|
|
|
|
|
|
|
পুস্তক পরিচয় ৩... |
|
দুটি ধারা প্রতিস্পর্ধী, পরিপূরক নয় |
‘ব্রিটিশ একটি ছেলে, ডেভিস, কম্প্যারেটিভ লিটারেচার পড়ছে এখানে।... ডেভিসের সঙ্গে অনেকক্ষণ কথা ছন্দ নিয়ে। জানে অনেকটা। ‘এপার গঙ্গা ওপার গঙ্গা’ শুনে খুব মুগ্ধ। আওড়ালও খানিকটা। বলতে চায়, সব ভাষাতেই আদিবাসীরা এইরকম সহজ সমান ভাগে ছন্দ ভাগ করে থাকে। আমাদের ছন্দের সিলেবিক প্যাটার্নটা বুঝতে চেষ্টা করে। আবার কখনো আসবে কথা দিচ্ছে, ছন্দ বিষয়ে কথা বলবার জন্য। ওর মুখে বাংলা উচ্চারণের চেষ্টা দেখে খুব মজা পাচ্ছে ওর বান্ধবী ইন্দিরা।’ শঙ্খ ঘোষ লিখছেন তাঁর ‘আয়ওয়ার ডায়েরি’তে। ১৯৬৭-’৬৮-তে আয়ওয়া থাকার সময়ে প্রায় প্রতিদিনই টুকটাক লিখে রাখতেন দিনযাপনের খবর। এই প্রবাসস্মৃতি নিয়ে একটি বইও আছে তাঁর: ঘুমিয়েপড়া অ্যালবাম। তবে এ ডায়েরি অনেকটাই আলাদা, বেরল কবিসম্মেলন-এর (সম্পা: শ্যামলকান্তি দাশ) শারদীয় সংখ্যায়। বহুবিধ রচনাতেই ঋদ্ধ পত্রিকাটি। সঙ্গে রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা বা ধৃতিমান চট্টোপাধ্যায়ের মতো শিল্পীদের সাক্ষাৎকার। রণজিৎ দাশের ভ্রমণ: ‘কবির বেশে ক্রোয়েশিয়া দেশে’। কাব্যপত্র প্রতীতি-র (সম্পা: গৌতম হাজরা) শারদ সংখ্যায় অফুরান কবিতার সঙ্গে কিছু ভাল প্রবন্ধও। নতুন গল্পপত্র-এ (সম্পা: শংকর চক্রবর্তী) মহাশ্বেতা দেবী, নবনীতা দেবসেনের সাক্ষাৎকারের সঙ্গে শরৎকুমার মুখোপাধ্যায়ের গল্পভাবনা, গল্প ও অনুবাদ-গল্প।
শারদীয় পরিচয়-এ (সম্পা: বিশ্ববন্ধু ভট্টাচার্য) রতন খাসনবিশের উত্তরআধুনিকতা ও মার্কসবাদ বইটি নিয়ে শোভনলাল দত্তগুপ্ত তাঁর ‘মার্কসবাদ ও উত্তরআধুনিকতা: এক মহাবিতর্কের পুনর্বিশ্লেষণ’-এ লিখছেন: ‘দুটি বিষয় সম্পর্কে কিছুটা মানসিক প্রস্তুতি দরকার। তার একটি হলো মার্কসবাদের চিরাচরিত অনুশীলিত ভাষ্যটিকে আপ্তবাক্যের স্বীকৃতি না দিয়ে খোলা মনে বিচার করা। অপরটি হলো মূল স্রোতের বাইরে অবস্থান যে মার্কসবাদী চিন্তকদের, যেমন রোজা লুকসেমবুর্গ, গ্রামশি, লুকাচ, বুখারিন, রায়া দুনায়েভস্কায়া প্রমুখের তত্ত্বভাবনাকে মান্যতা দেওয়া। এই দুটি ধারা বহুলাংশেই একে অপরের প্রতিস্পর্ধী, পরিপূরক নয়...।’ অন্য দিকে ‘আঠার শতকের শেষ পঁচিশ-তিরিশ বছরে নতুন কলকাতায় কবিগান, আখড়াই গান, হাফ আখড়াই গানের আসর ছিল প্রধান নাগরিক সংস্কৃতির ঘটনা। এই অনুষ্ঠানগুলির কতকগুলি বড় বৈশিষ্ট্য ছিল। এগুলি যাঁরা তৈরি করতেন, আসরস্থ করতেন তাঁরা গ্রামসমাজের বর্ণভেদ-নির্ভর বিন্যাস থেকে মুক্ত ছিলেন।’ লিখেছেন দেবেশ রায় তাঁর ‘শোনা যায়, সাব-অলটার্নকে?’ প্রবন্ধটিতে। মঞ্চায়নের পটভূমিতে নিম্নবর্গীয় বিষয়ভাবনা নিয়ে লিখেছেন চন্দন সেনও। গণেশ পাইনের শেষ পর্বের ছবি নিয়ে মৃণাল ঘোষ, আর শিক্ষা-সংস্কৃতি নিয়ে সৌরীন ভট্টাচার্য দীপেন্দু চক্রবর্তী আশীষ লাহিড়ী সুদেষ্ণা চক্রবর্তী অভ্র ঘোষ সাধন চট্টোপাধ্যায় শ্যামল চক্রবর্তী। দ্বিজেন্দ্রলাল রায় আর মীর মশাররফ হোসেনের সাহিত্যসৃষ্টির পুনর্মূল্যায়ন শিবব্রত চট্টোপাধ্যায় ও সুমিতা চক্রবর্তীর কলমে।
হাটেবাজারে পত্রিকা’য় (সম্পা: মিতা চক্রবর্তী) পঙ্কজ পাঠকের উপন্যাস ‘তখন বঙ্কিমচন্দ্র’-এ পাঠক খুঁজে পাবেন শৈশব-বয়ঃসন্ধির ভিতর দিয়ে বেড়ে-ওঠা যৌবনে উপনীত ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট বঙ্কিমের মনের নানান বাঁক। প্রবন্ধাদির মধ্যে উল্লেখ্য সঞ্জীব চক্রবর্তীর ‘বর্ধমানের খ্রিষ্টান ফলকলিপি’। |
|
|
|
|
|