কাঁসাইয়ের বাঁধ পরিদর্শনে সেচমন্ত্রী
ডিভিসি কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত জল ছাড়ার অভিযোগ আগেই তুলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধায়। এ বার রাজ্যের সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় ওড়িশা ও ঝাড়খণ্ডকে বেশি জল ছাড়ার জন্য দুষলেন। বন্যা কবলিত এলাকার পরিস্থিতি পর্যালোচনা করতে শুক্রবার পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসকের অফিসে এক বৈঠকের পর সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘এ বার ঝাড়খণ্ড ও ওড়িশা থেকে আমাদের রাজ্যে বিপুল পরিমাণ জল এসেছে। বিভিন্ন ব্যারেজ থেকে এ বছর প্রচুর জল ছাড়া হয়েছে। আমি নথি ঘেঁটে দেখেছি গালুডি জলাধার থেকে গত ১০ বছরে কখনও এত পরিমাণ জল ছাড়া হয়নি।”
তলমুকে জেলা প্রশাসনিক ভবনে চলছে বৈঠক। ছবি: পার্থপ্রতিম দাস।
এ দিন সকালে তমলুকে জেলাশাসকের অফিসে বৈঠকের পর দুপুর ১টা নাগাদ সেচমন্ত্রী পাঁশকুড়ার রানিহাটিতে গিয়ে কাঁসাই নদীর ভেঙে যাওয়া বাঁধ মেরামতির কাজ পরিদর্শন করেন। বাঁধ মেরামতির কাজ নিয়ে সেচ দফতরের আধিকারিকদের সঙ্গে কথাও বলেন।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের অগস্ট মাসে পাঁশকুড়ার রানিহাটিতে কাঁসাই নদীর বাঁধ ভেঙে জলমগ্ন হয়েছিল পাঁশকুড়া ও তমলুক ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকা। সেচ দফতর সেই বাঁধ মেরামতির কাজ করছিল। ইতিমধ্যে চলতি মাসে ফের কংসাবতী ব্যারেজ থেকে জল ছাড়া হলে গত ১৫ অক্টোবর একই জায়গায় বাঁধ ফের ভেঙে যায়। পাঁশকুড়া, তমলুক ও নন্দকুমার ব্লকের ২০০টির বেশি গ্রাম ভেসে যায়। রাজ্য সরকারের উদ্যোগে সেনা বাহিনীর সাহায্য নিয়ে ভেঙে যাওয়া বাঁধ বাঁধার প্রাথমিক কাজ করা হয়েছিল। এখন সেচ দফতর সেই বাঁধ স্থায়ী ভাবে মেরামত করছে।
বৃষ্টি ও জলাধার থেকে জল ছাড়ার ফলে চলতি বছরে মেদিনীপুর সদর ব্লকের গোবিন্দপুরে কংসাবতীর
বাঁধ ভেঙে সদর ব্লক ও কেশপুরের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়। বার বার বাঁধ ভাঙলেও
সারানোর উদ্যোগ নেই প্রশাসনের। ছবি: রামপ্রসাদ সাউ।
এ দিকে, এখনও বেশিরভাগ এলাকায় জল জমে থাকায় স্থানীয় বাসিন্দাদের দুর্ভোগ চলছে। শুক্রবার জেলা প্রশাসনিক অফিসের বৈঠকে সেচমন্ত্রী ছাড়াও বন্যা কবলিত এলাকার পঞ্চায়েত প্রধান, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি, বিধায়ক, বিডিও, মহকুমাশাসক-সহ জেলা প্রশাসন ও সেচ দফতরের পদস্থ আধিকারিকরা ছিলেন। ছিলেন তমলুকের সাংসদ শুভেন্দু অধিকারীও। বৈঠকে বন্যা কবলিত এলাকার বর্তমান পরিস্থিতি, সরকারি ত্রাণের ব্যবস্থা ও ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে পর্যালোচনা করা হয়। সিদ্ধান্ত হয় পাঁশকুড়া ও তমলুক ব্লকের জল নিকাশির জন্য প্রতাপখালি, গঙ্গাখালি ও পায়রাটুঙ্গি খাল সংস্কার করতে সেচ দফতর টাকা বরাদ্দ করবে। পাঁশকুড়ায় কাঁসাই নদী তীরবর্তী জমিদারি বাঁধ মেরামতির কাজ করা হবে।
সাংসদ শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “তমলুক ব্লকের ৭টি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় এখনও জল রয়েছে। এর মধ্যে ৪টি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা খুবই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এখনও বৃষ্টি চলছে। ফলে স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে ফিরতে সময় লাগছে। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার পরিকাঠামো পুনর্গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ফের ঘনাচ্ছে দুর্যোগের মেঘ। শুক্রবার দিনভর দফায়-দফায় বৃষ্টি হয় দুই মেদিনীপুরে। ফলে জলমগ্ন
এলাকাগুলিতে নতুন করে জল জমতে শুরু করে। জলাধার থেকে জল ছাড়ার পরিমাণও বাড়ছে।
শুক্রবার সকালে কংসাবতী জলাধার থেকে ৭ হাজার ৫০০ কিউসেক জল ছাড়া হয়।
ঝাড়গ্রামের ছবিটি তুলেছেন দেবরাজ ঘোষ।
বৈঠকে জেলা প্রশাসনের তরফে ক্ষয়ক্ষতির যে হিসেব দেওয়া হয়েছে, তাতে পাঁশকুড়া, তমলুক ও নন্দকুমার ব্লকের ২৭০টি মৌজার ১ লক্ষ ৮৯ হাজার মানুষ বন্যা কবলিত বলে জানানো হয়েছে। ১০ হাজার ৪২৫টি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ১৩ হাজার ৬৬৮ হেক্টর জমির ধান চাষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ৪ হাজার ৮৮৮ হেক্টর জমির পান, ফুল ও সব্জি চাষের ক্ষতি হয়েছে। সব মিলিয়ে ক্ষতির পরিমাণ ১৮ কোটি ৩১ লক্ষ টাকা।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.