|
|
|
|
পাঁচ বছরেও তৈরি হয়নি খড়্গপুর আদালত
দেবমাল্য বাগচি • খড়্গপুর |
পাঁচ বছরে চার বার ‘ওয়ার্ক ওর্ডারে’র মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়েছে। তাতেও কাজ না হওয়ায় চলতি বছরে শেষ পর্যন্ত নতুন করে দরপত্র ডেকে বরাত দেওয়া হয়েছে। তা সত্ত্বেও খড়্গপুর মহকুমা আদালতের নির্মাণকাজ এগোয়নি। তিন বছর ধরে তিনতলা ভবন তৈরির কাজ শেষ হয়নি। নতুন বরাত দেওয়ার পরেও ঢিমেতালেই কাজ হচ্ছে। এই পরিস্থিতির জন্য পূর্ত দফতর দায় চাপিয়েছে পুরোনো ঠিকাদারের উপরেই।
স্বতন্ত্র মহকুমা হওয়ার পরেও খড়্গপুরের ফৌজদারি বা দেওয়ানি কার্যবিধির জন্য এখনও মেদিনীপুর জেলা আদালতই ভরসা। স্বভাবতই মহকুমায় পৃথক আদালত গঠনের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। সেই মতোই ২০০৭ সালে ঠিক হয় খড়্গপুরে মহকুমা আদালত তৈরির সিদ্ধান্ত হয়। ঠিক হয়, একটি আদালত কার্যালয় এবং বিচারক ও কর্মীদের বসবাসের জন্য আবাসন নির্মাণ করা হবে। ২০০৮ সালের গোরায় টেন্ডার ডাকা হয়। ওই বছর এপ্রিলে মেদিনীপুরের একটি ঠিকাদারি সংস্থাকে কাজের বরাত দেওয়া হয়। নতুন আদালতের জন্য খড়্গপুর শহরের কৌশল্যা সংলগ্ন বুলবুলচটি যাওয়ার রাস্তার প্রায় ৫০০ মিটার দূরে বসতি এলাকাতেই প্রায় ২ একর জমি নেওয়া হয়। বরাদ্দ হয় ৫ কোটি ৬৭ লক্ষ টাকা। ২০০৯ সালের ফেব্রুয়ারির মধ্যে কাজ শেষের সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়। |
|
অসমাপ্ত আদালত ভবন। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল। |
সেই থেকেই কাজ চলছে। গত পাঁচ বছরে আবাসন নির্মাণের কাজ শেষ হলেও তিনতলা আদালত ভবনে জানালা-দরজার কাঠের কাজ, বিদ্যুতের কাজ, সীমানা পাঁচিল তৈরি, রং করা কিছুই এখনও হয়নি। শুধু ভবনের বাইরে নিরাপত্তাকর্মীদের ঘরগুলিতে রং করা হয়েছে। কাঠের মিস্ত্রি রঞ্জন সাউ বলেন, “আমরা তো কাজ করছি। কাঠের কাজ কয়েক মাসের মধ্যে শেষ করে ফেলব। তবে পুরো কাজ শেষ হতে এক বছর তো লাগবেই।”
পূর্ত দফতর সূত্রে খবর, প্রথম ‘ওয়ার্ক ওর্ডার’-এর পরে বছর ঘুরলেও কাজের সিকিভাগও না হওয়ায় ২০০৯ সালে ‘ওয়ার্ক ওর্ডারে’র মেয়াদ বাড়ানো হয়। আবাসন গড়ার কাজ এগোয়। ২০১২ সাল পর্যন্ত প্রতি বছর কাজ শেষের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। চতুর্থবারের জন্য মেয়াদ উত্তীর্ণ হলেও আদালত ভবন এখনও অসম্পূর্ণ। চলতি বছর মার্চে ঠিকাদারকে সরিয়ে দেওয়া হয়। ফের দরপত্র ডাকা হয়। নতুন করে এক বছর মেয়াদও বাড়ানো হয়। এ বার বরাত পেয়েছেন খড়্গপুরের ঠিকাদার। তবে তারপরেও কাজ এগোচ্ছে না বলে অভিযোগ।
মেদিনীপুরে জেলা আদালত ছাড়াও ঘাটাল ও ঝাড়গ্রাম মহকুমায় আদালত রয়েছে। দাঁতন ও গড়বেতা চৌকিতেও একটি করে আদালত আছে। খড়্গপুরে আদালত না থাকায় বিচারবিভাগীয় যাবতীয় কাজই মেদিনীপুরে হয়। নতুন আদালত তৈরি হলে সেখানে অ্যাডিশনাল চিফ জ্যুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, জ্যুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, অ্যাডিশনাল ডিস্ট্রিক্ট অ্যান্ড সেশন জজের এজলাসে মহকুমার নানা বিচারবিভাগীয় মামলার নিষ্পত্তি হবে। এতে সাধারণ মানুষেরও ভোগান্তি কমবে। কিন্তু পাঁচ বছরও পরেও নির্মাণকাজ শেষ না হওয়ায় রেলশহরের মানুষজনের মনে সংশয় দেখা দিয়েছে। খড়্গপুরের মহকুমাশাসক আর বিমলা বলেন, “এত দিনে কাজ শেষ হয়ে যাওয়া উচিত ছিল। বিষয়টি পূর্ত দফতর দেখছে।” পূর্ত দফতরের খড়্গপুর শাখার এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার তপন সাহার বক্তব্য, “আগের ঠিকাদার কাজ করতে পারেননি। তাই তাঁকে বাদ দিয়ে নতুন ঠিকাদারকে বরাত দেওয়া হয়েছে। পুজোর পর থেকেই পুরোদমে কাজ চলবে। আশা করছি আগামী মার্চে ওয়ার্ক ওর্ডারের মেয়াদ শেষের আগেই কাজ শেষ হবে।”
|
পুরনো খবর: খড়্গপুরে মহকুমা আদালত-ভবনের কাজ শেষ হয়নি |
|
|
|
|
|