তেলের বরাদ্দ না থাকায় গত তিন মাস ধরে রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতালের রক্ত সরবরাহকারী ব্লাড ট্রান্সপোর্টেশন ভ্যান পড়ে রয়েছে বলে অভিযোগ। এতে জেলার বিভিন্ন এলাকায় রক্তদান শিবির থেকে রক্ত সংগ্রহ করতে গিয়ে ব্লাডব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ সমস্যায় পড়ছেন। অভিযোগ, এতে শিবিরগুলি থেকে সীমিত সংখ্যার বেশি ইউনিট রক্ত সংগ্রহ করতে পারছেন না ব্লাড ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ। ভ্যানের অভাবে মাঝেমধ্যেই রক্তদান শিবির বাতিল হয়ে যাচ্ছে।
উত্তর দিনাজপুরের উপ-মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক দেবাশিস মন্ডল ওই ভ্যানটির দেখভালের দায়িত্বে রয়েছেন। তিনি বলেন, “রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর চলতি বছর ভ্যানের জ্বালানির টাকা বরাদ্দ না দেওয়ায় জ্বালানি তেলের অভাবে সেটি ব্যবহার করা যাচ্ছে না। সমস্যার কথা রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের জানিয়েছি। সমস্যা মিটবে।” |
তেলের অভাবে তিন মাস ধরে পড়ে রয়েছে ‘রক্ত’যান। |
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, ২০০৮ সালে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে প্রায় ১৫ লক্ষ টাকা খরচে ওই ভ্যানটি বরাদ্দ করে। জেলা স্বাস্থ্য দফতর চাহিদা অনুযায়ী ওই ভ্যানে নিয়মিত জ্বালানি তেল সরবরাহ করত। গত জুলাই মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে বরাদ্দ না থাকায় তা বন্ধ করে দেয় জেলা স্বাস্থ্য দফতর। বিভিন্ন শিবির থেকে রক্ত সংগ্রহের পর তা সংরক্ষণের জন্য ওই ভ্যানটিতে একটি ‘হাইলি রেফ্রিজারেশন ফ্রিজ’ রয়েছে।
প্রতি মাসে গড়ে ৩০টি রক্তদান শিবির থেকে প্রায় এক হাজার ইউনিট রক্ত সংগ্রহ করেন ব্লাড ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি, প্রতিমাসে গড়ে রোগীদের সাড়ে ৯০০ ইউনিট রক্ত সরবরাহ করা হয়। শিবির থেকে রক্ত সংগ্রহ করার পর ব্লাডব্যাঙ্কে পাঠানোর আগে পর্যন্ত ওই ভ্যানে ৯ ঘন্টা পর্যন্ত রক্ত সংগ্রহ করার ব্যবস্থা রয়েছে। ব্লাডব্যাঙ্ক কর্মীদের কয়েকজন জানান, এখন হাসপাতালের একটি অ্যাম্বুল্যান্সে করে রক্তদান শিবিরে যেতে হচ্ছে। রক্ত সংগ্রহের তিনঘন্টার মধ্যে হাইলি রেফ্রিজারেশন ফ্রিজে তা ঢুকিয়ে সংরক্ষণের নিয়ম। এখন ভ্যানটি না থাকায় তাই সরাসরি ওই সময়ের মধ্যে রক্ত ব্ল্যাড ব্যাঙ্কে আনতে হচ্ছে। স্বাস্থ্য দফতরের কয়েকজন অফিসার জানান, এতে সীমিত সময়ে ২০-২৫ ইউনিটের বেশি রক্ত সংগ্রহ করা সম্ভব হচ্ছে না। গত সপ্তাহে ৫টি রক্তদান শিবিরে ৪৫ জনের রক্ত নিতে পারেননি ব্লাডব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ। ভ্যানের অভাবে প্রতিদিন একটির বেশি রক্তদান শিবির থেকে রক্ত সংগ্রহ করা যাচ্ছে না। সেইকারণে, গত একমাসে ২২টি শিবির বাতিল করে দিতে হয়েছে। হাসপাতাল সুপার সোমনাথ চট্টোপাধ্যায় ও ব্লাড ব্যাঙ্কের আধিকারিক প্রদীপ মণ্ডল বলেন, “বহু বার স্বাস্থ্য-কর্তাদের জানিয়েছি।” |