ছেলের পরে বাবা, দেড় মাসের মধ্যে হাবরায় খুন
ত মাসের গোড়ায় হাবরার শ্রীনগরের যুবক গোপাল বিশ্বাসকে পিটিয়ে, মাথা থেঁতলে খুন করেছিল দুষ্কৃতীরা। শুক্রবার সকালে বাজার যাওয়ার পথে একই পরিণতি হল তাঁর বাবা সঞ্জয় বিশ্বাসেরও (৫০)।
এলাকায় ‘গাঁজা সঞ্জয়’ নামেই বেশি পরিচিত নিহত প্রৌঢ়ের পরিবারের লোকজনের অভিযোগ, ছেলেকে খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত সকলকে গ্রেফতারের দাবি নিয়ে থানায় যাতায়াত করছিলেন সঞ্জয়বাবু। সেই আক্রোশেই দুষ্কৃতীরা তাঁকে খুন করল। গোপাল খুনের ঘটনায় যার বিরুদ্ধে মূল অভিযোগ দায়ের হয়েছিল, ওই এলাকারই বাসিন্দা সেই মনোতোষ ঘোষকে পুলিশ এখনও ধরতে পারেনি। সঞ্জয়বাবু খুনে মনোতোষ-সহ সাত জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়েছে থানায়।
সঞ্জয় বিশ্বাস
পুলিশের দাবি, নিহত প্রৌঢ়ের বিরুদ্ধে অতীতে গাঁজা বিক্রি-সহ নানা অপরাধমূলক কাজকর্মে জড়িত থাকার অভিযোগ ছিল। সেই সব মামলা মিটে গেলেও পুরনো কোনও আক্রোশে তাঁকে খুন করা হল কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। উত্তর ২৪ পরগনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় বলেন, “খুনের কারণ পরিষ্কার নয়। ঘটনাস্থল থেকে একটি গুলি উদ্ধার হয়েছে। মিলেছে একটি রক্তমাখা পাথরের চাঁই। দুষ্কৃতীদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।”
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ৪ সেপ্টেম্বর গভীর রাতে সঞ্জয়বাবুর ছেলে গোপালকে স্থানীয় গীতা শ্মশানে চেলাকাঠ দিয়ে পিটিয়ে, ইট দিয়ে মাথা থেঁতলে খুন করা হয়। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশের অনুমান ছিল, মদ খেয়ে গোলমালের জেরে খুন হন গোপাল। সেই খুনের ঘটনায় অভিযুক্তদের মধ্যে চার জনকে ইতিমধ্যে গ্রেফতারও করেছে পুলিশ। কিন্তু মনোতোষ-সহ বাকি অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবি জানাতে প্রায়ই থানায় যেতেন সঞ্জয়বাবু। শুক্রবার সকাল ৯টা নাগাদ বাড়ি থেকে বেরোন তিনি। রেললাইনের ধারে শ্রীনগর-গোয়ালবাটি রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময়ে কয়েকজন তাঁকে ঘিরে ধরে। তিনি পালানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। শুরু হয় পিটুনি। শেষে মৃত্যু নিশ্চিত করতে বড় পাথর দিয়ে তাঁর মাথা থেঁতলে দেওয়া হয়। পরে সঞ্জয়বাবুকে হাবরা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিত্‌সকেরা মৃত ঘোষণা করেন।
নিহতের মেয়ে টুম্পা বণিক বলেন, “ভাইয়ের খুনিরা সকলে গ্রেফতার হয়নি। বাবা পুলিশের কাছে নিয়মিত তাদের গ্রেফতারের দাবি জানাতে যেত। বৃহস্পতিবারও থানায় গিয়েছিল। সেই কারণে ভাইয়ের খুনিরাই বাবাকে খুন করল।” গোপাল-খুনে অভিযুক্তদের সকলকে এখনও ধরতে না পারার জন্য পুলিশের বিরুদ্ধে উদাসীনতার অভিযোগ তুলেছেন সঞ্জয়বাবুর স্ত্রী সবিতাদেবী। তিনি বলেন, “স্বামীর বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে যে সব অভিযোগ ছিল, সে সব চুকেবুকে গিয়েছে। পুলিশ ছেলের খুনিদের ধরলে এমন দিন আমাকে দেখতে হত না!” পুলিশ অভিযোগ উড়িয়ে দাবি করেছে, গোপাল-খুনে বাকি অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি এখনও জারি রয়েছে।
গোপাল ডিওয়াইএফআই কর্মী ছিলেন। তাঁকে খুনের পিছনে তৃণমূল-আশ্রিত দুষ্কৃতীরা জড়িত বলে অভিযোগ তুলেছিল সিপিএম। তৃণমূল তা মানেনি। তবে, সঞ্জয়-খুনে সরাসরি রাজনীতির রং লাগেনি। হাবরার প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক প্রণব ভট্টাচার্য বলেন, “প্রকাশ্যে খুন হচ্ছে এলাকায়। আইনশৃঙ্খলার অবনতি হলেও পুলিশ দুষ্কৃতীদের ধরতে পারছে না। গোপাল খুনের সঙ্গে তাঁর বাবার খুনের যোগ থাকতে পারে।” স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক তথা রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের দাবি, “দুষ্কৃতীদের নিজেদের মধ্যে বিবাদের জেরেই সঞ্জয় খুন হয়েছেন। এর সঙ্গে রাজনীতির যোগ নেই। পুলিশকে বলা হয়েছে দুষ্কৃতীদের দ্রুত গ্রেফতার করতে।”

পুরনো খবর:





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.