট সিরিজে খেলিয়ে ছন্দে আনা উচিত ছিল নির্বাচকদের। থুড়ি, ধোনির!
ইচ্ছে করেই সবার শেষে সামির নির্বাচন প্রসঙ্গে ঢুকছি। আমার মতে নির্বাচিত চার জন পেসারের মধ্যে সেরা হল বাংলার মহম্মদ সামি। ১৪০ কিলোমিটারে ওয়ান ডে-তেই বল করছে এখন। টেস্টে স্বভাবতই আক্রমণাত্মক ফিল্ড প্লেসিং পেলে বলের গতি আরও বাড়বে। বল মুভ করাতে পারে। খানিকটা ব্যাটও করতে পারে। ভারত ‘এ’-র হয়ে লোয়ার অর্ডারে নেমে বিদেশ সফরেও কয়েকটা গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলেছে।
ধোনিকে যত দূর চিনি, ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধেও টেস্টে ও ছয় স্পেশ্যালিস্ট ব্যাটসম্যান, সাতে নিজে তার পর দুই+দুই কম্বিনেশনে চার জন বোলার নিয়ে নামবে। স্পিনার জুটি অশ্বিন-ওঝা তো বটেই। আমি মনে করি ইডেনে পেস জুটি হতে চলেছে ভুবনেশ্বর-সামি।
যে মাঠের প্রতিটা ঘাস চেনে সামি, সেখানে তাকে বসিয়ে রাখতে অসমসাহসী ধোনিও হয়তো একবারের জায়গায় দু’বার ভাববে! |
ডাকটিকিটে মাস্টার ব্লাস্টার
সংবাদ সংস্থা • মুম্বই |
সচিন তেন্ডুলকরের বিদায়ী টেস্ট ঘিরে আয়োজনের সমারোহে নতুন সংযোজন হল ডাকটিকিট!
সচিনের দু’শোতম টেস্ট এবং অবসরের মুহূর্তকে চিরস্মরণীয় করে রাখার লক্ষ্যে ক্রিকেট কিংবদন্তির ছবি সংবলিত নতুন ডাকটিকিট প্রকাশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মুম্বই ক্রিকেট সংস্থা। ওয়াংখেড়েতে সচিন তাঁর শেষ টেস্ট ম্যাচ খেলতে নামার ঠিক আগে আনুষ্ঠানিক ভাবে এই ডাকটিকিট প্রকাশ করা হবে। যার পরেই শুরু হবে সচিনকে নিয়ে ভারতীয় বোর্ড ও এমসিএ-র যুগ্ম উপস্থাপনা।
মুম্বই ক্রিকেট সংস্থার তরফে আজ ডাকটিকিটের কথা জানানোর সঙ্গে বলা হয়েছে, ঐতিহাসিক এই টেস্ট ম্যাচের টসও হবে একটি বিশেষ মূদ্রার ব্যবহার করে। পরে ওই মূদ্রাটি বিশেষ ভাবে সংরক্ষণ করবে এমসিএ। এ ছাড়াও একটি চৌঁষট্টি পাতার বিশেষ সচিন সংখ্যা প্রকাশ করা হচ্ছে। সেই পত্রিকায় স্থান পাচ্ছে সচিনকে নিয়ে বিভিন্ন পেশার নামীদের লেখা ও মন্তব্য। এমসিএ ও বোর্ড সদস্যদের হাতে বিশেষ মূদ্রা ও পত্রিকার কপি তুলে দেওয়া হবে। এমসিএ জানিয়েছে, টেস্টের প্রত্যেক দিন ওয়াংখেড়ের বিভিন্ন স্ট্যান্ডে দর্শকদের মধ্যে ১০ হাজার সচিন-মুখোশ, ১০ হাজার স্কোর কার্ড এবং সচিনের ছবি লাগানো দশ হাজার টুপি বিলোনো হবে। |
পুরনো খবর: টসের সচিন-স্বর্ণমুদ্রা উপহার মাস্টারকে |
|