কটকে বৃষ্টি চলছেই
অলৌকিক কাণ্ড ছাড়া আজ ম্যাচ হওয়া অসম্ভব
টোচালক থেকে হোটেলের কর্মী, সাধারণ ক্রিকেটপ্রেমী থেকে ওড়িশা ক্রিকেট সংস্থার কর্তা কটকবাসীর সমবেত মুখের ভাবটা কলকাতার ভীষণ চেনা। দিনকয়েক আগে যখন অকালবৃষ্টিতে দেবীর অকালবোধনের প্রায় বারোটা বাজতে বসেছিল, তখন কলকাতার রাস্তায় বেরনো মানেই তো এ রকম অসংখ্য মুখের সঙ্গে দেখা হয়ে যাওয়াটা রুটিন হয়ে দাঁড়িয়েছিল!
বরাবাটি স্টেডিয়াম যে ক্রিকেট-বোধনের জন্য সাজছিল, অক্টোবরের অকালবৃষ্টিতে সেটা পণ্ড হয়ে গিয়েছে। সরকারি ঘোষণা হয়নি তো কী, মাঠের যা অবস্থা তাতে আগামী চব্বিশ ঘণ্টায় আর যা-ই হোক, এখানে ক্রিকেট খেলা সম্ভব নয়। বাউন্ডারির ধারে চাপ-চাপ কাদা। গত পাঁচ দিন ধরে পিচ লুকিয়ে কভারের নীচে। সপসপে আউটফিল্ড দেখে মনে পড়ে যাবে জল জমতে শুরু করা আমহার্স্ট স্ট্রিটের কথা।
শহরের নিম্নচাপ যেন সংক্রমিত হয়েছে ওসিএ কর্তাদের মধ্যেও। শত চেষ্টার পরেও তাঁদের বিবৃতি দিয়ে বলতে হয়েছে, মাঠ জলে থইথই। বাইশ গজের বিশেষ ক্ষতি না হলেও আউটফিল্ডের যা অবস্থা, তাতে ম্যাচ হলে যে কোনও সময় ক্রিকেটাররা আহত হতে পারেন। ম্যাচ আয়োজন ছেড়ে এখন তাঁদের নামতে হচ্ছে ড্যামেজ কন্ট্রোলে। ঠিক করতে হচ্ছে টিকিটের টাকা ফেরত দেওয়ার দিনক্ষণ।
এলোমেলো বরাবাটি। স্টেডিয়াম যেন বানভাসি।
প্রায় দু’বছর পরে ওয়ান ডে-র বরাত পাওয়া বরাবাটি স্টেডিয়ামে কিন্তু চেষ্টার ত্রুটি ছিল না। জল নিকাশের জন্য স্টেডিয়ামের জায়গায় জায়গায় কুয়ো খোড়া হয়েছে। এমনকী মাঠ শুকনোর জন্য হেলিকপ্টার নামানোর কথাও ভেবে রেখেছিলেন কর্তারা। শুক্রবারের টানা ঘ্যানঘ্যানে বৃষ্টি সেই চেষ্টাতেও জল ঢেলে দিলে আর কী করার থাকতে পারে? ওসিএ সচিব আশীর্বাদ বেহরা এ দিন যেমন বলছিলেন, “হেলিকপ্টার অপারেটররা মাঠ দেখতেও এসেছিলেন। কিন্তু ওঁরা বললেন হেলিকপ্টার দিয়ে মাঠে জমা জল শুকিয়ে দেওয়া গেলেও গোটা মাঠে জমে থাকা কাদা সরানো যাবে না।” মাঠের অবস্থা এতটাই শোচনীয় যে পাঁচ দিন পরে শুরু উত্তরপ্রদেশ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ তিন দিনের প্রস্তুতি ম্যাচ সরিয়ে নেওয়া হয়েছে মুম্বইয়ে।
মাঠের এই অবস্থার কথা শুনে অস্ট্রেলীয় প্লেয়াররা শুক্রবার আর স্টেডিয়াম-মুখো হননি। সাপোর্ট স্টাফ এসে ঘুরে গিয়েছেন, এই যা। তাঁদের কাছে ব্যাপারটা যেন অনেকটা হঠাৎ পাওয়া ছুটির মতো। টিম হোটেলে শেন ওয়াটসন এ দিন বলে দিয়েছেন, “এখানে আসার আগেই শুনেছিলাম কটকে প্রচণ্ড বৃষ্টি হচ্ছে। কাল রাত থেকে তো টানা বৃষ্টি হয়ে যাচ্ছে। এয়ারপোর্ট থেকে হোটেলে আসার সময় শহরের যা অবস্থা দেখলাম, তার পর মাঠের যা হাল, তাতে শনিবার ম্যাচ হলে খুবই অবাক হব।” সিরিজে ২-১ এগিয়ে থাকার তৃপ্তি তাঁর পরের কথায় স্পষ্ট। “পাঁচ ম্যাচের সিরিজ এমনিতেই বেশি উপভোগ করা যায়। আর বৃষ্টিতে ম্যাচ ভেস্তে গেলে আমার মতো যারা টানা ক্রিকেট খেলে যাচ্ছে, তারা একটু বিশ্রাম পেয়ে যাবে। মন্দ কী?”

জল দেখতে বেরোলেন অস্ট্রেলীয় কোচ রিক্সন।

ছুটির মেজাজ ধোনির।
টিম ইন্ডিয়া-র ছবিটা একদম অন্য রকম। ঘরের মাঠে সিরিজে পিছিয়ে থাকার অস্বস্তি তো আছেই। রাঁচি থেকে আবার তার সঙ্গে জুড়ে গিয়েছে বিরক্তির নতুন কারণ। প্রত্যাবর্তনের যে লড়াইয়ের খিদে রায়না-যুবরাজ-কোহলিদের শরীরী ভাষায় স্পষ্ট, সেই লড়াইয়ে নামার সুযোগটাই যে তাঁরা পাচ্ছেন না। শুক্রবার স্টেডিয়ামে ঢুকে মাঠের দিকে কয়েক মুহূর্ত তাকিয়েই হতাশ ভাবে মাথা নাড়ছিলেন সুরেশ রায়না। পাশে গোমড়া মুখে ঠায় দাঁড়িয়ে যুবরাজ সিংহ। তার আগে ম্যাচ রেফারি রোশন মহানামা মাঠ ঘুরে দেখে বলে গিয়েছেন, শনিবার এখানে ম্যাচ হওয়া অসম্ভব। বরাবাটির ইন্ডোরে ফুটবল খেলা হল, এমনকী ব্যাডমিন্টনও খেললেন ধোনিরা। কিন্তু সেটা তো আর সিরিজ জয়ের প্রস্তুতি নয়!
এ দিন দুপুরে রবীন্দ্র জাডেজা তবু বলছিলেন, “আবহাওয়া তো কারও নিয়ন্ত্রণে নেই। তবে এর পর আর বৃষ্টি না হলে ম্যাচটা হতেও পারে। আমরা মানসিক ভাবে নিজেদের তৈরি করছি, যাতে যত কম ওভারের ম্যাচই হোক না কেন, ঝাঁপিয়ে পড়তে পারি।” তা শুক্রবার বিকেল থেকে যা বৃষ্টি শুরু হল, তাতে ‘ঝাঁপিয়ে পড়া’টা বোধহয় নাগপুরের জন্যই তুলে রাখতে হবে জাডেজাদের।




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.