আসবে নতুন প্রতিমা, স্থানাভাব দুর্গা গ্যালারিতে
থিমপুজোর এই যুগে মহানগরের এক-একটা মণ্ডপ বা প্রতিমার শিল্পমূল্য অনেক। বিশেষত বিভিন্ন শিল্পীর দীর্ঘ দিনের পরিশ্রমের ফসল এই প্রতিমাগুলো সত্যিই অনন্যসাধারণ। তাই এই শিল্পসুষমা যাতে পুজোর পরেও দেখতে পান আগ্রহীরা, সেই লক্ষ্যে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দুর্গা-গ্যালারি ‘মা ফিরে এল’ নির্মাণের নির্দেশ দিয়েছিলেন।
গত বছর ১২ ডিসেম্বর গ্যালারিটির উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী স্বয়ং। প্রথম পর্যায়ে দেশের প্রথম এই প্রতিমা গ্যালারিতে রাখা হয় ৯টি ক্লাবের প্রতিমা। এ বছর সেখানে যুক্ত হচ্ছে আরও কয়েকটি প্রতিমা। কিন্তু ইতিমধ্যেই স্থানাভাব দেখা দিয়েছে সেখানে। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে চলতি সপ্তাহেই গ্যালারি দেখতে যাবেন পুর ও নগরোন্নয়নমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছেন কেএমডিএ এবং কেআইটি-র ইঞ্জিনিয়ারেরা। শনিবার তাঁরা সেখানে গিয়ে প্রাথমিক সমীক্ষা করে এসেছেন।

রবীন্দ্র সরোবরের দুর্গা গ্যালারি। ছবি: রাজীব বসু।
রবীন্দ্র সরোবর স্টেডিয়ামের কাছে রেললাইনের ধারে পরিত্যক্ত একটি গুদাম পরিষ্কার করে তৈরি হয়েছিল ওই গ্যালারি। আয়তন প্রায় সাড়ে সাত হাজার বর্গফুট। প্রতিটি প্রতিমার জন্য সেখানে বরাদ্দ ১৫ ফুট লম্বা ও ১০ ফুট চওড়া জায়গা। গত বছর বোসপুকুর শীতলামন্দির, চেতলা অগ্রণী, লেকটাউন নেতাজি স্পোর্টিং ও তেলেঙ্গাবাগান এই চারটি ক্লাবের দুর্গা, লক্ষ্মী, সরস্বতী, কার্তিক ও গণেশ প্রতিমা রাখা হয়েছে ওই গ্যালারিতে। আর নাকতলা উদয়ন সঙ্ঘ, যোধপুর পার্ক ৯৫ পল্লি, বড়িশা ক্লাব, শ্যামবাজার নলিন সরকার স্ট্রিট, শিকদারবাগান দুর্গোৎসব কমিটি-র শুধু দুর্গাপ্রতিমা রয়েছে সেখানে।
কেএমডিএ সূত্রের খবর, গত বছর ওই সংগ্রহশালার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন বোসপুকুর শীতলামন্দির দুর্গোৎসব কমিটি-র সম্পাদক কাজল সরকার। তিনি পুরমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করেই এ বার ৩টি প্রতিমা রাখার সুপারিশ করেছেন ওই গ্যালারিতে। কাজলবাবু বলেন, “মন্ত্রীর নির্দেশে ঠিক হয়েছে, ত্রিধারা, বোসপুকুর তালবাগান এবং বড়িশা ক্লাব এই ৩টি ক্লাবের এ বারের প্রতিমা রাখা হবে গ্যালারিতে।” সেই সঙ্গে মঙ্গলবার এক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পুরমন্ত্রীকে নির্দেশ দিয়েছেন, নাকতলা উদয়ন সঙ্ঘের এ বারের প্রতিমাকেও যথাযথ সংরক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে।
এ ব্যাপারে কেএমডিএ-র দায়িত্বপ্রাপ্ত ইঞ্জিনিয়ার ভাস্কর সেনগুপ্ত বলেন, “দু’টি প্রতিমাকে কোনও মতে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে গ্যালারিতে। বাকিগুলিও চলে আসবে শীঘ্রই। কিন্তু সাময়িক ভাবে দর্শকদের জন্য বন্ধ রাখা হয়েছে গ্যালারি। কারণ, নতুন প্রতিমাগুলো রাখতে হলে আগের কিছু প্রতিমা বিসর্জন দিতে হবে।” প্রকল্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেআইটি-র ইঞ্জিনিয়ার সুধীন নন্দী বলেন, “প্রতি বছরই কিছু প্রতিমা সংযোজন হবে। তাই কিছু প্রতিমা বিসর্জন না দিলে স্বাভাবিক ভাবেই স্থানাভাব হবে। এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত পুরমন্ত্রীর।” এ প্রসঙ্গে ফিরহাদ হাকিম বলেন, “ক’দিনের মধ্যে আমি ওখানে গিয়ে অবস্থা দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থার সুপারিশ করব। গ্যালারির স্থানাভাব প্রতিমা সংরক্ষণের অন্তরায় হবে না।”
এ দিকে, সন্তোষ মিত্র স্কোয়ারের ‘ট্রেভি ফাউন্টেন’-এর শিল্পকর্মটি ইতালিতে নিয়ে যাওয়ার কথা চলছে। প্রাচীন রোমে প্রযুক্তিবিদ পিয়েট্রো ব্রাসি পরিকল্পিত স্থপতি নিকোলা সালভির তৈরি ছিল আসল ‘ট্রেভি ফাউন্টেন’। একাধিক জনপ্রিয় চলচ্চিত্রে দেখানো হয়েছে সেটি। কলকাতার পুজোর শিল্পসমন্বিত নানা প্রতিমা ও কারুকাজ সংরক্ষণে আগ্রহ দেখিয়েছে ললিতকলা অ্যাকাডেমিও। এ বারের পুজোয় সেলিমপুর ক্লাবের কাঁথা স্টিচ, ঠাকুরপুকুর এসবি পার্কের কাঠ ও খোদাইশিল্প, রাজডাঙা নবোদয় সঙ্ঘের টেরাকোটা, হাতিবাগান নবীনপল্লির পাকিস্তানি ট্রাক-আর্ট সংরক্ষণের ব্যাপারে প্রাথমিক ভাবে আগ্রহ দেখিয়েছে অ্যাকাডেমি। কোথায়, কী উপায়ে এই সংরক্ষণ হতে পারে, তা খতিয়ে দেখছেন সংস্থার কর্তারা।
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.