এলাকা পুনর্বিন্যাস নিয়ে আলোচনা হল মেদিনীপুর-খড়্গপুর উন্নয়ন পর্ষদের (এমকেডিএ) বৈঠকে। বৃহস্পতিবার দুপুরে এই বৈঠকে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। বৈঠক শেষে পর্ষদের চেয়ারম্যান তথা মেদিনীপুরের বিধায়ক মৃগেন মাইতি বলেন, “পর্ষদের কাজের পরিধি বাড়ানো দরকার। সে ক্ষেত্রে এলাকা পুনর্বিন্যাস প্রয়োজন। এ নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। বিষয়টি আমরা গুরুত্ব দিয়ে দেখছি। ইতিমধ্যে কিছু আবেদন এসেছে। সেই সব আবেদনও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
২০০৪ সালে এমকেডিএ তৈরির পর থেকে পর্ষদের এলাকার পুনর্বিন্যাস হয়নি। কংসাবতীর দুই তীরের দুই শহর মেদিনীপুর-খড়গপুর ও আশপাশের ১৪টি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা নিয়ে পর্ষদ গড়ে তোলা হয়। লক্ষ্য ছিল, সার্বিক উন্নয়ন। আগে পর্ষদ চেয়ারম্যান ছিলেন সিপিএম সাংসদ পুলিনবিহারী বাস্কে। রাজ্যে পালাবদলে পর চেয়ারম্যান হন মৃগেন মাইতি। এমকেডিএ’র নতুন বোর্ড গঠন হয়। এখন মেদিনীপুর সদর, শালবনি, খড়গপুর- ১ ও ২, এই চারটি ব্লকের ১৪ টি গ্রাম পঞ্চায়েত রয়েছে উন্নয়ন পর্ষদের ‘প্ল্যানিং এরিয়া’র আওতায়। বছর কয়েক আগে থেকেই এলাকা পুনর্বিন্যাসের দাবি উঠছে। তবে আগে এই দাবিকে সে ভাবে আমল দেওয়া হয়নি। পরিস্থিতি দেখে এ বার এই দাবিকেই মান্যতা দিতে চলেছেন কর্তৃপক্ষ। পর্ষদের বৈঠকে আলোচনার মধ্য দিয়ে যা শুরু হল। পর্ষদ সূত্রে খবর, ওই চারটি ব্লকের আরও কয়েকটি গ্রাম পঞ্চায়েত ‘প্ল্যানিং এরিয়া’র আওতায় আসতে পারে। ঠিক কোন কোন এলাকা আসবে, তা আলোচনার প্রেক্ষিতে ঠিক হবে। এমনিতেই পাল্লা দিয়ে জনসংখ্যা বাড়ছে। নতুন নতুন বসতি গড়ে উঠছে। ফলে, সমস্যাও বাড়ছে। এমকেডিএ’র মধ্যে যে সব এলাকা রয়েছে, ২০০১ সালে সে সব এলাকার জনসংখ্যা ছিল ৭ লক্ষ ২০ হাজার, ২০১১ সালে তা বেড়ে হয়েছে ৮ লক্ষ ৭০ হাজার। বৃদ্ধির হার একই রকম থাকলে ২০২১ সালে জনসংখ্যা পৌঁছবে ৯ লক্ষ ২০ হাজার- এ। পর্ষদ কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, এ জন্যই এলাকা পুনর্বিন্যাসের আগে সবদিক খতিয়ে দেখা জরুরি।
অন্যদিকে, পর্ষদের উদ্যোগে যে সব কাজ চলছে, সেই সব কাজে নজরদারি আরও বাড়ানো নিয়ে আলোচনা হয় বৈঠকে। নতুন করে কিছু রাস্তা তৈরির সিদ্ধান্ত হয়েছে। এই সব রাস্তা তৈরিতে ব্যয় হবে প্রায় ১ কোটি ৮ লক্ষ টাকা। এমকেডিএ’র চেয়ারম্যান বলেন, “যত দ্রুত সম্ভব নতুন রাস্তার কাজ শুরু করার চেষ্টা চলছে।” মেদিনীপুর শহরের পদ্মাবতী শ্মশানে পর্ষদের উদ্যোগে বৈদ্যুতিক চুল্লি তৈরি হয়েছে। গত মার্চে এই চুল্লি চালু হয়। বৈদ্যুতিক চুল্লি নিয়েও এখন হিমশিম অবস্থা পর্ষদের। কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, এ ক্ষেত্রে আয় যা, ব্যয় তার দ্বিগুন। একটা মোটা অঙ্কের টাকা চলে যাচ্ছে বিদ্যুতের বিল মেটাতে। বৈঠকে অবশ্য চুল্লি চালু রাখারই সিদ্ধান্ত হয়েছে। মৃগেনবাবু বলেন, “সারাদিন চুল্লি চালিয়ে রাখতে হয়। ফলে, বিদ্যুতের বিল বেশি আসে। তাই কিছু সমস্যা দেখা দিচ্ছে। তবে, চুল্লি বন্ধ হবে না। ভর্তুকি যাক। চুল্লি চালু থাকবে।” পর্ষদের এক কর্তার কথায়, “এমন ক্ষেত্রে ভর্তুকি দিতেই হয়। তবে তার পরিমাণ কিছুটা কম হলে ভাল। না হলে সংস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হবে।”
|